জুমবাংলা ডেস্ক : চলতি মাসে কমলা বাজারজাত করে লাভবান হওয়ার আশা করছেন তিনি। নওগাঁর সীমান্তবর্তী উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে দার্জিলিং জাতের কমলা চাষ করে সফল হয়েছেন সাইদুল ইসলাম। তার বাগানের সারি সারি কমলা গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে কাঁচা সবুজ ও হলুদ রঙের কমলা।
সাইদুল ইসলাম নওগাঁর সীমান্তবর্তী উপজেলা ধামইরহাটের আগ্রাদিগুন ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা। মাস্টার্স শেষ করে চাকরির পিছনে না ছুটে নিজে কিছু করার চিন্তা করেন। তারপর ২০২০ সালে হয়রতপুর গ্রামের পাশে প্রথমে তিন বিঘা জমি লিজ নিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির ফল বাগান গড়ে তোলেন। ১ বিঘায় পরিক্ষামুলকভাবে দার্জিলিং জাতের কমলাও চাষ করেন। তাতেই তিনি সফল হয়েছেন। তার বাগানের প্রায় প্রতিটি গাছেই ঝুলছে রসালো কমলা। গাছে বাঁশের লাঠির সাহায্যে ঠেস দিয়ে রাখা হয়েছে। কমলার ভারে প্রতিটি গাছ নুয়ে পড়ছে।
সাইদুল ইসলাম বলেন, মাস্টার্স শেষ করে চাকরির পিছনে না ছুটে নিজে কিছু করবো সেই চিন্তা থেকেই মিশ্র ফলের বাগান শুরু করি। প্রথমে তিন বিঘা জমি লিজ নিয়ে মাল্টা, বরই পেয়ারা এবং আমের চারা রোপণ করি। তারপর পরীক্ষামূলক নীলফামারী থেকে দার্জিলিং জাতের কমলার চারা কিনে এনে এক বিঘা জমিতে রোপণ করি। দীর্ঘ দুই বছরের পরিচর্যায় এ বছর প্রতিটি গাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে কমলা এসেছে। বর্তমানে আমার বাগানে ১৩৪টি কমলার গাছ আছে। প্রতিটি গাছ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ কেজি করে কমলা পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। আশা করছি প্রথমবারেই ২-৩ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করতে পারবো। চলতি ডিসেম্বর মাস থেকে এসব কমলা বাজারজাত করতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, আমার বাগানে কমলা ছাড়াও বারি-১ মাল্টা, বারি-৩ বারোমাসি জাতের মাল্টা, বরই, পেয়ারা, কাটিমন, আমরুপালি, বারি-৪ জাতের আমের গাছ রয়েছে। মাল্টা, বরই, পেয়ারা ও আম পাশাপাশি কমলা চাষ করে সবচেয়ে কমলার ফলন ভালো হয়েছে। মাল্টা যেভাবে চাষ করা হয় সেভাবে কমলা চাষ করেছিলাম। এছাড়াও বাগান থেকে আরো ৬ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করেছি। ইতোমধ্যে মাল্টা, বরই ও পেয়ারা থেকেও ফলন পেয়েছি।
সাইদুর আরও বলেন, বর্তমানে ১৮ বিঘা জমিতে আমার মিশ্র ফলের বাগানটি রয়েছে। যেখানে ৮-১০ জনের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। তারা এখানে কাজ করে তাদের জীবন-জীবিকা ধারন করছেন। কেউ কেউ আমার কাছ থেকে চারা নিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও আমার কমলা বাগান দেখে অনেকেই কমলা চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
বাগান দেখতে আসা স্থানীয় রাকিবুল হোসেন বলেন, সাইদুলের বাগানটি খুব সুন্দর হয়েছে। প্রতিটি গাছেই কমলা ঝুলছে। অনেক গাছতো কমলার ভারে নুয়ে পড়ছে। সেই গাছগুলোকে বাঁশ দিয়ে ঠেস দেওয়া হয়েছে। আমাদের এলাকার মাটিতে এতা সুন্দর কমলার গাছ হবে সেটা ভাবতেই পারিনি। আশা করছি সাইদুল লাভবান হতে পারবে।
উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ বলেন, সাইদুল ইসলামকে লেবু জাতীয় ফসলের সমপ্রসারিত ব্যবস্থাপনা এবং উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় ফল বাগান প্রদর্শনীর তিন বিঘা জমি দেওয়া হয়েছিল। সেখানে তিনি মাল্টা ও কমলা চাষ করেন। এই জমি সমতল জমির চেয়ে উঁচু। আশা করছি তার বাগান ও ফলন দুটোই বৃদ্ধি পাবে। এই উপজেলায় মাটি মাল্টা ও কমলা চাষের জন্য উপযোগী। ২ বছরেই তার বাগানে ফলন এসেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।