লাইফস্টাইল ডেস্ক :
জীবন কখনো কখনো অন্ধকারে কেটে যায়। ব্যবহারিক সমস্যা, সম্পর্কের জটিলতা ও জীবনের সম্বন্ধে আমাদের নিজের ধারণা এসবই একে অপরকে জড়িত করে। কিন্তু আমরা যদি এ কথাটি বুঝতে পারি যে, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে পরিবর্তন করতে পারলে আমরা জীবনকে আরও ইতিবাচকভাবে দেখতে পারি, তবে এটি এক নতুন পথের সূচনা হতে পারে। জীবনকে ইতিবাচকভাবে দেখার কৌশল: সুখের পথে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। জীবনের কঠিন মুহূর্তগুলোকেও নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা সম্ভব—এমন এক দৃষ্টিভঙ্গি যা শুধুমাত্র আমাদের নয়, বরং আমাদের আশেপাশের মানুষের জীবনকেও আলোকিত করতে পারে।
জীবনকে ইতিবাচকভাবে দেখার কৌশল: সুখের পথে
জীবনকে ইতিবাচকভাবে দেখার জন্য প্রথমে আমাদের এ কথা স্মরণ রাখতে হবে যে, দৃষ্টিভঙ্গি সত্যই জীবনের গতি পরিবর্তন করে। একজন ইতিবাচক ব্যক্তি সবসময় জীবনের প্রতিটি পরিস্থিতিতে সীমাবদ্ধতা খুঁজে বের করার পরিবর্তে, সম্ভাবনা খোঁজে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা ব্যক্তিগত ভাবে কিছু ভুল করি, তবে এর পরিবর্তে আমরা যদি আমাদের ভুলটি শিক্ষার উপস্থাপনা হিসেবে গ্রহণ করি, তাহলে আমরা নতুন কিছু শিখতে পারি। একজন সুখী মানুষ কখনোই পরাজয়ের দিকে তাকায় না, বরং তিনি সবসময় ইতিবাচক অভিজ্ঞতাকে সংগ্রহ করতে চান।
এক্ষেত্রে, মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মানসিক এবং আবেগগত সুস্থতার জন্য, আমাদের মাঝে একটি সুস্থ মানসিকতা থাকতে হবে। বিভিন্ন গবেষণা ও সমীক্ষা দেখিয়েছে যে, যারা নিয়মিত সতর্কতা, ধ্যান, বা যোগব্যায়াম করেন, তারা জীবনের উদ্বেগকে মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে বেশি সফল হন। এই ধরনের কার্যক্রম আমাদের মনে ইতিবাচক ভাবনাগুলিকে উজ্জীবিত করে তোলে।
অন্যদিকে, সামাজিক সমর্থনও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তোলা আমাদের জীবনকে সুখী এবং সহজ করে তুলতে পারে। পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধব অথবা বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো, আমাদের মনের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সামাজিক সমর্থন পান তারা মানসিক সমস্যা মোকাবেলায় তুলনামূলকভাবে সফল হয়ে থাকেন।
মানসিক স্বাস্থ্য এবং সামাজিক যোগাযোগের গুরুত্ব
আমরা যখন মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিতে পারি, তখন আমাদের শারীরিক স্বাস্থ্যও উন্নত হয়। যখন আমরা সুখী থাকি, তখন আমাদের শরীরও স্বাস্থ্যকর থাকে। গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, যারা ইতিবাচকভাবে জীবনযাপন করেন, তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কম থাকে এবং তারা দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যার মতো বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম হয়।
এ ছাড়া, যারা নিজেদের পারিজাতির জন্য চাপ সৃষ্টি করেন, তারা প্রায়শই অফিসে কাজের চাপ এবং পারিবারিক কর্তব্যের মধ্যেই আটকা পড়ে যান। এ সময়, একটি ইতিবাচক মনোভাব আমাদের এ চাপ থেকে মুক্তি দিতে পারে। আলাদা আলাদা সময়ে আমরা যদি নিজেদের সাফল্যকে উদযাপন করি—যেমন একটি ভালো কাজ সম্পন্ন করা, একটি লক্ষ্য অর্জন করা অথবা একটি বিশেষ দিন পালন করা—তাহলে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত হতে পারে।
জীবনকে ইতিবাচকভাবে দেখার আরো কিছু কৌশল
জীবনকে ইতিবাচকভাবে দেখার ক্ষেত্রে কিছু কৌশল রয়েছে যা অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে—যেমন:
প্রতিদিন ধন্যবাদ জানান: প্রতিদিনের জীবনে ছোট ছোট বিষয়গুলোতে ধন্যবাদ জানানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন। এটি আমাদের মনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে সাহায্য করে।
সংজ্ঞা তৈরি করা: আমাদের জীবনে লক্ষ্য বা দৃষ্টিভঙ্গি বানানো উচিত। জীবনের উদ্দেশ্য মেনে চললে, তা আমাদের জীবনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করবে।
নতুন কিছু চেষ্টা করা: আমাদের নিয়মিত জীবনযাত্রার বাইরে বেরিয়ে নতুন কিছু চেষ্টা করুন। নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন আমাদের জীবনকে আলোকিত করে।
যোগাযোগের উন্নতি: ইতিবাচক যোগাযোগের মাধ্যমে নিজেদের জন্য ভেতর থেকে শান্তি তৈরি করুন। নিজের অনুভূতি ভাগাভাগি করুন এবং শুনান।
- আত্মবিশ্বাসী হন: আত্মবিশ্বাসী হওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বাস রাখুন যে আপনি আপনার লক্ষ্য অর্জন করতে পারবেন।
অবশেষে, আপনার জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের প্রতি একটি নির্দেশনা তৈরি করুন। প্রতিটি সমস্যাকে একটি অধ্যায় হিসেবে গ্রহণ করুন। জীবনের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের আরও শক্তিশালী এবং সাহসী করে তোলে।
জীবন জটিল, কিন্তু ইতিবাচক মনোভাবের সঙ্গে, আমরা অন্ধকার সময়কে উজ্জ্বল করতে পারি। আমাদের নিজেদের জন্য এবং অন্যদের জন্য সুখের চিন্তা করতে ভুলবেন না, কারণ সুখের পথে উঠে আসতে হলে, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজন হয়।
জেনে রাখুন-
১. কীভাবে জীবনকে ইতিবাচকভাবে দেখা যায়?
জীবনকে ইতিবাচকভাবে দেখতে হলে, আমাদের মানসিক অবস্থাকে বদলাতে হবে, ধন্যবাদ জানানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে এবং নিজেদের সাফল্যকে উদযাপন করতে ভুলবেন না।
২. ইতিবাচক জীবনযাপনের জন্য কি করতে হবে?
নতুন কিছু করা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা এবং সামাজিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করা অপরিহার্য।
৩. মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় কীভাবে সাহায্য করা যায়?
যোগব্যায়াম, ধ্যান, এবং প্রয়োজনের সময়ে সাহায্য গ্রহণ করে মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা করা সম্ভব।
৪. সুখী জীবনের জন্য কিভাবে সামাজিক সমর্থন পান?
বন্দিজনের সাথে সংবেদনশীল আলোচনা, ছবি-ভিডিও শেয়ারিং এবং একসঙ্গে সময় কাটানোর মাধ্যমে সামাজিক সমর্থন বৃদ্ধি করা সম্ভব।
৫. জীবনযাপনের প্রয়োজনে কিভাবে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে হবে?
নিজের আশেপাশের পরিবেশের পরিবর্তন, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি, এবং চিন্তাকে পুনর্বিন্যাস করা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করার কোনাক করার জন্য প্রয়োজনীয়।
৬. সুখী মানুষের অভ্যাস কি?
সুখী মানুষ সাধারনভাবে ধন্যবাদ জানানোর অভ্যাস করেন, সামাজিক মিথস্ক্রিয়া এবং নতুন অভিজ্ঞতা খোঁজেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।