জুমবাংলা ডেস্ক : আগাম জাতের কপি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন জয়পুরহাট জেলার কৃষক। ফলন বেশি হওয়ায় বিশেষ পদ্ধতিতে রোপণ করা আগাম জাতের এ বাঁধাকপি চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। অল্প খরচে বেশি লাভের আশা করছেন চাষীরা।
জেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, আমন ধান কেটে আগাম জাতের বাঁধাকপির চারা রোপণ শুরু করেছেন কৃষক। আবহাওয়া অনুকূল ও কপিতে কোনো রোগবালাই না হলে এবার ভালো ফলন ও লাভের প্রত্যাশা করছেন চাষীরা। বাঁধাকপি চাষে প্রতি বিঘায় মোট খরচ প্রায় ২০-২৫ হাজার টাকা। ভালো দাম পেলে খেত থেকে পাইকারি দরে বিঘায় ১ লাখ টাকার কপি বিক্রির আশা চাষীদের।
সরেজমিনে পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা ইউনিয়নের খোর্দ্দা গ্রামের ছোট যমুনা নদীর তীরবর্তী গঙ্গাপ্রসাদ মাঠে বাঁধাকপি চাষী হাজেরা বিবির সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি জানান, এ বছর এক বিঘা জমিতে বাঁধাকপি লাগিয়েছি। কোনো দুর্যোগ না হলে কপি বিক্রি করে সেখান থেকে কমপক্ষে ১ লাখ টাকা লাভ থাকবে।
উপজেলার কুটাহারা গ্রামের সাইদার রহমান জানান, হাইব্রিড ও দেশী দুই জাতের বাঁধা ও ফুলকপি আবাদ হয়। আমরা প্রতি বিঘায় ৪ হাজার-৪ হাজার ৫০০ পিস কপির চারা লাগাই। সব চারা থেকে কপি উৎপাদন হওয়ার আশা করছি।
সদর উপজেলার পুরানাপৈল এলাকার প্রদীপ চন্দ্র একই মাঠে ১০ কাঠা জমিতে আগাম বাঁধা-ফুলকপি চাষ করেছেন। তিনি জানান, ১০ কাঠা জমিতে ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে ৩০-৩৫ হাজার টাকা লাভ থাকবে।
পুরানাপৈল গ্রামের সবজিচাষীরা জানান, কৃষি বিভাগ দেখভাল করছে, তাদের পরামর্শে সময়মতো সার, ওষুধ, সেচ দিয়ে বাঁধাকপি চাষ করা হচ্ছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে প্রতি বিঘার ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার কপি বিক্রি হবে। জমি থেকে আগাম কপি সংগ্রহ করা সম্ভব হলে দাম ভালো পাওয়া যায়।
পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. লুত্ফর রহমান জানান, বিশেষ করে আগাম বাঁধা-ফুলকপি চাষে লাভ ভালো হওয়ায় কপি চাষে ঝুঁকে পড়েন কৃষক। গত বছর তারা প্রতি বিঘায় বাঁধা-ফুলকপি চাষ করে ৭০-৮০ হাজার টাকা লাভ পেয়েছে। লাভের আশায় এবার কৃষক এ আগাম কপি চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, জেলায় এবার মোট ১১০ হেক্টর জমিতে বাঁধা ও ফুলকপি চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৫০ হেক্টর, পাঁচবিবি উপজেলায় ২৫, আক্কেলপুর উপজেলায় ১০, কালাই উপজেলায় ৮ এবং ক্ষেতলাল উপজেলায় ২ হেক্টর জমিতে বাঁধা ও ফুলকপি চাষ হয়েছে।
তিনি আরো জানান, আমরা মাঠ পর্যায়ে চাষীদের বাঁধা-ফুলকপির ভালো ফলনের জন্য বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে আসছি। বিশেষ করে কোন ধরনের পরিচর্যা নিতে হবে, কখন সেচ, সার, ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে তা সার্বক্ষণিক মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন পরামর্শ পেয়ে কৃষক খুশি। আগাম জাতের কারণে পরিচর্যার বিষয়ে কিছু পার্থক্য আছে। সেসব বিষয় আমরা কৃষককে অবহিত করছি এবং সবসময় তাদের সঙ্গে মাঠে আছি। যে খেতের ফসল ভালো হয় সে খেতকে আমরা প্রদর্শনী খেত হিসেবে সাইনবোর্ড লাগিয়ে চিহ্নিত করি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।