জুমবাংলা ডেস্ক : দীর্ঘ ৩৭ দিন পর নগরবাসীকে স্বস্তি দিতে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়েছে। এতে স্কুল-কলেজ ও অফিসগামী যাত্রীরা ব্যাপক উচ্ছ্বসিত।
রবিবার (২৫ আগস্ট) সকাল ৭টা ১০ মিনিট থেকেই চালু হয় মেট্রোরেল। স্টেশনগুলোতেও দেখা যায়, সেই চিরচেনা রূপ। টিকিট কাউন্টার, মেট্রো স্টেশন ও ট্রেনের ভেতরে মানুষের উপচেপড়া ভিড়।
সরেজমিনে মিরপুর ১১ নম্বর স্টেশনে বেলা ১১টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, সকালের মতো তখনও মানুষের ভিড়। কাউন্টারগুলোতেও টিকিট কাটতে ব্যস্ত যাত্রীরা। স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় শত শত মানুষ। ট্রেনের বেতরেও দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন যাত্রীরা। তবে সবার মধ্যেই খুশির আমেজ। স্বস্তি ফিরেছে তাদের মনে।
দীর্ঘদিন পর মেট্রো চালু হওয়ায় কেমন লাগছে এ বিষয়ে বেসরকারি চাকরিজীবী রাকিবুল ইসলামকে জিজ্ঞেস করলে সময় সংবাদকে তিনি বলেন, শুনেছিলাম মেট্রোরেল ১ বছর পর চলবে। খুবই হতাশ হয়েছিলাম। এখন তো ১ মাস পরেই মেট্রো চালু হয়ে গেল! এখন আর অসহনীয় যানজটে পড়তে হবে না। ভাবতেই ভালো লাগছে। আনন্দ লাগছে।
কথা হয় আরেক যাত্রী রতন দেওয়ানের সঙ্গে। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য ত্রাণ সংগ্রহেন কাজ করছেন। রতন দেওয়ান বলেন, ‘এই কদিন মিরপুর থেকে ভার্সিটি যেতে অনেক সময় লাগতো। জ্যামে বসে থাকতে হতো। এখন মেট্রোরেল চালু হওয়ায় খুব সহজে যেতে পারছি। এটি বন্ধ থাকায় আমরা অনেক ঝামেলায় পড়েছিলাম। এখন আবার চালু হওয়ায় বেশ ভালো লাগছে।’
তবে স্বাভাবিক নিয়মে মেট্রো চলাচল শুরু হলেও মেরামত ও সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা থাকায় আপাতত কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ আছে। এ দুই স্টেশনে মেট্রোরেল থামছে না।
এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, যতদ্রুত সম্ভব মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর -১০ স্টেশন চালু করা হবে। কোনোভাবেই সেটা ১ বছর নয়। মেট্রোরেলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা পুড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে কোটা সংস্কার ঘিরে আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরে পুলিশ বক্সে অগ্নিসংযোগ করা হলে ওই দিন বিকেল ৫টায় মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এর পরদিন ১৯ জুলাই মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা।
নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর ১১ আগস্ট উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ১৭ আগস্ট থেকে মেট্রোরেল চালু হবে। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল স্বাভাবিক নিয়মে চলাচল করবে। তবে মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে আপাতত ট্রেন থামবে না। কারণ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় এ দুটি স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অবশ্য এরপর ১৫ আগস্ট ডিএমটিসিএল সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ১৭ আগস্ট থেকে মেট্রোরেল চালু সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান। এতে বলা হয়, অনিবার্য কারণে প্রয়োজনীয় কারিগরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনো শুরু করা সম্ভব হয়নি।
ডিএমটিসিএলের সূত্র সম্প্রতি জানা যায়, লাইন, কোচ ও সংকেতব্যবস্থা—মেট্রোরেলের সবই ঠিক ছিল। এরপরও মেট্রোরেল চালু না হওয়ার কারণ ছিল নিচের দিকের কর্মীদের কর্মবিরতি। বড় কর্মকর্তারা বাড়তি সুবিধা নিচ্ছেন, এমন অভিযোগ এনে কর্মবিরতিতে যান মেট্রোরেলের কর্মচারীরা। এ জন্যই কারিগরি কোনো সমস্যা না থাকার পরও মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ ছিল। তবে কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনার পর তাদের দাবি পূরণের বিষয়ে আশ্বাস দেয়া হয়।
খালেদা জিয়াকে হ.ত্যাচেষ্টা মামলা, আসামি জায়েদ খান-জয়-সাজু খাদেম
এরপর ১৮ আগস্ট সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান সাত দিনের মধ্যে মেট্রোরেল চলাচল শুরুর আশ্বাস দেন। মেট্রোরেলের কর্মচারীরা ২০ আগস্ট থেকে কাজে যোগ দেন। সেই হিসেবে মেট্রোরেল রোববার থেকে চলাচল শুরু হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।