মোঃ সোহাগ হাওলাদার, আশুলিয়া : আশুলিয়া থানার নতুন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসাবে যোগদান করেছেন বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক ডাবলু।
সোমবার (৩ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে আশুলিয়া থানায় যোগদান করেন তিনি। এ সময় থানার অন্যান্য অফিসারগন তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক ডাবলু ২০০৫ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগ দান করেন।
অন্যদিকে, মনিরুল হক ডাবলু আশুলিয়া থানায় যোগদানের পর থেকে ২টি প্রত্যায়নপত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যার মধ্যে একটি প্রত্যায়ন পত্রে তাকে ছাত্রলীগ নেতা ও অন্য একটি প্রত্যায়ন পত্রে তাকে ছাত্রদলকর্মী দাবি করা হয়েছে।
এরপরেই দুইটি প্রত্যায়ন পত্রের সত্যতা নিশ্চিত করতে অনুসন্ধান শুরু করে এই প্রতিবেদক।
এ বিষয়ে প্রথমেই ছাত্রলীগের কর্মী দাবিকৃত প্রত্যায়নপত্রের সত্যতা নিশ্চিত করতে নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্যদের সাথে নানা ভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে কোনো ভাবেই তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
জানা যায়, জুলাই আন্দোলনে সরকার পতনের পর থেকে গাঁ ঢাকা দিয়েছেন এই সংসদ সদস্য। যার কারণে তার নিজস্ব কোনো লোকজনের সাথেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
সাদা চোখে দেখলে এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর নামের বানান, দুই জায়গায় দুই রকম লক্ষ্য করা যায়। যার মধ্যে টাইপকৃত অক্ষরে লেখা মোঃ নজরুল ইসলাম বাবু এবং সিলে লেখা আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম বাবু। এত টুকু অসংগতি পাওয়া যায়।
অন্যদিকে ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দাবি করা প্রত্যায়ন পত্রের অনুসন্ধান করে এর সত্যতা পাওয়া যায়।
ছাত্রদলের প্রত্যায়ন পত্রের বিষয়ে কথা বলতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হাজী মুহাম্মদ মুহসিন হলের সভাপতি একেএম মেজবাহ উদ্দীন সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, উনি (মনিরুল হক ডাবলু) আমার হল কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন । আমরা এক সাথে রাজনীতি করেছি। তখন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ভাই, ডাবুল ও আমরা এক সাথে রাজনীতি করছি।
মনিরুল হক ডাবলুর ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ততা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, না, তার সাথে ছাত্রলীগের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমি হলফ করে বলতে পারি ছাত্রলীগের সাথে তার কোনো সম্পর্ক নাই।
এ সময় মেজবাহ উদ্দিন আরও বলেন, ২০০১ সালে মহসিন হলের দখলে ছিল ছাত্রলীগের শফিকরা। তখন ডাবলু, আনিস, হিরু আমরা এক সাথে ছাত্রদলের রাজনীতি করেছি। তখন আমাদের উপর অনেক নির্যাতন করা হয়েছে। আমি জেলও খেটেছি।
আওয়ামী লীগের এক সংসদ সদস্যের দেয়া ছাত্রলীগের প্রত্যয়ন পত্রের ব্যাপারে তিনি জানান, এ গুলো ভূয়া। আমি মহসিন হলের সভাপতি আমি ছাত্রদল করছি, ডাবলু ছাত্রদল করছে। সবচেয়ে ভালো বলতে পারবেন আমাদের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ভাই। আপনি উনাকে ফোন করেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে সাবেক এই ছাত্রদল নেতা ও বর্তমান বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার পুরা পরিবারই বিএনপি। সে ফাস্ট ইয়ারে যখন হলে উঠে, তখন তারা ৪ জন বন্ধু ছিল। ছাত্রদলের লোক হিসেবে তখন তাদেরকে বের করে দেয়া হয়।
ছাত্রলীগের প্রত্যায়ন পত্রের ব্যাপারে তিনি বলেন, ওই প্রত্যায়ন পত্রটি কে বা করা বের করেছে, তা আমি জানি না। তার যে বন্ধু ছিলেন মহিদুল ইসলাম হিরু, সে পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের প্রেসিডেন্ট হয়। আপনি তার সাথেও কথা বলতে পারেন।
আশুলিয়া থানার নতুন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক ডাবলু বলেন- আমি কখন ছাত্রলীগের রাজনীতি করি নাই। এই জন্য আমাকে গত ১৫বছর অসংখ্যবার বদলি করছে, আমাকে নিভৃত করে রাখা হয়েছে। তবে আমি কোন দলের হয়ে নয় , দেশের সেবা করতে পুলিশে যোগ দিয়েছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।