লাইফস্টাইল ডেস্ক : বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সবার হাড় ও পেশি দুর্বল হতে শুরু করে। মায়ের শরীরে সুস্থতা নিশ্চিত করতে প্রত্যেক সন্তানের উচিত নির্দিষ্ট বয়স পর তার মেডিকেল চেকআপ করানো। মায়েরা কখনো মুখ ফুটে শারীরিক সমস্যার কথা জানান না। সন্তান হিসেবে আপনার উচিত তার স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়া।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ৪০ এর পর থেকেই শরীর বিভিন্ন রোগ বাসা বাঁধতে শুরু করে। এই বয়সের পর ডায়াবেটিস, রক্তচাপ বৃদ্ধি, থাইরয়েড, কোলেস্টেরল বৃদ্ধি, জরায়ুর নানা রোগ বাড়তে শুরু করে।
তবে নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ করালে সব ধরনের রোগ নির্ণয় করা যায় দ্রুত। কিছু গুরুত্বপূর্ণ মেডিকেল চেকআপ আছে, যেগুলো মায়ের সুস্থতায় করাতে পারেন। জেনে নিন কী কী-
বডি মাস ইনডেক্স বা স্থূলতা স্ক্রীনিং: আপনার মায়ের বিএমআই ঠিক আছে কি না তা পরীক্ষা করানো জরুরি। কারণ স্থূলতা ও অতিরিক্ত ওজন কিন্তু কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
এই পরীক্ষার মাধ্যমে ওজন ও উচ্চতা অনুযায়ী পরিমাপ করা হয়। যদি তার বিএমআই ২৫-৩০ শতাংশ বেশি হয়, তাহলে তা অতিরিক্ত ওজন হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
আর বিএমআই যত বেশি হবে, ততই হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, কিছু ক্যানসারসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাবে। শরীরের ওজনের প্রায় ৫-১০ শতাংশ কমানোর মাধ্যমে স্থূলতার সঙ্গে যুক্ত অসুস্থতার ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
রক্তচাপ পরীক্ষা: একজন সুস্থ ব্যক্তির স্বাভাবিক রক্তচাপের পরিসীমা ১৩০/৮০ এর নিচে। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। জীবনযাত্রার অনিয়মসহ নানা সমস্যার কারণে রক্তচাপ বাড়তে পারে।
আপনার মায়ের শরীরে রক্তচাপের পরিমাণ সঠিক আছে কি না তা পরীক্ষা করুন নিয়মিত। যদি তিনি উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিতে থাকেন, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে ঝুঁকি কমাতে ডায়েট ও ব্যায়ামের পরিকল্পনার করতে পারেন।
কোলেস্টেরল পরীক্ষা: কোলেস্টেরল স্ক্রিনিংকে লিপিড প্যানেলও বলা হয়। এটি একটি রক্ত পরীক্ষা, যা রক্তে কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ পরিমাপ করে। কোলেস্টেরল পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা যাবে আপনার মা কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকিতে আছেন কি না।
শরীরের মূলত ভালো ও খারাপ দু’ধরনের কোলেস্টেরল থাকে। তবে শরীরে যদি খারাপ কোলেস্টেরল বেড়ে যায়, তাহলে ধমনীতে প্ল্যাক তৈরি হতে পারে। ফলে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। তাই বয়স ৪০ পার হলেই সব নারীরই উচিত কোলেস্টেরল পরীক্ষা করানো।
ডায়াবেটিস পরীক্ষা: ডায়াবেটিস এখন প্রায় ঘরে ঘরেই। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পরিমাপ করার মাধ্যমে আপনার মা ডায়াবেটিসে ভুগছেন কি না তা জানা যাবে।
ডায়াবেটিস নির্ণয় নিশ্চিত করতে খালি পেটে ও ভরা পেটে দুই ঘণ্টা পর পরীক্ষা করা হয়। যদি আপনার মায়ের ডায়াবেটিস ধরা পড়ে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খাওয়ান ও জীবনধারণে পরিবর্তন আনতে সহযোগিতা করুন তাকে।
ম্যামোগ্রাম: স্তন ক্যানসারের জন্য ম্যামোগ্রাম স্ক্রিনিং করা হয়। নারীদের ৪০ বছর বয়সে ম্যামোগ্রাম পরীক্ষা শুরু করা উচিত (এটি স্তনের এক্স-রে)।
এরপর থেকে প্রতিবছর অন্তত একবার করে এই পরীক্ষা করাতে হবে। এর মাধ্যমে প্রাথমিকভাবেই স্তন ক্যানসার শনাক্ত করা যায় ও সঠিক চিকিৎসায় রোগী সুস্থ হয়ে যেতে পারেন।
চোখের পরীক্ষা: আপনার মায়ের চোখ ভালো আছে কি না তা যাচাই করতে চোখ ও দাঁতের পরীক্ষা করাতে হবে নিয়মিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, ৪০ বছর বয়সের পর থেকে অন্তত প্রতি দুই বছর পরপর চোখের পরীক্ষা করা উচিত।
দাঁতের পরীক্ষা: অন্যদিকে প্রতি ছয় মাসে অন্তত একবার দাঁতের পরিচ্ছন্নতা ও পরীক্ষা করানো উচিত। এছাড়া ব্রাশ ও ফ্লসিংয়ের বিষয়েও সচেতন হতে হবে। সূত্র: নোভানথহেলথ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।