লাইফস্টাইল ডেস্ক : লিভার সিরোসিস যকৃতের জটিল একটি রোগ। যার নিরাময় অসম্ভব। একমাত্র সমাধান লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট বা যকৃৎ প্রতিস্থাপণ, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল চিকিৎসা। তবে শুধু টাকা থাকলেই হবে না, প্রয়োজন যকৃৎ দান করার মতো দাতাও। তাই চিকিৎসার চেয়ে লিভার সিরোসিস প্রতিরোধ করাটাই উত্তম।
বিভিন্ন গবেষণা বলছে, বাংলাদেশে আনুমানিক ৮ থেকে ১০ লাখ মানুষ লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। একমাত্র সচেতনতাই পারে এই রোগটি প্রতিরোধ করতে। নানা কারণে লিভার সিরোসিস হতে পারে। এর মধ্যে জন্ডিসে ভুগে থাকলে, অতিরিক্ত মদ্যপান করলে, ডায়াবেটিস থাকলে, স্থূলতার সমস্যা আছে এমন ব্যক্তিদের লিভারের কার্যক্ষমতা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে ‘লিভার সিরোসিস’ হতে পারে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে লিভার সিরোসিস ধরতেই অনেকটা দেরি হয়ে যায়। ফলে সমাধানের পথ থাকে না তখন আর। এই রোগ শরীরে থাবা বসানোর শুরুতেই কিছু কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। জেনে নিন সেগুলো কী কী।
জন্ডিস: জন্ডিস হলে ত্বক ও চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যায়। লিভার থেকে নিঃসৃত হওয়া পিত্ত বিলিরুবিনের পরিমাণ বেশি হয় গেলে জন্ডিস হয়। লিভারে ক্ষত তৈরি হলেও লিভার শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না। তখন এই অসুখ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
ওজন হ্রাস: খাওদাওয়া নিয়ন্ত্রণ না করে কিংবা কোনরকম শরীরচর্চা ছাড়াই ওজন কমে গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিনা কারণে ওজন কমে যাওয়া শরীরের জন্য একেবারেই ভালো নয়। এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
পা ও গোড়ালিতে জ্বালা: পা ও গোড়ালিতে মাঝেইমাঝেই জ্বালা ভাব হলে আগে থেকে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। শরীরে অ্যালবুমিন প্রোটিনের উৎপাদন কমে গেলে এই রকম সমস্যা হয়। এই প্রোটিন রক্তনালী থেকে অন্যান্য কোষে রক্তের ছড়িয়ে পড়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। রক্তে এই প্রোটিন তরলের পরিমাণ কমে গেলে তা রক্তনালীতে জমা হতে শুরু হয়। গোড়ালিতে বা পায়ের পাতায় হালকা জ্বালা অনুভব হলে আগে থেকে সচেতনত হওয়া প্রয়োজন।
পেট ফাঁপা: অনেক দিন ধরে লিভারের কোনো সমস্যা থাকলে তলপেটে তরল জমা হয়ে পেট ফাঁপার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেকেই এই পেট ফাঁপার সমস্যায় মাঝেমাঝেই ভুগে থাকেন। সেই সময় পেটও ফুলে থাকে। কয়েক দিন ধরে পর পর এই রকম সমস্যা দেখা দিলে সতর্ক হোন।
কালশিটে: শরীরে ঘন ঘন কালশিটে দাগ হলে আগে থেকে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। লিভার ভিটামিন কে এর সাহায্যে এক ধরনের প্রোটিন উৎপাদন করে যা রক্তক্ষয় বন্ধ করে যেকোনো ক্ষত তাড়াতাড়ি ঠিক করতে সাহায্য করে। লিভার দূষিত রক্তের কোষগুলোকে বৃদ্ধি পেতে দেয় না। ফলে লিভার যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে তখনই শরীরে এই ধরণের কালশিটে দেখা দিতে পারে বা খুব সহজেই অনেকটা রক্তক্ষয় হয়ে যেতে পারে। যদিও এই উপসর্গ নানা রোগের কারণে হতে পারে। তাই এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।