জুমবাংলা ডেস্ক : বউভাতের দাওয়াতে এসে মোটরসাইকেল গ্যারেজের মালিক মানিক মিয়া বলেন, ‘খোরশেদ মোটর মেকানিক হিসেবে অনেক ভালো কাজ করে। তার বিয়ের আয়োজন ছিলো চোখে পড়ার মতো। আমরা দাওয়াতে এসে খুবই আনন্দিত।’
শেরপুর সদরের ভাতশালা ইউনিয়নের মধ্য বয়ড়া গ্রামের মোটর মেকানিক খোরশেদ আলম। শহরের নামী কয়েকজন মেকানিকের অন্যতম তিনি। আর দশটা সুস্থ মানুষের মতোই করেন জীবনযাপন। তার আয়ে চলে পরিবার। এরপরও বিয়ের জন্য পাচ্ছিলেন না পাত্রী।
প্রতিবারই খোরশেদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তার উচ্চতা। তার জন্য একের পর এক পাত্রী দেখে প্রত্যাখ্যাত হন পরিবারের সদস্য ও ঘটক। অবশেষে বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজে পান এ মেকানিক।
শেরপুর শহরে শুক্রবার বেশ আয়োজন করে বিয়ে হয়েছে খোরশেদের। এতে একদিকে যেমন স্বস্তি এসেছে তার জীবনে, তেমনই আনন্দের অংশীদার হয়েছেন স্থানীয় অনেকে।
বিয়ের পরের দিন শনিবার মধ্য বয়ড়া গ্রামে খোরশেদের বাড়িতে আয়োজন করা হয় বউভাতের। এতে আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে আসেন অনেকে। তার চেয়েও বেশি মানুষ আসেন বর ও কনেকে দেখতে।
মোহন মিয়া ও খোদেজা বেগম দম্পতির চার সন্তানের একজন খোরশেদ আলম। দারিদ্র্যের কারণে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে শিক্ষাজীবন আর টেনে নিতে পারেননি তিনি।
খোরশেদ জানান, নানা জায়গায় ঘোরাঘুরি করে কাজ খুঁজলেও কেউ নিয়োগ দেয়নি তাকে। অবশেষে ১৪ বছর আগে শহরের তিনআনী বাজারের একটি মোটরসাইকেলের গ্যারেজে শ্রমিক হিসেবে তাকে কাজ দেন আমিনুল ইসলাম নামের এক গ্যারেজ মালিক। এরপর থেকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
এ মেকানিকের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা একের পর এক পাত্রী দেখে ব্যর্থ হচ্ছিলেন। শেষ ভরসা হিসেবে ধরনা দেন ঘটক বুধু মিয়ার কাছে।
এ নিয়ে ঘটক বুধু মিয়া বলেন, ‘আড়াই শ পাত্রী দেখে শেরপুর শহরের দীঘারপাড়ের বাচ্চু মিয়ার মেয়ে বর্ষার সঙ্গে বিয়ে ঠিক করি খোরশেদ আলমের।’
তিনি বলেন, বর্ষার উচ্চতা খোরশেদের চেয়ে বেশি। সে বিয়ে নিয়ে খুশি। দাম্পত্য জীবনে সুখী হতে সবার কাছে দোয়া চেয়েছে বর্ষা।
খোরশেদের দাদি বলেন, ‘আমার নাতি খুব ভালো মানুষ। সে আমাদের পরিবার চালায়। আমি তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া চাই।’
বউভাতের দাওয়াতে এসে মোটরসাইকেল গ্যারেজের মালিক মানিক মিয়া বলেন, ‘খোরশেদ মোটর মেকানিক হিসেবে অনেক ভালো কাজ করে। তার বিয়ের আয়োজন ছিলো চোখে পড়ার মতো। আমরা দাওয়াতে এসে খুবই আনন্দিত।’
অনুষ্ঠানে নবদম্পতিকে দেখতে আসা নাজমুল জানান, এ বিয়ে শেরপুরে ভাইরাল হয়ে গেছে। সবাই দেখতে এসে সেলফি নিচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।