বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : চারশটিরও বেশি গেইম, ফটো এডিটর ও অন্যান্য সুবিধার ছদ্মবেশে থাকা ক্ষতিকারক অ্যাপ চিহ্নিত করার কথা বলেছে সামাজিক মাধ্যম কোম্পানিটি। সামাজিক মাধ্যমের লগইন তথ্য চুরির লক্ষ্যে তৈরি শত শত অ্যাপ নিয়ে গুগল-অ্যাপলকে সতর্কবার্তা দিয়েছে মেটা। উভয় প্রযুক্তি জায়ান্টের অ্যাপ স্টোরেই রয়েছে এমন অ্যাপ।
চারশটিরও বেশি গেইম, ফটো এডিটর ও অন্যান্য সুবিধার ছদ্মবেশে থাকা ক্ষতিকারক অ্যাপ চিহ্নিত করার কথা বলেছে সামাজিক মাধ্যম কোম্পানিটি।
যেসব ব্যবহারকারী এইসব অ্যাপ ডাউনলোড ও শেয়ার করে নিজের অজান্তেই অ্যাকাউন্ট হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন, তাদেরকেও বিষয়টি জানানোর কথা এক পোস্টে উল্লেখ করেছে মেটা।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্ভাব্য আক্রান্ত ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ।
এই অ্যাপগুলো ব্যবহারকারীদের আকৃষ্ট করে ভুয়া রিভিউ এবং নানা ধরনের কার্যকারিতার প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে। এই দুটো কৌশলই বহুল ব্যবহৃত হয় প্রতারনামূলক নানারকম অ্যাপে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অ্যাপগুলো ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়।
প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কয়েকটি অ্যাপে দেখা গেছে খোলার পর কোনো কিছু করার আগেই ফেইসবুকের মাধ্যমে লগইন করতে বলে ব্যবহারকারীকে। এ ফাঁদে পা দিলেই তার লগইন বিষয়ক তথ্য চুরি করতে পারে অ্যাপটির নির্মাতারা।
মেটা বলছে, গুগল ও অ্যাপলকে অভিযোগ করে অ্যাপগুলো নামিয়ে ফেলেছেন তারা। এর পরও, এগুলোর বিভিন্ন অ্যাপ স্টোরে এতোদিন থাকা নিয়ে প্রতিবেদনে প্রশ্ন তুলেছে ভার্জ।
“বিশেষ করে অ্যাপলের বেলায় এই প্রশ্ন বেশি করে ওঠা উচিৎ।” – বলেছে ভার্জ। ”বেশ কয়েক বছর ধরেই অ্যাপল ডিভাইসে ‘সাইডলোডিং’য়ের বিরুদ্ধে যুক্তি দিয়ে আসছিল অ্যাপল। অ্যাপ স্টোর বাইরের অ্যাপ ইনস্টলের সুযোগকে অ্যাপল বরাবরই ‘সাইবার অপরাধির ভালো বন্ধু’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে আসছে।”
অ্যাপল আরও বলছে, অ্যাপ রিভিউ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অ্যাপ স্টোরে কোনো অ্যাপ চালু করার আগে সেটি তারা পরীক্ষা করে দেখেন। এভাবে ‘লাখ লাখ অ্যাপের জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য ইকোসিস্টেম’ তৈরির কথাও বড়াই করে বলে অ্যাপল।
এর পরও, নিজস্ব প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন ‘স্ক্যাম’ অ্যাপের লাগাম টেনে ধরতে পারেনি কোম্পানিটি, যেখানে কয়েকটি অ্যাপ সম্ভবত হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ ডলার।
তবে, ফেইসবুকের অভিযোগ বলছে, গুগল প্লে স্টোরের পরিস্থিতি বেশি খারাপ। তালিকায় থাকা চারশ দুইটি ক্ষতিকারক অ্যাপের মধ্যে তিনশ ৫৫টি অ্যান্ড্রয়েড ও ৪৭টি আইওএস অ্যাপ।
অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপগুলোতে বিভিন্ন ধরনের শ্রেণি রয়েছে। এর মধ্যে আছে বিভিন্ন গেইমস, ভিপিএন, ফটো এডিটর ও রাশিফল বিষয়ক অ্যাপ।
অন্যদিকে আইফোনের অ্যাপগুলো ছিল ব্যবসায়িক পেইজ বা বিজ্ঞাপন ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত। তার মানে এই নয় যে, এগুলো পুরোপুরি সন্দেহজনক ছিল। এ ছাড়া, ‘ভেরি বিজনেস ম্যানেজার’ নামে পরিচিত অ্যাপ অ্যাপলের অ্যাপ রিভিউ প্রক্রিয়া কীভাবে ফাঁকি দিল, সেটি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে ভার্জ।
এই প্রসঙ্গে ভার্জ অ্যাপল ও গুগলের মন্তব্য জানতে চাইলে কারও কাছ থেকেই তাৎক্ষণিক কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
ব্যবহারকারীর লগইন বিষয়ক তথ্য চুরি করতে চাওয়া বিভিন্ন অ্যাপের ক্ষেত্রে কয়েকটি সতর্কতার লক্ষণ সম্পর্কে পোস্টে বিস্তারিত লিখেছে মেটা।
কোনো অ্যাপ যদি নিজস্ব দাবি অনুযায়ী কাজ না করে, কেবল লগইন করেই বসে থাকে বা ব্যাপক পরিমাণ নেতিবাচক রিভিউ থাকে, তবে এগুলো এড়িয়ে অন্যান্য তুলনামূলক বেশি গ্রহনযোগ্য অ্যাপ খোঁজার পরামর্শ দিয়েছে ভার্জ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।