জুমবাংলা ডেস্ক : তৃতীয়বারের মতো গত ১৩ জুন ২০২২ চাঁপাইনবাবগঞ্জ-ঢাকা রুটে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হওয়া আম, কাঁচামাল ও পার্সেলবাহী ট্রেন সার্ভিস ‘ম্যাংগো স্পেশাল’ বন্ধ হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। মাত্র ১১ দিন চলার পর আলোচিত ট্রেনটি বন্ধ করে দিল কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) শেষবারের মতো চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আম নিয়ে ঢাকা যায় ট্রেনটি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অব্যাহত বড় ধরনের লোকসানের কারণেই ট্রেনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাঁচটি ৪৩ টনের মালবাহী ওয়াগনের ট্রেনটির (২১৫ টন ক্যাপাসিটিসম্পন্ন) পরিচালন ব্যয় (অপারেটিং কস্ট) ট্রেনটির আয়ের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে করোনাকালে ২০২০ সালে ট্রেনটি ৫ জুন থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত চলাচল করে। পরের বার ২০২১ সালের আম মৌসুমে ২৭ মে থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত ট্রেনটি চলাচল করে। প্রতিবারই ভতুর্কি দিয়ে তৃণমূল চাষি, ব্যবসায়ী, বাগান মালিক ও উদ্যোক্তাদের জন্যই ট্রেনটি চালানো হয়। কিন্তু এই উদ্যোগ ব্যবসাসফল হয়নি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলা থেকে যাত্রা শুরু করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরসহ রাজশাহী হয়ে ট্রেনটি ঢাকার কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত ১৬টি স্টেশন থেকে মাল পরিবহন করত। চাঁপাইনবাবগঞ্জের যেকোনো স্টেশন থেকে ঢাকা পর্যন্ত তিনটি মৌসুমেই কেজিপ্রতি ভাড়া নির্ধারণ করা হয় এক টাকা ৩১ পয়সা। রাজশাহী থেকে ঢাকা পর্যন্ত কেজিপ্রতি ভাড়া নির্ধারণ করা হয় এক টাকা ১৮ পয়সা। এর সাথে রয়েছে রেলের নিজস্ব কুলির জন্য পৃথক খরচ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টেশন সহকারী মাস্টার ওবাইদুল্লাহ বলেন, চলতি মৌসুমের ১১ দিনে ট্রেনটি ঢাকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে দুই হাজার ২৫৭টি ক্যারেট (আমের ঝুড়ি) ও প্যাকেটে ৪৫.৬২৪ টন (৪৫ হাজার ৬২৪ কেজি) আম পরিবহন করে। এতে আয় হয় ৬১ হাজার ৪৬৯ টাকা। গত ২০২১ সালে এই ট্রেনে আম পরিবহন হয়েছিল ২৩৬.৯৭৩ টন। এর আগে গত ২০২০ সালে ট্রেন প্রথম চালুর বছরে ১৬৭.০৮২ টন আম পরিবহন করে।
ট্রেনের প্রারম্ভিক রহনপুর স্টেশন মাস্টার মির্জা কামরুল হক বলেন, চলতি মৌসুমে ট্রেনটি স্টেশন থেকে ২৯.৫৪৩ টন আম পরিবহন করে। জেলার বৃহত্তম সদর উপজেলার আমনুরা জংশন মাস্টার হাসিবুল হাসান বলেন, ট্রেনটি এ বছর ১৮২টি ক্যারেটে ৩.৭৭৪ টন আম পরিবহন করে আয় করে চার হাজার ৬৫৬ টাকা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এবার আমের রাজ্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন বিপর্যয় ঘটেছে। অন্যদিকে ট্রেনটি মৌসুমের অন্তত তিন সপ্তাহ দেরি করে চালু করা হয়েছিল। তবে রাজশাহী অঞ্চলে আমের ফলন তুলনামূলক ভালো হলেও সেখান থেকে ট্রেনের জন্য তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। টেনটির অব্যাহত শিডিউল বিপর্যয়ও কাঁচামাল পরিবহনের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের নিরুৎসাহিত করেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নাগরিক কমিটি সদস্যসচিব মনিরুজ্জামান ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম বলেন, আমের ট্রেন ছাড়াও করোনার কারণে ২৭ মাস আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া জেলা থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচলকারী পাঁচ জোড়া ট্রেনসহ (জেলা থেকে ১০ জোড়া ট্রেন চলত) সকল ট্রেন মালবাহী ওয়াগনসহ পুনরায় দ্রুত চালু করা হোক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।