বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : যুগে যুগে পালটেছে যোগাযোগের ধরন। একটা সময় ছিল কবুতরের পায়ে চিঠি বেঁধে পাঠানো হতো বার্তা। মনের সেই ভাব প্রাপক পর্যন্ত পৌঁছাতে চলে যেত দীর্ঘ একটা সময়। এরপর আসে ডাকপিয়নের যুগ, চিঠি পাঠানোর চল। এতেও সেই লম্বা সময়ের অপেক্ষা! তবে বিজ্ঞানের আধুনিকতার ছোঁয়ায় হাতের মুঠোয় চলে এসেছে তথ্য আদান-প্রদানের পদ্ধতি। চোখের পলকেই কথা চলে যায় এই কান থেকে ওই কানে। এক মন থেকে আরেক মনে। এমনকি কিছু না লিখেও শুধু ‘ইমোজি’র (ভাব প্রকাশের প্রতীক) মাধ্যমেও প্রকাশ করা যায় মনের পুরো ভাব।
এই ইমোজির ব্যবহারেও নারী-পুরুষে রয়েছে ভিন্নতা। ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ইমোজি ব্যবহারে একেবারেই বেখেয়ালি পুরুষ। নারীরা ঠিক তার উলটো। অতিমাত্রায় সচেতন। এমন চিত্রই উঠে এসেছে ব্রিটেনের নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের এক সমীক্ষায়। জিইও নিউজ।
ইমোজি হলো অনুভূতি প্রকাশ করার একটি উপায়। এর ব্যাখ্যা ব্যক্তি, লিঙ্গ এবং বয়স ভেদে পরিবর্তিত হয়। বার্তা পাঠানোর সঙ্গে অনেকেই এই ইমোজি জুড়ে দিয়ে আরও গভীরভাবে তথ্যকে ব্যাখ্যা করতে চান। তবে এই ইমোজি পাঠানোর ক্ষেত্রে নারী এবং পুরুষের মনস্তত্ত্ব আলাদা আলাদাভাবে কাজ করে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই একটি গবেষণা হয়েছে। সেখানে ৫২৩ জন প্রাপ্তবয়স্ককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৯% পুরুষ এবং ৫১% নারী ছিলেন। অ্যাপল, উইন্ডোজ, অ্যান্ড্রয়েড এবং ওয়েচ্যাটের ক্যাটালগ থেকে ইমোজিগুলোকে নেওয়া হয়েছিল।
সেখান থেকে অংশগ্রহণকারীদের ছয়টি ভিন্ন আবেগগত অবস্থায় যে কোনো ইমোজি ব্যবহার করে তা দেখাতে বলা হয়েছিল। সমীক্ষায় দেখা গেছে, পুরুষদের তুলনায় নারীরা ইমোজিগুলোকে আলাদাভাবে ব্যাখ্যা করেন এবং বোঝেন। পুরুষদের তুলনায় নারীরা ইমোজিগুলোকে সুখী, বিরক্তিকর, ভীত, দুঃখিত, বিস্মিত এবং রাগান্বিত বিভাগে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে বেশি সফল। তবে বিস্মিত বা বিরক্তিকর ইমোজির ব্যাখ্যায় কোনো লিঙ্গ পার্থক্য পাওয়া যায়নি। কেননা এই ইমোজিগুলো বিষয়গত প্রকৃতির। কেউ কেউ অশ্রুসিক্ত মুখকে দুঃখ হিসাবে ব্যাখ্যা করতে পারে, অন্যদিকে সেই একই ইমোজিকে অন্য কেউ অপরিসীম সুখের ব্যাখ্যা করতে পারে।
নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব সাইকোলজির সহযোগী অধ্যাপক ড. রুথ ফিলিক বলেছেন: ‘আমি সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং আশ্চর্যজনক যেটি পেয়েছি তা হলো যে, লোকেরা কিভাবে এই ইমোজিগুলোকে ব্যাখ্যা করে তার মধ্যে অনেক পৃথক পার্থক্য রয়েছে।’ তার মতে, এ ধরনের বার্তা প্রেরণের ক্ষেত্রে ইমোজি ব্যবহার করার সময় পার্থক্যগুলো মনে রাখা উচিত। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে. ইমোজির অস্পষ্টতা আরও গবেষণার মূল্যবান, ‘বিশেষ করে যখন লিঙ্গ, বয়স বা সংস্কৃতিজুড়ে যোগাযোগ করা হয়।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।