জুমবাংলা ডেস্ক : চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা রাতের বেলায় শত শত বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালিয়ে চাষ হচ্ছে ড্রাগন ফল। শীতকালে রাতের বেলা দিনের পরিবেশ সৃষ্টি করে ড্রাগন চাষের এমনই উদ্যোগ নিয়ে ভালো ফলন পেয়েছেন উপজেলার সাদুল্লাপুর এলাকায় সিকোটেক্স এ্যাগ্রো লিমিটেড এর পরিচালক নাছির উদ্দীন সরকার। তিনি তার গ্রামে ৩০ একর জমিতে এ পদ্ধতিতে ড্রাগন চাষ করেছেন। তার সফলতা দেখে এখন অনেকেই এ পদ্ধতিতে ড্রাগন ফল চাষ করতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাতে যখন শত শত বৈদ্যুতিক বাতি একসঙ্গে জ্বলে উঠে, সেই দৃশ্য দেখতে অনেকেই ছুটে আসেন ড্রাগন বাগানে।
জানা যায়, দিনের দৈর্ঘ্য কমে গেলে শীতকালে ড্রাগনের ফুল ধরে না। মার্চ মাসের শেষে ফুল ধরে। তাপমাত্রা বাড়লে ফল বড় হয়। জুন মাস থেকে বাজারে ড্রাগন ফল উঠতে শুরু করে। আর নভেম্বর মাসের শেষ পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। কিন্তু শীতকালে ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ফল ধরে না।
সিকোটেক্স এ্যাগ্রো লিমিটেড এর পরিচালক নাছির উদ্দীন সরকার বলেন, আমি গত ৩ বছর আগে নাটোর থেকে ৬০টি ড্রাগনের চারা এনেছিলাম শখের বসে, দেখলাম এটাতে ভালো ফল হয়। পরবর্তীতে ইউটিউব ঘেটে টাঙ্গাইল গিয়ে অনেক বড় বাগান দেখে আমি আরও উদ্বুদ্ধ হলাম। সেখান থেকে আরও গাছের চারা সংগ্রহ করে এবং কিভাবে গাছ লাগায় সেগুলো দেখে আমি আমার নিজ জমিতে ২০২২ সালে জমিতে ড্রাগন বাগান তৈরি করি।
তিনি আরও বলেন, ২০২২ ও ২০২৩ সাল পর্যন্ত সাধারণ পদ্ধতিতে চাষ করেছি। নওগাঁর আমার এক বন্ধু শীতকালে ড্রাগন ফল চাষের প্রযুক্তি সংগ্রহ করে দেন আমাকে। সেপ্টেম্বর মাসে ড্রাগন ক্ষেতে লাইট বসানো শুরু করি। আপাতত চিন থেকে আনা ২ হাজার লাইট ক্ষেতে সেট করেছি। প্রতিদিন সন্ধ্যায় ৩ ঘণ্টা ও সূর্যোদয়ের আগে আরও ৩ ঘণ্টা লাইটগুলো জ্বালানো হয়। ক্ষেতে দিনের আলোর মতো হয়ে যায়। লাইটিংয়ের ফলে রাতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ও দিনের দৈর্ঘ্য বাড়ে। এতে বাগানে বেশি পরিমাণ ফুল ও ফল ধরছে। বর্তমানে বাগান ফুল-ফলে ভরে গেছে। ফল উঠছে।
তিনি জানান, নতুন পদ্ধতিতে আগের চেয়ে ৬ থেকে ৭ টন বেশি ফলন হবে। প্রতিটি খুঁটিতে ৭ থেকে ৮ কেজি ফলন বৃদ্ধি পাবে। এতে করে তিনগুণ ফলন বেশি বৃদ্ধি পাবে। ফলের মানও ভালো হচ্ছে। গ্রীষ্ম মৌসুমে ফলের দাম কম থাকে। গত মৌসুমে প্রতি কেজি ড্রাগন ৮০-২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। বর্তমানে তার বাগানের ড্রাগন ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফয়সাল মোহাম্মদ আলী জানান, কৃত্রিম আলো ব্যবহার করে দিনের দৈর্ঘ্য বাড়ানোর হয়, শীতকালে যখন দিনের দৈর্ঘ্য কমে আসে তখনই পদ্ধতিটা ব্যবহার করে। এই পদ্ধতিটা এখন বাংলাদেশের অনেক জায়গায় ব্যবহার করছে।
তিনি আরও বলেন, লাইট ব্যবহার করে উৎপাদন যেমন বাড়বে তেমনি বাইরে থেকে আমদানি কমানো সম্ভব হবে। মতলব উত্তরে সিকোটেক্স এ্যাগ্রো লিমিটেড ফার্মে কৃত্রিম আলো ব্যবহার করে ড্রাগন চাষ শুরু করেছেন। আমরা আশাবাদী, এ পদ্ধতি ব্যবহার করে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।