আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বের সবচেয়ে দামি জুতো, ঘড়ি বা বিলাসবহুল সামগ্রী নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। তবে আপনি কি জানেন, একটি শাড়ি এতটাই দামি যে তা গড়েছে বিশ্ব রেকর্ড? এই অনন্য শাড়িটির নাম ‘বিবাহ পাট্টু’। এটি তৈরি হয়েছে ভারতেই, আর এতে ব্যবহার করা হয়েছে হীরে, সোনা, রূপো, রুবি, প্ল্যাটিনামসহ নানা মূল্যবান উপাদান।
কোথায় তৈরি হয়েছিল এই অনন্য শাড়িটি?
এই শাড়িটি তৈরি হয়েছে ভারতের তামিলনাড়ুর কাঞ্চিপুরমে, যেটি বিশ্ববিখ্যাত সিল্ক শাড়ির জন্য। খাঁটি সিল্ক দিয়ে বোনা এই শাড়িটি প্রস্তুত করতে কয়েক ডজন দক্ষ কারিগরের সময় লেগেছে প্রায় ৪,৭৬০ ঘন্টা, যা শেষ হতে সময় নিয়েছে এক-দেড় বছরেরও বেশি। এটি তৈরি হয়েছিল ২০০৮ সালে এবং ২০০৯ সালে ৩৯,৩১,৬২৭ টাকায় বিক্রি হয়।
কেন ‘বিবাহ পাট্টু’ শাড়িটি এত বিশেষ?
এই শাড়ির বিশেষত্ব কেবল দামি ধাতু ও রত্নেই নয়, বরং এতে ফুটে উঠেছে ভারতের চিত্রশিল্পের ইতিহাসও। শাড়িটির পল্লু অংশে হাতে বোনা হয়েছে বিখ্যাত শিল্পী রাজা রবি বর্মা-র চিত্রকর্ম ‘গ্যালাক্সি অফ মিউজিশিয়ানস’। এই চিত্রে ১১ জন মহিলা বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজাচ্ছেন, যা প্রথম দেখায় মেশিন প্রিন্টের মতো মনে হলেও, আসলে দক্ষ তাঁতিদের হাতে সূক্ষ্মভাবে বোনা।
কতটা মূল্যবান এই শাড়ি?
‘বিবাহ পাট্টু’ শাড়িটিতে রয়েছে—
৫৯.৭ গ্রাম খাঁটি সোনা
৩.৯১৩ ক্যারেট হীরে
১২০ মিলিগ্রাম প্ল্যাটিনাম
৫ গ্রাম রূপো
২.৯৮৫ ক্যারেট রুবি
৫৫ সেন্ট পান্না
আরও পোখরাজসহ বিভিন্ন মূল্যবান রত্ন
শাড়িটির ওজন প্রায় ৮ কেজি হলেও, এটি অন্য সাধারণ শাড়ির মতোই সহজে পরা যায়।
এই শাড়ি কে কিনেছিলেন?
এই অতুলনীয় শাড়িটি ২০০৯ সালে বেঙ্গালুরুর এক ব্যবসায়ী তাঁর স্ত্রীর জন্য দশম বিবাহবার্ষিকীর উপহার হিসেবে কিনেছিলেন। পরবর্তীতে কুয়েতের এক ব্যবসায়ীও এমনই একটি কাস্টমাইজড শাড়ি সংগ্রহ করেন।
শুধু শাড়ি নয়, এটি এক সাংস্কৃতিক আবেগ
‘বিবাহ পাট্টু’ কেবল একটি বিলাসবহুল পোশাক নয়, বরং ভারতের ঐতিহ্য, শিল্প, এবং কারিগরদের নিপুণতার এক চিরন্তন নিদর্শন। প্রতিটি রঙ, সূতা, ও নকশার মাঝে লুকিয়ে আছে শত শত বছরের ঐতিহ্য এবং নীরব পরিশ্রম। এটি প্রমাণ করে দেয়, ভারতীয় বস্ত্রশিল্প শুধুই পোশাক তৈরির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়—এটি এক শিল্পকলা।
এমন অসাধারণ সৃষ্টিই বিশ্ব দরবারে ভারতীয় ঐতিহ্যকে তুলে ধরে গৌরবের সঙ্গে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।