আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনসহ এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোয় সুপেয় পানি রফতানি করতে প্রস্তুত কিরগিজস্তান। চলতি সপ্তাহে চীন সফরকালে এ কথা জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আকিলবেব ঝাপারভ।
রাশিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম আরটি জানিয়েছে, সম্প্রতি কিংদাও লাওশান মিনারেল ওয়াটার কোম্পানির চেয়ারম্যান ওয়াং দা এর সঙ্গে বৈঠককালে কিরগিজস্তানের প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। এসময় দেশের পানি সম্পদের অপার সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
আকিলবেব ঝাপারভ বলেন, আমরা হিমবাহের পানি চীন, ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলোয় রফতানি করতে প্রস্তুত। তাছাড়া লাওশানের মতো কোম্পানিগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে আমরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হতে পারব।
চীনের অন্যতম পানীয় প্রস্তুতকারক ও পরিবেশকের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে লাওশান। এটি বোতলজাত পানি, ব্যারেলযুক্ত পানি এবং কোমল পানীয় উৎপাদন করে থাকে।
বৈঠকে কোম্পানিটির চেয়ারম্যান ওয়াং দা শুরুর দিকে কিরগিজস্তান থেকে চীনে পানি আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে তিনি ইউরোপের বাজারেও পানি রফতানি করতে চান।
এসময় উভয়পক্ষ এই বিষয়টি নিয়ে আরও বিশদ আলোচনা করতে এবং একটি কর্ম পরিকল্পনার খসড়া তৈরির জন্য আরও বৈঠকে বসতেও রাজি হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই পানি সংকটে ভুগছে চীন। আর্থ.ওআরজি এর মতে, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ মানুষই চীনে বসবাস করেন। তবে এর মাত্র ৬ শতাংশ মানুষ সুপেয় পানি পানের সুযোগ পান।
এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন ও শিল্প দূষণও চীনের পানি সরবরাহের ওপর প্রভাব ফেলছে। চীনা সরকারের তথ্য অনুসারে, ২০০০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে দেশটির মোট পানি ব্যবহার ৯ শতাংশ বেড়েছে। বিপরীতে পানি দূষণ বেড়েছে ৫০ শতাংশেরও বেশি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলজুড়ে পানি বণ্টন উন্নত করার লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বেইজিং। পাশাপাশি বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও পুনর্ব্যবহারের জন্য ‘স্পঞ্জ সিটি’র মতো পানি সংরক্ষণ প্রকল্পও নকশা করেছে দেশটি।
অন্যদিকে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির উপগ্রহ চিত্রগুলোর তথ্য অনুসারে, কিরগিজস্তানে ৯ হাজার ৯০০টিরও বেশি হিমবাহ রয়েছে। এছাড়া প্রায় ৬ হাজার ৬৮০ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে তুষারপাত হয়ে থাকে। হিমবাহগুলো দেশের ভূখণ্ডের মোট আয়তনের প্রায় ৩ দশমিক ৩ শতাংশ জুড়ে রয়েছে। যেখানে আনুমানিক প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ঘনমিটার পানি রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
তবে তার মানে এই নয় যে দেশটিতে কোনো পানি সংকট নেই। দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে, কিরগিজস্তানে প্রায়শই অপর্যাপ্ত পানি বণ্টন এবং জলাশয় ও কুয়ার মতো অবকাঠামোর অভাবে সুপেয় পানি সংকট দেখা দেয়। গত মাসেই রাজধানীর বিশকেকের বেশি কয়েকটি এলাকায় পানি রেশনিং করতে হয়েছিল সরকারকে।
তবে এই সব সমস্যা বসন্তকালে তুলনামূলক শীতল আবহাওয়ার কারণে হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার। কারণ ঠান্ডা তাপমাত্রার কারণে হিমবাহগুলো সময়মতো গলতে পারেনি এবং ওর্টো-অ্যালিশ পানির কূপ, যেটি থেকে শহরে পানি সরবরাহ করা হয়ে থাকে, সেটির পানির স্তর অত্যন্ত নিম্ন স্তরে নেমে গিয়েছিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।