মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরিচা ঘাটে নিষিদ্ধ চায়না জাল-সুতা বিক্রির বাজার গড়ে উঠেছে। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অভিনব কায়দায় গোপন গুদাম ও ভ্রাম্যমাণ কায়দায় ক্রেতাদের নিকট জাল-সুতা বিক্রি করে আসছে। প্রশাসন অভিযান চালিয়ে এদের আটকের চেষ্টা করলেও কৌশলে এরা ব্যবসা চালিয়ে আসছে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ-অবৈধ জাল-সুতা বিক্রির সাথে জড়িতদের নামমাত্র জরিমানা করে এখ ধরনের প্রশ্রয় দিচ্ছে প্রশাসন।
জানা গেছে, পদ্মা-যমুনা বেষ্ঠিত এ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় বিভিন্ন ধরনের মাছ শিকার হয়ে আসছে। চলতি বর্ষা মওসুমে মাছ ধরার জাল ও অন্যান্য সরঞ্জামের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন ধরনের জালের মধ্যে নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গত কয়েক বছর যাবৎ শিবালয় উপজেলার আরিচা ঘাটে জাল ও সুতা বিক্রির এমন কিছু দোকান-পাট গড়ে উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী রাজবাড়ি, পাবনা, টাঙ্গাইল জেলার নদী তীরবর্তী অনেক জেলে ও সৌখিন মৎস্য শিকারীরা কারেন্ট জাল ব্যবহারে বেশী আগ্রহী। ফলে, এ সব নিষিদ্ধ জাল ক্রয়-বিক্রয়ের দোকান ও ভ্রাম্যমাণ ক্রেতা-বিক্রেতা দেখা যায়। আরিচা ঘাটে চিহ্নিত ফরহাদ হোসেন, আসলাম মোল্লা, ইছাক মোল্লা, জালাল উদ্দিন, রোস্তম মোল্লা, সায়েম মোল্লা, অনেকেই চায়না জাল-সুতার ব্যবসা করে আসছে। প্রায় দু’বছর আগে এ বাজারে চিহ্নিত জাল-সুতা বিক্রেতাদের দোকান ও গুদামে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল পাওয়ায় কয়েক জনকে অর্থ জরিমানা করা হয়। এরপর ব্যবসায়ীরা অভিনব কায়দায় কারেন্ট জাল বিক্রি বা সরবরাহ করে আসছে। এদের অনেকেই বাজারে জাল-সুতার দোকান খুলে বসে থাকলেও ক্রেতাদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে দুরবর্তী স্থানের গুদাম থেকে খদ্দেরের কাছে জাল বিক্রি করছে। ফলে, এসব নিষিদ্ধ জালের হদিস পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রশাসনকে।
জাল বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী আসলাম মোল্লা রাগান্বিত হয়ে বলেন, এ বিষয়ে বক্তব্য নিয়ে আপনি কি করবেন? আর আমার ব্যক্তিগত বিষয় আপনাকে বলবো কেনো? আপনি কি চান্দাবাজি করতে আইছেন। এ বিষয়ে বিষয়ে আর বেশী বাবাবাড়ি কইরেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক জাল ব্যবসায়ী বলেন, এ বাজারে ৬/৭ জন ব্যবসায়ী চায়না জালের ব্যবসার সাথে জড়িত। তবে, এ ব্যবসায় একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। সবকিছু ম্যানেজ করেই বিক্রি করে আসছে। সিন্ডিকেটের প্রধান ফরহাদ ও ইছাক মোল্লা। সেখানে যা খরচ হয় তা সব ব্যবসায়ী মিলে দেয়।
শিবালয় বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এসএম রাজু আহম্মেদ জানান, কিছু অসাধু কতিপয় জাল-সুতার কারবারির জন্য অন্যদের সুনাম নষ্ট ও নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে এ বাজারে বিভিন্ন ধরনের কারেন্ট জাল, চায়না জাল ব্যবসা করেছে। তা আমাদের অগোচরেই ছিল। কোন ব্যবসায়ী আর যাতে অবৈধ জাল বিক্রি করতে না পারে সে বিষয়ে আমাদের ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে কার্য্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এর সাথে প্রশাসনের জোরালো ভূমিকা থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: জাকির হোসেন জানান, অবৈধ জালের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। সম্প্রতি আসলাম মোল্লাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সে গণমাধ্যমকর্মীদের হুমকি দিয়ে থাকলে তার বিরোদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।