জুমবাংলা ডেস্ক : আপনজনের মৃত্যু হয়েছে, কিন্তু কবরস্থানের জায়গা নেই। কবর দেওয়া নিয়ে চিন্তায় ছিল মসজিদ কমিটি। কবরস্থানে জমির সমস্যা নিয়ে হয়রান ছিল মুসলমান সম্প্রদায়। ঠিক এমন সময় ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় মুশকিল আহসান করতে ধর্মীয় সস্প্রীতির অনন্য নজির স্থাপন করে এগিয়ে এলো গ্রামেরই এক হিন্দু পরিবার। উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নে কবরস্তানের জন্য ২০ শতক জমি দান করেছে এলাকার হিন্দু পরিবার। জমি পেয়ে খুশি এলাকার মুসলমান সম্প্রদায় ও মসজিদ কমিটি।
গতকাল শনিবার উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের পূর্ব পাইক পাড়া জামে মসজিদের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে গোপাল ডাক্তার পরিবার ২০ শত জমি দান করার ঘোষণা দেন।
স্থানীয় চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন বাবুলের উপস্থিতিতে দান করা জমির সীমানা নির্ধারণ করে মুসলমান সস্প্রদায়ের কাছে বুঝিয়ে দেন। এ সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারের লোকজনকে ফুল দিয়ে বরণ করেন মুসলিম পরিবারের লোকজন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য মো. আলী আলমগীর, উপজেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জগবন্ধু দেবনাথ, বগাদানা ইউনিয়ন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি হারাধন নাথ, সাবেক ইউপি সদস্য শাহ আলম, স্থানীয় পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মাহমুদুল হক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগাদানা ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের গোপাল ডাক্তার বাড়ির হিন্দু সম্প্রদায় পরিবারের সঙ্গে একই গ্রামের কয়েকটি মুসলিম পরিবারের সঙ্গে প্রায় দেড় শ বছরের সুসম্পর্ক রয়েছে। এই সূত্রে হিন্দু ও মুসলিম পরিবার বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান ও বিপদে-আপদে একে অপরের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। মুসলিম পরিবারের কবরস্থানের জায়গা না থাকায় কোনো মুসলিম লোক মারা গেলে কবরস্থ করতে সমস্যায় পড়তে হয়। পরে হিন্দু পরিবারের নিকট জায়গা চাইলে রাজি হয়ে যায় গোপাল ডাক্তার বাড়ির হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারের লোকজন।
দান করা জমির মালিক প্রবীণ শিক্ষক প্রফুল্ল নাথ বলেন, শতশত বছর ধরে মুসলিম পরিবারের কোনো লোক মারা গেলে আমাদের মুরুব্বিদের কাছে এসে মাটি দিতে অনুমতি চাইলে আমাদের বাড়ির মুরুব্বিরা অনুমতি দিতেন। যেহেতু আমাদের পূর্বপুরুষরা এই জায়গায় মুসলিমদের কবরস্থ করতে দিয়েছে, আমরা সে সম্মান ধরে রেখে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন বাবুলের উপস্থিতিতে প্রায় ২০ শতক সম্পত্তি মুসলিমদের কবরস্থান করতে মৌখিকভাবে দান করেছি।
বগাদানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন বাবুল জানান, মুসলিম সস্প্রদায়ের চাওয়ার অবসান হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারগুলো অনেক মানবিকতা দেখিয়েছে। মুসলিম পরিবারের জন্য কবরস্থানের জায়গা সীমানা করে দিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।