আন্তর্জাতিক ডেস্ক :কাজখস্তানের রাজধানী আস্তানায় ‘সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)’-এর শীর্ষ সম্মেলনের আসর বসেছিল বৃহস্পতিবার। তার আগেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন প্রতিনিধি দেশগুলোর প্রধান এবং প্রতিনিধিরা। পাকিস্তান এবং রাশিয়াও সেই সম্মেলনে যোগ দিয়েছিল। দুই দেশের প্রধানই এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে যান। একান্ত সাক্ষাৎকারেও বসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
সেখানে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে দুই নেতার মধ্যে আলাপ হয়। আর সেই বার্তালাপ চলাকালীনই নাকি পাকিস্তানের তরফে এমন বাণিজ্যিক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা শুনে হেসেই খুন রাশিয়া। এ নিয়ে বিভিন্ন গুঞ্জনও উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়ে বলা হয়েছেঃ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে নাকি পাকিস্তানের সঙ্গে বিনিময় প্রথার প্রস্তাব দিয়ে এসেছেন শাহবাজ। পাশাপাশি, পঞ্চাশ এবং সত্তরের দশকে কীভাবে দুই দেশের মধ্যে বিনিময় প্রথায় ব্যবসা-বাণিজ্য হত, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন। রাশিয়ার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এমনটা উঠে এসেছে।
আর তারপর থেকেই আবার প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে পাকিস্তানের ‘হাঁড়ির হাল’ নিয়ে।
উল্লেখ্য, রাশিয়া এখনও পর্যন্ত পাকিস্তানে যে পরিমাণ পণ্য রফতানি করেছে, তার বাজারমূল্য ১০০ কোটি ডলার। দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে এই অঙ্ককে আহামরি বলা চলে না। অথচ সেই টাকা মেটাতে গিয়েও প্রাচীন বিনিময় প্রথার দ্বারস্থ হতে হচ্ছে পাকিস্তানকে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বিগত প্রায় দুই বছর ধরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক হাল বেহাল। তাই নিজেদের ‘দারিদ্র’ ঢাকতেই রাশিয়াকে এমন প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান।
দীর্ঘ সময় ধরে অর্থনৈতিকভাবে জর্জরিত পাকিস্তান। ইসলামাবাদের মাথায় চেপেছে ঋণের পাহাড়প্রমাণ বোঝা। যার প্রভাব গিয়ে পড়েছে দেশের বাজারেও। পাকিস্তানে জিনিসপত্রের মূল্য মাঝেমধ্যেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বিভিন্ন সমীক্ষার হিসাব বলছে, ২০১১ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে পাকিস্তানের মাথাপিছু ঋণ ৩৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ে পাকিস্তানের মাথাপিছু জিডিপি হ্রাস পেয়েছে ৬ শতাংশ। ঋণ এবং আয় বৃদ্ধির হারের মধ্যে বৈষম্যের কারণেও পাকিস্তানের অর্থনীতির হাল খারাপ হয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১১ সালে পাকিস্তানে একজন শিশু মাথায় ৭০ হাজার পাকিস্তানি মুদ্রার ঋণ নিয়ে জন্ম নিত। ২০২৩ সালে সেই পরিমাণ ০৩ লাখেরও বেশি। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১১ সাল থেকে, পাকিস্তানের বাহ্যিক ঋণ প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অভ্যন্তরীণ ঋণ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ছয় গুণ। পাকিস্তানে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভও তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পড়ে রয়েছে যৎসামান্য বিদেশি মুদ্রা। এই পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা দিয়ে ঠিকমতো আমদানি করা সম্ভব নয় বলেও সূত্রের খবর। বিদেশি মুদ্রার খরচে লাগাম টানতে পাকিস্তান তাই আমদানি প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। তবে খনিজ তেলের আমদানি বজায় রেখেছে রাশিয়া থেকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।