স্পোর্টস ডেস্ক : অবশেষে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে করা সাকিব আল হাসানদের টাইমড আউট বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলল ক্রিকেটের আইনপ্রণেতা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব বা এমসিসি। এবং এমসিসি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, ম্যাথিউসের এমন অদ্ভুতুড়ে আউট ক্রিকেটের নিয়মসিদ্ধ এবং বাংলাদেশের কোনো দোষ নেই।
এমসিসির ৪০.১১ নম্বর ধারায় বলা আছে, ‘কোনো উইকেটের পতন অথবা কোনো ব্যাটার অবসরে গেলে কোনো সুনির্দিষ্ট সময় নির্ধারিত করে দেওয়া না হলে নতুন ব্যাটারকে পরবর্তী ৩ মিনিটের মধ্যে বল মোকাবেলা করতে হবে। যদি তা না হয়, তাহলে টাইমড আউট।
আইসিসি ওয়ানডে ইন্টারন্যাশনাল প্লেয়িং কন্ডিশনসে এই সময়সীমা ৩ মিনিট থেকে কমিয়ে ২ মিনিট করা হয়। সেখানে বলা আছে, ‘ব্যাটার মাঠে থাকুন বা না থাকুন তাকে ২ মিনিটের মধ্যেই বল মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, তা না হলে টাইমড আউট বলে গন্য করা হবে।
সেই নির্ধারিত ২ মিনিটের মধ্যে ম্যাথিউস বল মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। একে তো তিনি ক্রিজে নেমেছেন দেরি করে, তার ওপর হেলমেট পরিবর্তনের জন্য আরও বেশি সময়ক্ষেপণ করছিলেন। এমসিসি জানিয়েছে, ম্যাথিউস যদি তার বিলম্বের ব্যাপারে অবহিত করতেন তাহকে আম্পায়াররা এই বিলম্বকে ব্যাট ব্রেক বা এমন কোনো বিরতি হিসেবে গণ্য করার সুযোগ ছিল।
৩০ গজ বৃত্তের ভেতরে প্রবেশের আগেই ম্যাথিউস দেড় মিনিটের বেশি সময় খরচ করেন। আবার তিনি যখন হেলমেট পরিবর্তনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ততক্ষণে ১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ড অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। সে সময় তিনি এমন কোনো অবস্থা বা পরিস্থিতিতে ছিলেন না যাতে করে বাকি ৬ সেকেন্ডের মধ্যে ব্যাটিং বা বোলিং শুরু করে দেওয়া যায়। ম্যাথিউস অবশ্য ‘২ মিনিট হয়নি’ দাবি করে সাফাই গেয়েই চলেছেন।
ব্যাটে ত্রুটি ধরা পড়ার পর ম্যাথিউস আম্পায়ারদের সাথে যোগাযোগই করেননি। নতুন কোনো জিনিস মাঠের বাইরে থেকে আনতে গেলে খেলোয়াড়রা আম্পায়ারের সবুজ সংকেত নিয়ে থাকেন। তাই এমসিসি স্পষ্টভাবে বলছে, ‘ম্যাথিউসকে সঠিকভাবেই আউট দিয়েছেন আম্পায়াররা। তারা নিয়মের বাইরে কিছুই করেননি।’
ম্যাথিউস-সাকিব বিতর্কের উত্তর খুঁজতে বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর ঘাটতে হয়েছে এমসিসিকে। এর একটি ছিল, টাইমড আউট নিয়ম কি খুব বেশি প্রয়োজন? এর উত্তরে এমসিসি জানিয়েছে, উইকেট পতনের সময় যাতে সময় অপচয় না হয় এ কারণে এই সময়জ্ঞানের বার্তা। একইসাথে ব্যাটিং দলের বিলম্ব প্রতিপক্ষ দল বা অধিনায়কের স্লো ওভার রেটের শাস্তির কারণ হতে পারে।
টাইমড আউট বিবেচনার আগে ইকুইপমেন্ট পরিবর্তনের জন্য কোনো নির্ধারিত সময় হিসেব করা উচিৎ কি না, সেই প্রশ্নের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে- এই আইন আগে কখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রয়োগ করা হয়নি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটা ৬ বার ব্যভার করা হয়েছে। নিয়মের খাতিরেই ব্যাটারকে এক্ষেত্রে টাইমড আউট হতে হয়।
এক্ষেত্রে অনেকে স্পিরিট অব ক্রিকেটের প্রশ্ন তুলে সাকিব-শান্তদের ধুয়ে দিলেও এমসিসি তুলে ধরেছে ইংল্যান্ড-ভারত নারী দলের ম্যাচে চার্লি ডিনকে দীপ্তি শর্মার করা মানকাডের সময়ে দেওয়া বিবৃতি। সেখানে লেখা, ‘ক্রিকেট একটা বিস্তৃত ক্ষেত্র। যে চেতনা নিয়ে এটা খেলা হয়, সেটা আহামরি ভিন্ন কিছু নয়। স্পিরিট অব ক্রিকেটের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে এমসিসি আইনের প্রয়োগ ব্যাখ্যা করে থাকে। পরস্পরের প্রতি সম্মান রেখে বিতর্ক হতেই পারে। কেউ হয়ত বোলারের বাড়তি সুবিধা আদায়ের কথা বলবে কেউ বলবে নন স্ট্রাইকিং ব্যাটার বাড়তি সুবিধা নিচ্ছে।
স্পিরিট অব ক্রিকেট একেকজনের কাছে একেকরকম, এমনকি একেক দেশ বা একেক সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও ভিন্ন হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।