Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ: আপনার জীবনের শুভ মুহূর্ত খুঁজে পাওয়ার রহস্য কি আকাশে লেখা?
    লাইফস্টাইল ডেস্ক
    লাইফ হ্যাকস লাইফস্টাইল

    জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ: আপনার জীবনের শুভ মুহূর্ত খুঁজে পাওয়ার রহস্য কি আকাশে লেখা?

    লাইফস্টাইল ডেস্কMynul Islam NadimJuly 10, 202515 Mins Read
    Advertisement

    বাঁধন থেকে টান টান। চোখে চোখ রেখে কথা বলার সেই দিনগুলো থেকে আজ দশ বছর পার। অরুণিমা আর সুমনের সম্পর্কে কোন খামতি নেই – ভালোবাসা আছে, বোঝাপড়া আছে, ভবিষ্যতের স্বপ্নও এক। তবুও, যখন বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করার কথা ওঠে, অরুণিমার মা’র মুখে একটাই কথা: “গণেশজির কাছ থেকে একটা শুভ জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ বের করিয়ে নাও না বাবা? শনি-রাহুর দশা তো দেখতে হবে! একবার শুরু হলো, তো চলেই যাবে।” সুমন আধুনিক চিন্তার, তার মাথায় ঢোকে না – প্রেম, বিশ্বাস, আর পারস্পরিক সম্মতিই তো যথেষ্ট। অথচ, হঠাৎ করেই তার নিজের মনেও প্রশ্ন জাগে: “যদি সত্যিই… যদি সত্যিই কোনও শুভক্ষণ থাকে, যা আমাদের দাম্পত্য জীবনকে আরও সুখী, আরও স্থায়ী করে তোলে? লক্ষ লক্ষ বাঙালি পরিবার কেন শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই প্রাচীন জ্ঞানের দিকে তাকিয়ে থাকে?” এই সংশয়, এই কৌতূহল, এই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে প্রবাহিত বিশ্বাসের টানাপোড়েনই তো আমাদের সমাজের অমোঘ বাস্তবতা। জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ – শুধু গ্রহ-নক্ষত্রের হিসাব নয়, এ যেন আবেগ, আশা, ভবিষ্যতের নিরাপত্তার খোঁজে মিশে থাকা একটি সাংস্কৃতিক DNA।

    জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ

    জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ: গ্রহ-নক্ষত্রের নীড়ে সুখের সন্ধান

    জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ কেবলমাত্র একটি শুভ তারিখ বা শুভ মুহূর্ত নির্ধারণের বিষয় নয়; এটি একটি জটিল জ্যোতিষশাস্ত্রীয় প্রক্রিয়া, যেখানে দুজন ব্যক্তির জন্মছক (কুণ্ডলী) গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে তাদের বৈবাহিক জীবনের সম্ভাব্য গতি-প্রকৃতি, সুখ-সমৃদ্ধি, বাধা-বিপত্তি এবং সামগ্রিক সামঞ্জস্য (Compatibility) নিরূপণের চেষ্টা করা হয়। প্রাচীন ভারতীয় জ্যোতিষশাস্ত্র, বিশেষ করে বরাহমিহির, পরাশর ও জৈমিনির রচনাশাস্ত্রে বিবাহের যোগ নির্ণয়ের জন্য কয়েকটি মৌলিক স্তম্ভকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া হয়েছে:

    1. লগ্ন ও সপ্তম ভাবের শক্তি: জন্মলগ্ন (Lagna) ব্যক্তিত্ব, শারীরিক গঠন ও সার্বিক জীবনচক্রের প্রতিনিধিত্ব করে। সপ্তম ভাব (7th House) সরাসরি বিবাহ, জীবনসঙ্গী, ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব এবং দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্কের নির্দেশক। জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগের প্রথম ও প্রধান শর্ত হলো লগ্ন ও সপ্তম ভাবের শক্তিশালী অবস্থান। লগ্নেশ (লগ্নের অধিপতি গ্রহ) এবং সপ্তমেশ (সপ্তম ভাবের অধিপতি গ্রহ) যদি বলবান হন, শুভগ্রহ দ্বারা দৃষ্ট বা যুক্ত হন, এবং পাপগ্রহ (মঙ্গল, শনি, রাহু, কেতু) দ্বারা পীড়িত না হন, তবে বিবাহিত জীবন সুখময় ও স্থিতিশীল হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
    2. শুক্র ও বৃহস্পতির ভূমিকা: শুক্র (Venus) প্রেম, কামনা, সৌন্দর্য, আনন্দ এবং বৈবাহিক সুখের ক্যারিয়ার গ্রহ। বৃহস্পতি (Jupiter) জ্ঞান, প্রজ্ঞা, ধর্ম, সৌভাগ্য এবং বিবাহের সাক্ষী গ্রহ হিসেবে বিবেচিত। বিয়েের শুভ সময় নির্ণয়ে শুক্র ও বৃহস্পতির অবস্থান, বল, ও পরস্পরের সাথে সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুক্রের দুর্বলতা বা পাপপ্রভাব প্রেমে বাধা, বৈবাহিক জীবনে কামনা-বাসনার অভাব বা মনোমালিন্য তৈরি করতে পারে। বৃহস্পতির দুর্বলতা বা পাপপ্রভাব সাংসারিক জীবনে জ্ঞানের অভাব, আধ্যাত্মিকতার ঘাটতি বা সৌভাগ্যের কমতি নির্দেশ করতে পারে। শুক্র ও বৃহস্পতির পারস্পরিক শুভ দৃষ্টি বা যোগ সুখী দাম্পত্যের ইঙ্গিতবাহী।
    3. দারা কারক গ্রহের বিশ্লেষণ: জ্যোতিষে দারা (জীবনসঙ্গী) নির্দেশের জন্য দারা কারক গ্রহকে প্রধান বিবেচনা করা হয়। শুক্র সাধারণত পুরুষের কুণ্ডলীতে এবং বৃহস্পতি নারীর কুণ্ডলীতে দারা কারক হিসেবে কাজ করে (যদিও অন্যান্য গ্রহও প্রাসঙ্গিক হতে পারে, বিশেষ নিয়মে)। দারা কারক গ্রহের শক্তি, অবস্থান (কোন ভাব/ঘরে), শুভ বা অশুভ গ্রহের দ্বারা প্রভাবিত হওয়া, এবং তার দশা-অন্তর্দশা (পর্যায়) বিয়ের উপযুক্ত সময় এবং সঙ্গীর প্রকৃতি বোঝার জন্য গুরুত্ত্বপূর্ণ।
    4. গুণ মিলন (অষ্টকুট মিলন): সম্ভবত জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগের সর্বাধিক পরিচিত ও জনপ্রিয় দিক। কন্যা ও বরের জন্মনক্ষত্র (তারকা) ভিত্তিতে ৩৬টি গুণের (কুট) মধ্যে কতটি মিলছে তা পরীক্ষা করা হয়। এই ৩৬ গুণ আটটি বিভাগে (বর্ণ, বশ্য, তারা, যোনি, গ্রহমৈত্রী, গণ, ভকুট ও নাড়ী) বিভক্ত, প্রতিটির আলাদা আলাদা তাৎপর্য রয়েছে। সাধারণত, ১৮ বা তার বেশি গুণ মিলন (৩৬ এর মধ্যে) শুভ ও দীর্ঘস্থায়ী বিবাহের লক্ষণ হিসেবে গণ্য হয়। বিশেষ করে নাড়ী মিলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এতে অমিল থাকলে স্বাস্থ্যগত সমস্যা বা সন্তানলাভে বাধার আশঙ্কা করা হয়। ভকুট মিলন (৩৬ গুণের মধ্যে ৬ গুণ) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; ভকুটে অমিল (০/৬) বিবাহে মারাত্মক অশান্তি, বিচ্ছেদ বা অকাল মৃত্যুরও ইঙ্গিত দেয় বলে জ্যোতিষীরা বিশ্বাস করেন। বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম বা রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী পরিবারগুলিতে গণেশ জ্যোতিষ বা বৈদিক জ্যোতিষ বিশেষজ্ঞরা প্রায়শই বিস্তারিত গুণ মিলনের রিপোর্ট তৈরি করে থাকেন।
    5. মাঙ্গলিক দোষ (কুজ দোষ) ও প্রতিকার: যদি কোনো ব্যক্তির জন্মকুণ্ডলীতে মঙ্গল (Mars) ১ম, ৪র্থ, ৭ম, ৮ম বা ১২তম ভাবে অবস্থান করে, তবে তাকে মাঙ্গলিক দোষ বা কুজ দোষ বলে। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, এর প্রভাবে বিবাহিত জীবনে অশান্তি, দেরিতে বিয়ে, বা সঙ্গীর অকালমৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে। তবে, জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ খুঁজতে গেলে এই দোষের প্রকৃত অবস্থা (কোন ভাবে, কোন রাশিতে, শক্তিশালী কি দুর্বল), অন্যান্য গ্রহের প্রভাব এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ – যদি কন্যা ও বর উভয়েরই মাঙ্গলিক দোষ থাকে (“মঙ্গল মিলন”), তাহলে দোষ কাটানো যায় বলে ধরা হয়। দোষের তীব্রতা অনুযায়ী বিভিন্ন জ্যোতিষীয় প্রতিকার (মন্ত্র, রত্নধারণ, নির্দিষ্ট পূজা-অনুষ্ঠান) সুপারিশ করা হয়। ঢাকার বাইরে, যেমন কুমিল্লা বা সিলেটের অনেক গ্রামীণ অঞ্চলে, মাঙ্গলিক দোষ নিয়ে এখনও গভীর আগ্রহ ও চিন্তা দেখা যায়।
    6. চন্দ্র রাশির মিলন: চন্দ্র (Moon) মনের অবস্থা, আবেগ ও মানসিক সামঞ্জস্যের নির্দেশক। কন্যা ও বরের চন্দ্র রাশি একই উপাদানের (অগ্নি-বায়ু-পৃথিবী-জল) হলে সাধারণত মানসিক বোঝাপড়া ভালো হয় বলে ধরা হয়। বিপরীত উপাদানের রাশিতে (যেমন একজন মেষ, অন্যজন কর্কট) হলে চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে, তবে অন্যান্য গ্রহের শুভ প্রভাব তা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করতে পারে। বিয়েের শুভ সময় বিবেচনায় গ্রহণ করার সময় চন্দ্রের অবস্থানও দেখা হয়, বিশেষ করে বিবাহের দিনে চন্দ্রের রাশি ও তারার অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ।

    বিয়ের শুভ সময়: দশা, গোচর এবং মুহূর্ত নির্বাচনের জটিল জাল

    জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ শুধু দু’জনের কুণ্ডলী মিলালেই শেষ হয় না; কখন সেই যোগ সক্রিয় হবে, কখন সেই শুভ মুহূর্ত আসন্ন – তা নির্ধারণ করাই হল আসল কৌশল। এই প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত জটিল এবং অভিজ্ঞ জ্যোতিষীর দক্ষতার উপর নির্ভরশীল:

    • দশা-অন্তর্দশা (Mahadasha-Antardasha): জ্যোতিষের মতে, মানুষের জীবনে বিভিন্ন গ্রহ নির্দিষ্ট সময়কাল (দশা) ধরে প্রভাব বিস্তার করে। বিয়ের শুভ সময় সাধারণত তখনই আসে যখন দারা কারক গ্রহ (যেমন পুরুষের ক্ষেত্রে শুক্র, নারীর ক্ষেত্রে বৃহস্পতি), সপ্তমেশ (সপ্তম ভাবের অধিপতি), লগ্নেশ, অথবা শুভগ্রহ যেমন বৃহস্পতি বা শুক্রের দশা-অন্তর্দশা চলে। বিশেষ করে যদি এই দশা শক্তিশালী অবস্থানে থাকা গ্রহের হয় এবং সপ্তম ভাব বা দারা কারক গ্রহকে প্রভাবিত করে। উদাহরণস্বরূপ, একজন নারীর বৃহস্পতির দশায় বা অন্তর্দশায়, বিশেষ করে যদি বৃহস্পতি তার কুণ্ডলীতে শক্তিশালী অবস্থানে থাকে, তাহলে বিবাহের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়। বাংলাদেশে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে, দশা দেখে বিয়েের তারিখ ঠিক করা এখনও খুবই সাধারণ ঘটনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রামীণ খুলনা অঞ্চলে প্রায় ৭০% বিবাহে দশা-অন্তর্দশার প্রভাব বিবেচনা করা হয়।
    • গোচর (Transit): চলমান গ্রহসমূহ (বিশেষ করে বৃহস্পতি, শনি এবং মঙ্গল) জন্মকুণ্ডলীর বিভিন্ন ভাব ও গ্রহের উপর দিয়ে অতিক্রম করার সময় তাদের প্রভাব পড়ে। জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ সৃষ্টির জন্য গুরুত্বপূর্ণ গোচর পরিস্থিতিগুলো হল:
      • বৃহস্পতির গোচর: গুরুগ্রহ বৃহস্পতি যখন সপ্তম ভাব, লগ্ন, দারা কারক গ্রহের অবস্থান, বা পঞ্চম ভাব (প্রেম) ও একাদশ ভাব (কামনা পূরণ) অতিক্রম করেন, তখন বিবাহের সম্ভাবনা বাড়ে। বৃহস্পতির বার্ষিক গোচর তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
      • শনির গোচর: শনি ধীর গতির গ্রহ, তার প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী। শনি যখন সপ্তম ভাব বা সপ্তমেশের উপর দিয়ে অতিক্রম করে, বিশেষ করে যদি তা শনির সাড়ে সাতি বা অর্ধাষ্টম শনির পর্যায় হয়, তবে তা বিবাহে বিলম্ব বা চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসতে পারে। তবে শনি শক্তিশালী হলে স্থায়িত্বও দেয়।
      • মঙ্গলের গোচর: মঙ্গলের গতি দ্রুত, কিন্তু তীব্র। মঙ্গল সপ্তম ভাবে গেলে তা বিবাহে তাড়না বা ঝগড়া-বিবাদের ইঙ্গিত দিতে পারে, বিশেষ করে যদি মঙ্গল পাপপ্রভাবিত হয়।
    • বিবাহের শুভ মুহূর্ত (Vivah Muhurta): কুণ্ডলী মিলন ও দশা-গোচর অনুকূলে থাকার পর আসে প্রকৃত বিয়েের দিন এবং বিয়েের শুভ সময় (লগ্ন) নির্বাচনের পালা। এই নির্বাচন অত্যন্ত সূক্ষ্ম এবং বহু নিয়মের উপর ভিত্তি করে:
      • তিথি (Lunar Day): শুভ তিথিগুলোর মধ্যে দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, পঞ্চমী, সপ্তমী, একাদশী, ত্রয়োদশী ও পূর্ণিমা (শুক্লপক্ষের) বিশেষভাবে পছন্দনীয়। চতুর্থী, ষষ্ঠী, অষ্টমী, নবমী, চতুর্দশী ও অমাবস্যা সাধারণত পরিহার করা হয়।
      • বার (Weekday): রবিবার, মঙ্গলবার ও শনিবার সাধারণত বিবাহের জন্য অশুভ বলে গণ্য করা হয় (যদিও নির্দিষ্ট নক্ষত্রে মঙ্গলবারও শুভ হতে পারে)। বুধবার, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার অত্যন্ত শুভ। সোমবার মধ্যম শুভ।
      • নক্ষত্র (Constellation): রোহিণী, মৃগশিরা, উত্তরফাল্গুনী, উত্তরাষাঢ়া, উত্তরভাদ্রপদ, হস্ত, স্বাতী, অনুরাধা, রেবতী, শ্রবণ, ধনিষ্ঠা ও শতভিষা নক্ষত্র বিবাহের জন্য অত্যন্ত শুভ। অশ্লেষা, জ্যেষ্ঠা ও মঘা নক্ষত্র পরিহার্য।
      • যোগ (Planetary Combination): বৰ্জিত, বৈধৃতি, পরিঘ, ব্যতিপাত ইত্যাদি অশুভ যোগ পরিহার করতে হয়। শুভ যোগ যেমন বৃদ্ধি, ধ্রুব, হর্ষণ, বরীয়ান ইত্যাদি প্রাধান্য পায়।
      • করণ (Half of Tithi): বব, বালব, কৌলব, তৈতিল, গর, বণিজ ও বিষ্টি করণ। এদের মধ্যে বিষ্টি করণ (“ভদ্রা নেই”) অত্যন্ত অশুভ বিবেচিত, প্রায় সর্বত্র পরিহৃত। বাকি করণগুলোর শুভাশুভ নির্ভর করে তিথি ও অন্যান্য ফ্যাক্টরের উপর।
      • লগ্ন (Ascendant at Time of Marriage): বিবাহের শুভ মুহূর্তে উদীয়মান রাশি (লগ্ন) এবং সপ্তম ভাব শক্তিশালী হওয়া উচিত। লগ্নেশ ও সপ্তমেশ যেন দুর্বল বা পাপগ্রস্ত না হন। শুক্র ও বৃহস্পতির অবস্থানও দেখা হয়। পাপগ্রহ (মঙ্গল, শনি, রাহু, কেতু) যেন সপ্তম ভাবে বা লগ্নে না থাকে।
      • চন্দ্রবল (Moon’s Strength): বিবাহের সময় চন্দ্রের বলবান ও শুভ স্থানে অবস্থান অত্যাবশ্যক। চন্দ্রের দুর্বলতা বা পাপপ্রভাব মানসিক অশান্তির ইঙ্গিত দেয়। চন্দ্র যেন শূন্য রাশিতে না থাকে (অমাবস্যার দিন বিশেষ সতর্কতা)।

    আধুনিক জীবন ও জ্যোতিষ: বিশ্বাস, সংশয় ও ভারসাম্যের খোঁজে

    ২১ শতকের দ্রুতগতির, বিজ্ঞানমনস্ক যুগেও জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগের প্রতি মানুষের আকর্ষণ কমেনি; বরং তা নতুন মাত্রা পেয়েছে। শহুরে জীবনে, যুক্তির রাজত্বে, এই প্রাচীন প্রথার স্থান কোথায়?

    • সাংস্কৃতিক টান ও পারিবারিক চাপ: বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের সমাজে বিবাহ শুধু দু’জন মানুষের মিলন নয়; এটি দুটি পরিবারের মিলন। গণেশ জ্যোতিষ বা পূজারীদের পরামর্শ, বড়দের ইচ্ছা, সামাজিক রীতিনীতি – এসবের চাপ এড়ানো অনেকের পক্ষেই কঠিন। অরুণিমা-সুমনের গল্পটি লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতীর গল্প। ভালোবাসার বিয়েও হোক আর ব্যবস্থার বিয়েই হোক, “জ্যোতিষে কি বলছে?” – এই প্রশ্নটি উঠবেই। ঢাকার ধানমণ্ডি বা কলকাতার সাউথ সিটির ফ্ল্যাটে বসবাসকারী উচ্চশিক্ষিত দম্পতিরাও প্রায়ই মা-বাবার অনুরোধে বা নিজেদের মনের শান্তির জন্য জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ পরীক্ষা করিয়ে থাকেন। এটি একধরনের সাংস্কৃতিক নিরাপত্তা বলয়।
    • মনস্তাত্ত্বিক নিশ্চয়তা: অনিশ্চয়তায় ভরা জীবনে, বিশেষ করে বিবাহের মতো একটি জীবন-পরিবর্তনকারী সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে, জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ একধরনের মনস্তাত্ত্বিক নিশ্চয়তা দেয়। “গ্রহনক্ষত্র অনুকূলে আছে” – এই ভাবনাটি উদ্বেগ কমায়, আশাবাদ বাড়ায়। এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি ইতিবাচক ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করতে সাহায্য করে, যা দাম্পত্য সম্পর্কের সূচনাকে আরও আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে পারে। এটি একটি Placebo Effect-ও বটে।
    • বৈজ্ঞানিক সংশয় ও সমালোচনা: অপরদিকে, জ্যোতিষের উপর ক্রমবর্ধমান বৈজ্ঞানিক সংশয় ও সমালোচনা রয়েছে। কোনও নিয়ন্ত্রিত বৈজ্ঞানিক গবেষণায় জ্যোতিষীয় ভবিষ্যদ্বাণীর নির্ভরযোগ্যতা প্রমাণিত হয়নি। সমালোচকরা যুক্তি দেখান যে গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান মানুষের ব্যক্তিত্ব বা ভাগ্যের উপর কী প্রভাব ফেলবে, তার কোনও প্রমাণিত জৈব-পদার্থবিজ্ঞান ভিত্তি নেই। জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ খুঁজতে গিয়ে অনেক সময় দুর্দান্ত মানসিক ও সামাজিক সামঞ্জস্য থাকা দম্পতিকে শুধুমাত্র গুণ মিলন কম বা মাঙ্গলিক দোষের কারণে বিয়ে করতে নিরুৎসাহিত করা হয়, যা যুক্তিবাদীদের মতে অযৌক্তিক এবং ক্ষতিকর হতে পারে। কুসংস্কার ও বাণিজ্যিকীকরণের ঝুঁকিও রয়েছে।
    • একটি ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি: অনেক আধুনিক চিন্তাবিদ এবং এমনকি কিছু প্রগতিশীল জ্যোতিষীও বিয়েের শুভ সময় নির্ণয়ের ক্ষেত্রে একটি ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির পক্ষপাতী। তাদের মতে:
      • জ্যোতিষ একটি গাইডলাইন, মাত্র: এটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তদাতা নয়। ব্যক্তির ইচ্ছা, বুদ্ধি, পারস্পরিক বোঝাপড়া, মানসিক ও অর্থনৈতিক প্রস্তুতি সর্বাগ্রে গুরুত্বপূর্ণ। জ্যোতিষকে একটি পরামর্শক হিসেবে দেখা উচিত, নিয়ন্ত্রক হিসেবে নয়।
      • অতিরিক্ত গুরুত্ব না দেওয়া: গুণ মিলন কম হলেই যে বিয়ে অশুভ হবে, এমন নয়। অন্যান্য শক্তিশালী যোগ (লগ্ন-সপ্তমের বল, দশা ইত্যাদি) তার ক্ষতিপূরণ করতে পারে। একইভাবে, গুণ মিলন বেশি হলেই যে বিয়ে নিশ্চিত সুখের হবে, তারও কোন গ্যারান্টি নেই।
      • প্রতিকারের দর্শন: জ্যোতিষ শাস্ত্রে প্রতিকারেরও ব্যবস্থা আছে। দোষ থাকলে তা মেনে নিয়ে হতাশ হওয়ার বদলে উপযুক্ত প্রতিকারের মাধ্যমে তার প্রভাব কমানোর চেষ্টা করা জরুরি (মন্ত্র, দান, স্নান, রত্ন ইত্যাদি – অবশ্যই যোগ্য ব্যক্তির পরামর্শে)।
      • দক্ষ ও নৈতিক জ্যোতিষীর সন্ধান: জ্যোতিষের নামে প্রতারণা প্রচুর। তাই বিশ্বস্ত, জ্ঞানী ও নৈতিকতাবোধসম্পন্ন জ্যোতিষীর পরামর্শ নেওয়া উচিত, যিনি ভয় দেখিয়ে নয়, বাস্তবসম্মত বিশ্লেষণ ও গাইডেন্স দেন। বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোলজিক্যাল সোসাইটির মতো সংস্থাগুলো কিছুটা নির্ভরযোগ্যতা দিতে পারে।

    গুণ মিলন: ৩৬ কুটের হিসাব-নিকাশের পিছনের যুক্তি

    জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা গুণ মিলন বা অষ্টকুট মিলন প্রক্রিয়াটি আসলে কী পরিমাপ করে? প্রতিটি “কুট” বা গুণের পিছনে একটি যৌক্তিক ভিত্তি খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে:

    • বর্ণ মিলন (১ গুণ): সামাজিক ও আর্থ-সাংস্কৃতিক পটভূমির মিল পরীক্ষা। একই বা কাছাকাছি সামাজিক স্তরের মানুষজনের মধ্যে বোঝাপড়া ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
    • বশ্য মিলন (২ গুণ): পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ ও প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা। দাম্পত্যে পারস্পরিক আকর্ষণ ও সম্মান গুরুত্বপূর্ণ।
    • তারা মিলন (৩ গুণ): জন্মনক্ষত্রের দূরত্ব ভিত্তিতে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার সামঞ্জস্য। নক্ষত্রের দূরত্বের সাথে জিনগত বৈচিত্র্যের একটি সম্পর্ক কল্পনা করা হয়।
    • যোনি মিলন (৪ গুণ): প্রাণী প্রতীক ভিত্তিতে শারীরিক মিলন ও কামগত সামঞ্জস্য। এটি যৌন সামঞ্জস্যের একটি রূপক নির্দেশক।
    • গ্রহ মৈত্রী মিলন (৫ গুণ): জন্মনক্ষত্রের অধিপতি গ্রহের মৈত্রী (বন্ধুত্ব) পরীক্ষা। গ্রহের শুভাশুভ সম্পর্ক মানসিক ও আদর্শগত মিলের ইঙ্গিত দেয়।
    • গণ মিলন (৬ গুণ): স্বভাব বা মেজাজের মিল (দেব, মনুষ্য, রাক্ষস গণ)। একই গণে হলে স্বভাবের মিল ভালো হয়।
    • ভকুট মিলন (০ বা ৬ গুণ – অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ): সন্তান লাভ, পারিবারিক সমৃদ্ধি ও দীর্ঘায়ুর ইঙ্গিত। ভকুটে অমিলকে মারাত্মক বিবেচনা করা হয়।
    • নাড়ী মিলন (০ বা ৮ গুণ – অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ): প্রাণশক্তি বা জৈবিক প্রবাহের মিল। নাড়ীতে অমিল থাকলে (অর্থাৎ একই নাড়ী – আন্ত, সাধ্যা, বা কান্ত হলে) সন্তান জন্মদানে জটিলতা বা স্বাস্থ্যগত সমস্যার আশঙ্কা করা হয়। এটি জিনগত বৈচিত্র্যের একটি প্রাচীন ধারণার প্রতিফলন।

    এটি মনে রাখা জরুরি যে এই “যুক্তিগুলো” বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়, বরং প্রাচীন কালে পর্যবেক্ষণ ও দার্শনিক চিন্তার ফসল। গণেশ জ্যোতিষ বা অন্যান্য পদ্ধতিতে এই মিলনই প্রায়শঃ বিয়ের সিদ্ধান্তের মূল ভিত্তি হয়ে দাঁড়ায়।

    বাস্তব জীবনের গল্প: জ্যোতিষের জয়-পরাজয়

    জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগের প্রভাব বাস্তব জীবনে কতটা? গল্প দু’রকমের:

    • সাফল্যের গল্প: অনেক দম্পতি দাবি করেন যে জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ মেনে শুভ মুহূর্তে বিয়ে করার পর তাদের দাম্পত্য জীবন সুখী ও সমৃদ্ধিশালী হয়েছে। তারা গ্রহের দশা, গোচরের সময়কে দায়ী করেন জীবনের ইতিবাচক মোড় নেওয়ার জন্য। আবার এমনও দম্পতি আছেন যাদের কুণ্ডলীতে দোষ ছিল, প্রতিকার করায় তারা দোষমুক্ত সুখী জীবনযাপন করছেন বলে বিশ্বাস করেন। রাজশাহীর এক শিক্ষক দম্পতি, যাদের গুণ মিলন ছিল মাত্র ১৬, কিন্তু দারা কারক গ্রহের দশা ও শুভ গোচরের সময়ে বিয়ে হয়েছিল, তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন জ্যোতিষীয় সময় নির্বাচনই তাদের ৩০ বছরের সুখী দাম্পত্যের রহস্য।
    • ব্যর্থতার গল্প: অন্যদিকে, প্রচুর উদাহরণ রয়েছে যেখানে জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ পুরোপুরি মিলেও দাম্পত্য জীবন দুর্বিসহ হয়েছে বা বিচ্ছেদ ঘটেছে। আবার, যেসব দম্পতি জ্যোতিষকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে শুধু ভালোবাসা ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে বিয়ে করেছেন, তারাও দীর্ঘ ও সুখী দাম্পত্য জীবন উপভোগ করছেন। খুলনার এক ব্যবসায়ী দম্পতি, যাদের মাঙ্গলিক দোষ ছিল এবং জ্যোতিষীরা অত্যন্ত সতর্ক করেছিলেন, তারা বিশ্বাস না করে বিয়ে করেছেন এবং আজ ২৫ বছর ধরে সুখে আছেন। তাদের মতে, “বিয়েের শুভ সময় তৈরি হয় দু’জনের মন ও ব্যবহারে।”

    সিদ্ধান্ত আপনার হাতে: যুক্তি, বিশ্বাস ও অন্তর্দৃষ্টির মিশেলে

    জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ – এ বিষয়টি একইসাথে মোহনীয় এবং বিতর্কিত। এটি হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, বিশ্বাস এবং ভবিষ্যতের নিরাপত্তার আকাঙ্ক্ষার সাথে গভীরভাবে জড়িত। গ্রহ-নক্ষত্রের গতিপথে জীবনের শুভ মুহূর্ত খোঁজার এই প্রচেষ্টা মানবজাতির চিরন্তন কৌতূহল ও নিয়ন্ত্রণের ইচ্ছারই প্রতিফলন। জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ আপনাকে একটি কাঠামো, একটি সম্ভাব্য গাইডলাইন দিতে পারে, বিশেষ করে যখন অনিশ্চয়তা ঘিরে ধরে। এটি পারিবারিক ও সামাজিক শান্তি রক্ষার একটি হাতিয়ারও বটে। গণেশ জ্যোতিষ বা বৈদিক পদ্ধতিতে কুণ্ডলী মিলন, দশা দেখা, বিয়েের শুভ সময় বের করা – এসবের মধ্যে একটি গভীর সান্ত্বনা নিহিত আছে। তবে, একে সর্বশেষ সত্য হিসেবে গ্রহণ করা বিপজ্জনক হতে পারে। মনে রাখবেন, গ্রহ-নক্ষত্র যতই অনুকূলে থাকুক না কেন, একটি সুখী ও স্থায়ী বিবাহের ভিত্তি হল পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস, সুন্দর যোগাযোগ, সমঝোতা, প্রেম এবং একে অপরের প্রতি অটুট অঙ্গীকার। জ্যোতিষ আপনার ভাগ্য নির্ধারণ করে না, এটি শুধুমাত্র সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়। আপনার বিবেচনা, বুদ্ধি এবং হৃদয়ের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ খুঁজতে গিয়ে বা তা উপেক্ষা করতেই হোক, সিদ্ধান্ত নিন সচেতনভাবে – জ্যোতিষকে অন্ধভাবে অনুসরণ না করে, আবার সম্পূর্ণ অবজ্ঞাও না করে। আপনার দাম্পত্য জীবনের প্রকৃত নির্মাতা কিন্তু আপনিই। শুভ মুহূর্তটি তৈরি হয় আপনার প্রতিদিনের ভালোবাসা, শ্রম ও সম্মানের মধ্য দিয়েই।

    জেনে রাখুন

    1. জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ কি শুধু হিন্দু ধর্মের জন্য প্রযোজ্য?

      • না, জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ নির্ণয়ের মূল নীতিগুলো (গ্রহের অবস্থান, দশা, গোচর, তিথি-নক্ষত্র ইত্যাদি) মূলত ভারতীয় জ্যোতিষশাস্ত্র (হিন্দু জ্যোতিষ) থেকে এসেছে এবং হিন্দু সমাজে এটি সর্বাধিক প্রচলিত। তবে, ইসলামী জ্যোতিষ (ইলম-ই-নুজুম), পাশ্চাত্য জ্যোতিষ এবং অন্যান্য কিছু সংস্কৃতিতেও বিবাহের জন্য শুভ সময় নির্বাচনের নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে। বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় ছাড়াও কিছু অন্যান্য সম্প্রদায়ও এর প্রতি আগ্রহ দেখাতে পারেন, তবে তা সর্বজনীন নয়।
    2. গুণ মিলনে কত পয়েন্ট থাকলে বিয়ে করা উচিত?

      • গুণ মিলনে সর্বমোট ৩৬টি গুণ থাকে। সাধারণত ১৮ বা তার বেশি গুণ মিলনকে শুভ ও গ্রহণযোগ্য বলে ধরা হয়। তবে, জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগের ক্ষেত্রে শুধু পয়েন্ট নয়, নির্দিষ্ট কিছু গুণের মিলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে নাড়ী মিলন (৮ গুণ) এবং ভকুট মিলন (৬ গুণ) অমিল মারাত্মক বলে বিবেচিত হয়। ১৮ এর কম হলেও যদি অন্যান্য গ্রহীয় যোগ (লগ্ন-সপ্তমের বল, দারা কারকের শক্তি) খুব শক্তিশালী হয়, তাহলে জ্যোতিষীরা বিবেচনা করতে পারেন।
    3. মাঙ্গলিক দোষ থাকলেই কি বিয়ে করা উচিত নয়?

      • মাঙ্গলিক দোষ থাকলেই যে বিয়ে করা উচিত নয়, তা নয়। জ্যোতিষে এর বিভিন্ন প্রকারভেদ ও তীব্রতা রয়েছে। সবচেয়ে প্রচলিত সমাধান হল “মঙ্গল মিলন” – অর্থাৎ যদি কন্যা ও বর উভয়েরই মাঙ্গলিক দোষ থাকে, তাহলে দোষ কাটে বলে বিশ্বাস করা হয়। এছাড়াও, মাঙ্গলিক দোষের তীব্রতা, অন্যান্য গ্রহের প্রভাব এবং বিভিন্ন জ্যোতিষীয় প্রতিকার (যেমন নির্দিষ্ট মন্ত্রজপ, দান, রত্নধারণ, বিশেষ পূজা) এর প্রভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে বলে ধারণা করা হয়। একজন দক্ষ জ্যোতিষীর পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
    4. জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ না মিললে কী করণীয়?

      • যদি জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ (গুণ মিলন কম, মাঙ্গলিক দোষ, দারা কারকের দুর্বলতা ইত্যাদি) পূর্ণরূপে শুভ না হয়, তাহলে জ্যোতিষীরা সাধারণত নিম্নলিখিত পরামর্শ দিতে পারেন:
      • প্রতিকার: নির্দিষ্ট মন্ত্র, যজ্ঞ, দান, রত্নধারণ, স্নান বা পূজার মাধ্যমে দোষ কমানোর চেষ্টা।
      • সময় নির্বাচন: এমন একটি বিয়েের শুভ সময় বেছে নেওয়া, যখন দশা-গোচর অনুকূল থাকে এবং পাপগ্রহের প্রভাব কম থাকে, যা সামগ্রিকভাবে দোষের প্রভাব হ্রাস করতে পারে।
      • মনোভাব: জ্যোতিষকে ভাগ্য নির্ধারক না ভেবে, একটি সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া এবং সচেতনভাবে দাম্পত্য জীবনে আরও বেশি শ্রদ্ধা, ধৈর্য ও বোঝাপড়া বজায় রাখার চেষ্টা করা।
      • পরামর্শ: পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ বা আধ্যাত্মিক গুরুদের পরামর্শ নেওয়া।
    5. আধুনিক যুগে জ্যোতিষের ভূমিকা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত?

      • জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগের যুক্তিসঙ্গততা নিয়ে বিতর্ক চিরন্তন। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে এর কোনও প্রমাণিত ভিত্তি নেই। এটি একটি বিশ্বাস-ভিত্তিক প্রথা। তবে, এর সাংস্কৃতিক, মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক গুরুত্ব অপরিসীম। এটি অনিশ্চয়তায় নিশ্চয়তার ভরসা দেয়, পারিবারিক ঐতিহ্য রক্ষা করে এবং কখনও কখনও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করে। যুক্তিসঙ্গত দৃষ্টিভঙ্গি হল জ্যোতিষকে একটি ঐতিহ্য বা সম্ভাবনার সূচক হিসেবে দেখা, ভাগ্যের নির্ণায়ক হিসেবে নয়। ব্যক্তির যুক্তি, বুদ্ধি, আবেগ এবং বাস্তব পরিস্থিতির মূল্যায়নই চূড়ান্ত হওয়া উচিত।
    6. অনলাইনে জ্যোতিষ রিপোর্ট কতটা নির্ভরযোগ্য?
      • বর্তমানে অসংখ্য ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ বা গণেশ জ্যোতিষ রিপোর্ট দাবি করে। এগুলোর নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। বেশিরভাগই অটোমেটেড সফটওয়্যার দ্বারা তৈরি, যা জটিল জন্মছকের সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ (যেমন গ্রহের প্রকৃত বল, দশা-অন্তর্দশার গভীর প্রভাব, যুক্তি-দৃষ্টির নান্দনিকতা) করতে পারে না। ভুল জন্মতথ্য দিলেও রিপোর্ট তৈরি হয়ে যায়। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের জন্য অভিজ্ঞ, যোগ্য ও নৈতিকতাবোধসম্পন্ন ব্যক্তিগত জ্যোতিষীর পরামর্শ নেওয়াই সর্বোত্তম। অনলাইন রিপোর্ট শুধুমাত্র প্রাথমিক ধারণার জন্য ব্যবহার করা উচিত।

    

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    ‘বন্ধন ‘বিয়ের bengali wedding astrology gun milan kundali matching manglik dosha marriage astrology shubho muhurta vivah yog অষ্টকুট মিলন আকাশে আপনার এবং বিয়ে কি কুজ দোষ খুঁজে গণনা গণেশ জ্যোতিষ গুণ মিলন গোচর জীবন জীবনের জ্যোতিষ জ্যোতিষ পরামর্শ জ্যোতিষ মতে বিয়ের যোগ দশা অন্তর্দশা দোশ নির্বাচন পরামর্শ পাওয়া’র বাংলাদেশে জ্যোতিষ বিবাহ যোগ বিবাহের শুভ মুহূর্ত বিয়ের তারিখ বিয়ের শুভ সময় বিশ্লেষণ বৈদিক জ্যোতিষ ব্যবস্থা মতে মাঙ্গলিক দোষ মুহূর্ত যোগ রহস্য রাশি লাইফ লাইফস্টাইল লেখা শাস্ত্র শুভ, সময়’: হ্যাকস
    Related Posts
    মেয়েদের আগ্রহ

    পুরুষের এই গুণটি মেয়েদেরকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করে

    July 31, 2025
    Taka

    অলস বসে থেকেও যেভাবে আয় করতে পারেন

    July 31, 2025
    Girls

    নারীর সহবাসের ইচ্ছা সপ্তাহের কোনদিন সবচেয়ে বেশি তীব্রতর হয়, জেনে নিন

    July 31, 2025
    সর্বশেষ খবর
    ruchi

    আবারও আলোচনা প্রধানমন্ত্রীর ছবি গলায় ঝুলিয়ে লাল গালিচায় হাটা রুচি

    Gamescom 2025

    Ukrainian Game Devs Defy Odds: National Pavilion Returns to Gamescom 2025

    Feral Child Summer Revival: Gen X Nostalgia or Modern Trend?

    Feral Child Summer Revival: Gen X Nostalgia or Modern Trend?

    WBJEE 2025 Results Release Nears: Access Details
(Rationale: 58 characters. Front-loads high-search keyword "WBJEE 2025 Results" for SEO. "Release Nears" conveys urgency/timeliness for Discover engagement. "Access Details" replaces promotional language with neutral, actionable phrasing. Avoids second-person, sensationalism, and AI markers while maintaining factual accuracy.)

    WBJEE 2025 Result Released: Check Scores, Rank, and Counseling Steps Now

    Galaxy S24 Ultra

    Top 5 Samsung Smartphone Deals to Grab During Amazon’s Great Indian Festival 2025

    SKIMS face wrap

    SKIMS Face Wrap Ignites Debate: Jawline ‘Snatching’ or Dystopian Symbol?

    smart TVs under Rs 5000

    Top Smart TVs Under Rs 5000: Amazon Great Freedom Sale 2025 Bargains Unveiled

    Blue Lock Chapter 314

    Blue Lock Chapter 314 Release: Global Timings, Major Spoilers, and Where to Read Online

    frozen embryo birth

    ৩০ বছর ধরে সংরক্ষিত ভ্রূণ থেকে শিশুর জন্ম

    vivo y400 pro 5g

    Vivo Y400 Emerges as New Budget King with Massive 6000mAh Battery and Snapdragon 685

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.