মোটা হওয়া অপরাধ যে দেশে

মোটা হওয়া

লাইফস্টাইল ডেস্ক : বিশ্ব জুড়ে গবেষণা করে দেখা যায়, হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক এবং শ্বাসযন্ত্রজনিত রোগেই বেশি মানুষ ভোগে। এই রোগগুলির মূল উৎস অধিক ফ্যাট যুক্ত খাবার। এই ধরনের খাবার খেলে ওজন যেমন অস্বাভাবিক মাত্রায় বাড়তে থাকে, তেমন শরীরে ক্ষতিকর উপাদানের পরিমাণও বৃদ্ধি পেতে থাকে।

মোটা হওয়া

আমেরিকা ও কানাডা সরকার এই রোগগুলির প্রকোপ কমাতে নানা পদ্ধতি প্রয়োগ করার কথা ভেবেছে। তামাক এবং মদের ক্রয়মূল্যের উপর অতিরিক্ত কর চাপানোর ফলে উপভোক্তার সংখ্যা কিছুটা কমে আসে।

যদি অপুষ্টিকর খাদ্যের উপর কর বৃদ্ধি করা যায়, তা হলে গ্রাহকরা স্বাভাবিক ভাবেই স্বল্প মূল্যের স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে ঝুঁকতে শুরু করবেন।

এমনকি, বার্গার, পিৎজার মতো ফ্যাটযুক্ত খাবারের প্যাকেটের গায়ে যদি ‘এই খাবার শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়’, ‘এই খাবার স্থূলতা বৃদ্ধির কারণ’— ইত্যাদি সতর্কবার্তা উল্লেখ করা থাকে, তা নজরে পড়লে অনেকেই এই খাবার আর কিনবে না।

এতে হিতে বিপরীতই হয়েছে। লোকে তবুও বেশি দাম দিয়ে ‘জাঙ্ক ফুড’ কিনতে থাকে। কিন্তু আমেরিকা এবং কানাডাকে পিছনে ফেলে জাপান একটি অভিনব পদ্ধতি চালু করে।

২০০৮ সালে জাপানে ‘মেটাবো আইন’ চালু হয়। ‘মেটাবলিক সিন্ড্রোম’ থেকেই এর উৎপত্তি। এই আইন অনুযায়ী, প্রতি বছর সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের কোমরের মাপ নেওয়া হবে। কিন্তু এই আইন শুধু মাত্র ৪৫ বছর থেকে ৭৪ বছর বয়স পর্যন্ত কর্মীদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এমনকি, পুরুষ ও মহিলাদের ওজন কত হওয়া উচিত, তাও পূর্বনির্ধারিত।

লা হয়েছে, পুরুষ কর্মীদের ওজন ৬২.৫ কিলোগ্রাম এবং মহিলা কর্মীদের ওজন ৫২.৯ কিলোগ্রামের মধ্যে থাকতে হবে। প্রতি বছর অন্তত ৬৫ শতাংশ কর্মীর ওজন মাপাতেই হবে— এমনই নির্দেশ দেওয়া রয়েছে।

কোমরের পরিমাপও নির্দিষ্ট। পুরুষ ও মহিলা বিশেষে এর মান যথাক্রমে ৩৩.৫ ইঞ্চি এবং ৩৫.৪ ইঞ্চি। জাপান সরকারের এক মাত্র লক্ষ্য, ২০১৫ সাল অবধি নাগরিকদের স্থূলতার হার ২৫ শতাংশ হ্রাস করা।

যদি এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য পূরণ না হয়, তা হলে সেই সংস্থাগুলির উপর জরিমানা ধার্য করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। মেটাবো আইন চালু হওয়ায় ‘মাটসুশিটা’ নামের একটি সংস্থা তাদের কর্মী, কর্মীদের পরিবারের সদস্য এমনকি তাদের প্রাক্তন কর্মীদেরও এই প্রকল্পের আওতায় রেখেছে।

হার্টের সমস্যা কমবে এই মাখন খেলে

আবার কম্পিউটার উৎপাদনকারী এক সংস্থাকে নির্দেশ না মানার কারণে ১.৯ কোটি ডলার জরিমানাও দিতে হয়েছে। এই কঠোর আইন চালু হওয়ার ফলে জাপানের সকলে স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিয়েছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আমেরিকাতে এ রকম আইন চালু করা বেশি প্রয়োজন।