Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home ডলারের যত দোষ গুণ
    সম্পাদকীয়

    ডলারের যত দোষ গুণ

    June 6, 20229 Mins Read

    ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ : শ্রীমান মার্কিন ডলার দীর্ঘ দিন ধরে বিশ্ববাজারে মোড়লিপনায়। বিগত দুই দশকে আমেরিকান অর্থনীতি বৈশ্বিক আউটপুটের কাছে একটি সঙ্কুচিত অংশে পরিণত হওয়া সত্তে¡ও এই মোড়লিপনা অব্যাহত রয়েছে। যদিও বৈশ্বিক বাণিজ্যে বিভিন্ন মুদ্রার উপস্থিতি, আন্তর্জাতিক ঋণ, এবং নন-ব্যাংক ঋণ, বাণিজ্য, বন্ড ইস্যুসহ অনেক ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ধার ও ঋণদানের মার্কিন হিস্যা হ্রাস পাওয়া সত্তে¡ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো এখনো তাদের রিজার্ভে গ্রিনব্যাক ধরে রাখার পক্ষপাতী। গেল সপ্তাহে আইএমএফের সাপ্তাহিক এক মূল্যায়ন চার্টে (কারেন্সি কম্পোজিশন অব অফিসিয়াল ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ ডেটা) দেখা যায়- বৈশ্বিক বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ডলারের পরিমাণ গত বছরের শেষ ত্রৈমাসিকের তুলনায় ৫৯ শতাংশের নিচে নেমে গেছে, যা দুই দশকে ডলারের পতনকে প্রসারিত করেছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সংমিশ্রণে বিস্তৃত পরিবর্তনের উদাহরণে দেখা যায়, ব্যাংক অব ইসরাইল সম্প্রতি তার ২০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রিজার্ভের জন্য একটি নতুন কৌশল উন্মোচন করেছে। এই বছরের মধ্যেই, এটি মার্কিন ডলারের শেয়ার কমিয়ে দেবে এবং অস্ট্রেলিয়ান ডলার, কানাডিয়ান ডলার, চীনা রেনমিনবি এবং জাপানিজ ইয়েনে পোর্টফোলিওর বরাদ্দ বাড়াবে। এ দিকে কিয়েভ-ক্রেমলিন যুদ্ধ ডলারের আভিজাত্যেও আঘাত হানছে।
    ডলারের যত দোষ গুণ
    তবে দেখা গিয়েছে এতদসত্তে¡ও মার্কিন ডলারের হ্রাসকৃত ভ‚মিকা অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী রিজার্ভ মুদ্রার শেয়ার বৃদ্ধির সাথে মেলেনি। ইউরো, ইয়েন, এমনকি রেনমিনবিতে সংরক্ষিত মজুদের অংশ কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি ডলার থেকে সরে যাওয়ার এক চতুর্থাংশের জন্য দায়ী, তা আবার আংশিকভাবে চীনের তুলনামূলকভাবে বন্ধ মূলধন অ্যাকাউন্টের কারণে। অধিকন্তু, গত বছরের শেষ পর্যন্ত একটি একক দেশ রাশিয়ান রুবল বিশ্বের রেনমিনবি রিজার্ভের প্রায় এক তৃতীয়াংশ ছিল। মার্কিন ডলারের বিপরীতে রুশ মুদ্রা রুবলের মূল্য চার বছরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায় ২০ মে, ২০২২। একই সাথে, ইউরোর বিপরীতে রুবলের মূল্য সাত বছরে সর্বোচ্চে অবস্থানে পৌঁছেছে। মস্কো এক্সচেঞ্জের তথ্য অনুসারে, এক ডলারের বিপরীতে রুশ মুদ্রার মূল্য দাঁড়িয়েছে ৫৭ দশমিক ৬৭ রুবল। ২০১৮ সালের মার্চের পর ডলারের বিপরীতে এটিই রুবলের সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থান। অন্য দিকে ইউরোর বিপরীতে রুবলের দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ। এক ইউরোর বিপরীতে রুবলের মূল্য ৬০-এর নিচে পৌঁছেছে।

    ব্লুমবার্গের মতে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে গত এপ্রিলে রুবলের পতন সত্তে¡ও, রুশ মুদ্রা এই বছর বিশ্বের সেরা পারফরম্যান্সের মুদ্রায় পরিণত হয়েছে। এর বিপরীতে, ছোট অর্থনীতির মুদ্রা যা ঐতিহ্যগতভাবে রিজার্ভ পোর্টফোলিওতে বিশিষ্টভাবে স্থান পায়নি, যেমন অস্ট্রেলিয়ান এবং কানাডিয়ান ডলার, সুইডিশ ক্রোনার এবং দক্ষিণ কোরিয়ান ডলার থেকে স্থানান্তর এর তিন চতুর্থাংশের জন্য দায়ী।

    দু’টি কারণ মুদ্রার এই গতিবিধি ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করতে পারে :
    ক. এই মুদ্রাগুলো তুলনামূলকভাবে কম অস্থিরতার সাথে উচ্চতর রিটার্ন যুক্ত করে। এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ম্যানেজারদের কাছে ক্রমবর্ধমানভাবে আবেদন করে, কারণ বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বৃদ্ধি পায়, পোর্টফোলিও বরাদ্দের জন্য অংশীদারিত্ব বাড়ায়।
    খ. নতুন আর্থিক প্রযুক্তি যেমন স্বয়ংক্রিয় বাজার-নির্মাণ এবং স্বয়ংক্রিয় তারল্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা ছোট অর্থনীতির মুদ্রার লেনদেনকে সস্তা এবং সহজ করে তোলে। কিছু ক্ষেত্রে, এই মুদ্রার ইস্যুকারীদের ফেডারেল রিজার্ভের সাথে দ্বিপক্ষীয় অদলবদল লাইনও রয়েছে। এটি যুক্তিযুক্ত হতে পারে, আত্মবিশ্বাস তৈরি করে যে, তাদের মুদ্রাগুলো ডলারের বিপরীতে তাদের মূল্য ধরে রাখবে।

    একটি আরো যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা হলো যে, এই অপ্রচলিত রিজার্ভ মুদ্রাগুলো খোলা মূলধন অ্যাকাউন্ট এবং স্থিতিশীল নীতিগুলোর ট্র্যাক রেকর্ডসহ দেশগুলো দ্বারা জারি করা হয়। রিজার্ভ কারেন্সি ইস্যুকারীদের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে শুধু অর্থনৈতিক ওজন এবং আর্থিক গভীরতা নয়, স্বচ্ছ এবং অনুমানযোগ্য নীতিগুলোও অন্তর্ভুক্ত। অন্য কথায়, অর্থনীতির স্থিতিশীলতা এবং নীতিগত সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। স্পষ্টতই, হোল্ডারদের সুশাসন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা যেকোনো দেশের মুদ্রাবাজারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

    বিশ্ববাজারে ডলারের দাম বা বিনিময় হার তিনভাবে নির্ধারিত হয়। প্রথমটি হচ্ছে, কোনো ধরনের সরকারি বা নিয়ন্ত্রক সংস্থার হস্তক্ষেপ ছাড়া শুধু ডলারের চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে এ হার নির্ধারিত হয়। এটিকে বলা হয় ফ্রি ফ্লোটিং এক্সচেঞ্জ সিস্টেম। দ্বিতীয়টি হচ্ছে ম্যানেজড ফ্লোটিং এক্সচেঞ্জ সিস্টেম। এ ক্ষেত্রে সরকার বা কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিছু পদক্ষেপের মাধ্যমে বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। শেষটি হলো ফিক্সড এক্সচেঞ্জ সিস্টেম। এখানে সংশ্লিষ্ট দু’টি দেশ নির্দিষ্ট কিছু পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিনিময় হার নির্ধারিত করে থাকে। বাংলাদেশে ডলারের দাম বেঁধে দেয়া নিয়ে যে কসরত চলছে, সেটি মূলত ম্যানেজড ফ্লোটিং এক্সচেঞ্জ সিস্টেম। যুদ্ধ-বিগ্রহ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কৃষি ও শিল্প উৎপাদন অধিক হারে কমে যাওয়াসহ কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে এ ধরনের ম্যানেজড ফ্লোটিং সিস্টেম অনুসরণ করতে দেখা যায়। অনেকসময় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে কৌশলগত কিছু কারণেও এটি অনুসরণ করতে দেখা গেছে। বাংলাদেশে এ ধরনের কোনো পরিস্থিতি বিরাজ করছিল না। অথচ ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে গত ২৩ মে পর্যন্ত গত সাড়ে চার মাসে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে মোট ছয় দফা, যা গত এক দশকের মধ্যে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের সর্বোচ্চ গতিহার। টাকার এমন দ্রুত গতির অবমূল্যায়ন দেশের বাজার ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চরম অস্থিরতা ও অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে বলে যে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছিল তার কিছু ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হতেও শুরু করেছে। ডলারের আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিরতার পাশাপাশি এ দেশ থেকে প্রচুর অর্থ পাচার ও মুদ্রাস্ফীতি চলমান ডলার সঙ্কটের পেছনের কারণ বলে মনে করার সঙ্গত কারণ স্পষ্ট হচ্ছে।

    বাংলাদেশে ডলার নিয়ে ভয়াবহ কারসাজির সাথে কিছু মানিচেঞ্জার প্রতিষ্ঠান, কিছুসংখ্যক অসৎ ব্যবসায়ী ও কয়েকটি ব্যাংক জড়িত বলে ধারণা। অভিযোগ, অসৎ ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ডলারের বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করেছেন। ব্যাংক ও কার্ব মার্কেট সংশ্লিষ্টরা ব্যবসা করার জন্য ডলারের দর বাড়াচ্ছেন। কিছু ব্যাংক ডলার বিক্রি করে বিশাল অঙ্কের মুনাফা করছে যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংক একটা নির্ধারিত দরে ( ৮৭.১০) ডলার সরবরাহ করছে। আগের সপ্তাহের মুদ্রাবাজার তথ্য অনুযায়ী ব্যাংকগুলো বাস্তবে এলসি খুলতে ডলারে দর রাখছিল ৯৩-৯৪ টাকা। অর্থাৎ প্রতি ডলারে ব্যাংকগুলোর মুনাফা হচ্ছিল ৫-৬ টাকা। খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে ৯৭-৯৮ টাকায়। এখানে মুনাফা করছে ৯-১০ টাকা। সঙ্গত কারণেই এসব প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী ও ব্যাংকের লেনদেনের প্রতি পর্যবেক্ষণ ও নজরদারি বাড়ানোসহ এ খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে স্থায়ী এবং কার্যকর সমাধানের জন্য নীতির জায়গাটা আগে ঠিক করা দরকার।

    এটা সত্যি, বিশ্ববাজারে ডলারের দাম বেড়েছে। বাংলাদেশে চাহিদার তুলনায় জোগানের ঘাটতি রয়েছে এও সত্যি। রফতানি আয়ের তুলনায় আমদানি ব্যয় অনেক বেশি। সে জন্যই এ বাণিজ্য ঘাটতি তৈরি হয়েছে যার ফলে বাজারে ডলারের সঙ্কট রয়েছে। কিন্তু এ সঙ্কট আরো বেশি ঘনীভ‚ত করা এবং কৃত্রিমভাবে দাম বাড়িয়ে বাজারে আতঙ্ক ছড়ানো কিছু অসৎ ব্যবসায়ী, কয়েকটি মানিচেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের কাজ।

    ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেগুলো সময়োপযোগী। একইভাবে বিলাসীপণ্যের আমদানি কিছু দিন বন্ধ রাখা, গাড়ি আমদানির প্রতি নিয়ন্ত্রণ আরোপ ও আমদানি পণ্যের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়ানোর প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। একইভাবে কার্ব মার্কেট (খোলাবাজার) ও ব্যাংকের মধ্যে ডলারের রেটের যে বিশাল ব্যবধান রয়েছে তা কমিয়ে আনার কোনো বিকল্প নেই। অনেক ব্যাংক অধিক রেটে এলসি খুলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে কম রেট দেখিয়ে এলসির রিপোর্ট দিয়ে তথ্য গোপন করছে কিনা দেখতে হবে যা ডলারের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

    ডলার সঙ্কটের কারণে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন মধ্যমানের ব্যবসায়ীরা, যারা মূলত ব্যাংকের ওপরই নির্ভরশীল। কিন্তু রেট বেশি হওয়ায় তাদের আমদানি পণ্যের ক্রয়মূল্য বেড়ে যাবে। অথচ সেই বাড়তি মূল্যে বাজারে পণ্য বিক্রি করা কঠিন হবে। এ জন্য তারা এক দিকে বাড়তি মূল্যে এলসি খুলতে পারছেন না আবার এলসি না খুললে ব্যবসাই বন্ধ হয়ে যেতে পারে, এমন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। ফলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা বেশি রেটে এলসি খুলতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে তাদের আমদানি পণ্যের দামও বেড়ে যাচ্ছে, যা আবার সামগ্রিকভাবে পণ্যের বাজারে প্রভাব ফেলছে। এতে মূল্যস্ফীতিও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

    এ দিকে ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে হুন্ডি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে দেশের অর্থনীতিতে সঙ্কট আরো বেড়ে যেতে পারে। বাংলাদেশের কার্ব মার্কেট ছোট হলেও এখানে ব্যাপক লেনদেন হয়। কেননা দীর্ঘ আড়াই বছরের করোনা মহামারীর পর মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে। এতে মানুষের বিদেশ ভ্রমণ বেড়েছে। ভ্রমণের জন্য বেশির ভাগই খোলাবাজার থেকেই ডলার কেনেন। হজ মৌসুমে ডলারের চাহিদা বেড়ে যাবে। ভিসা ও সেবা প্রদানকারী সংস্থাসমূহ লেনদেন টাকার স্থলে কার্ব মার্কেট থেকে থেকে কেনা নগদ ডলারে করার কারসাজিতে আছে কি না দেখার আবশ্যকতা থেকে যাবে।

    ডলার ক্রয় বিক্রয়ের মূল মার্কেট হচ্ছে ব্যাংক। এ বাজারেও স্বচ্ছতার ঘাটতি থাকলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে আরো কঠোর হওয়ার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। করোনা পরিস্থিতি উন্নত হওয়ার পর মূলধনী যন্ত্রপাতি, শিল্পের কাঁচামাল, খাদ্যপণ্য, জ্বালানি তেল, ভোজ্যতেলসহ সব পণ্যের আমদানি বেড়েছে। চাহিদা বাড়ায় চলতি অর্থবছরের পণ্য আমদানি বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী বিভিন্ন পণ্যের এলসি বেড়েছে প্রায় ৪৬ শতাংশ। ফলে আমদানিতে ডলারের চাহিদা বেড়েছে। ডলারের যে পরিমাণ চাহিদা, বিপরীতে ডলার আহরণের উৎস সে অনুযায়ী হয়নি। যেখানে আমদানি বেড়েছে ৫০ শতাংশের কাছাকাছি, রফতানি সেখানে মাত্র ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বেড়েছে।

    অন্য দিকে, প্রতি বছর প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স হিসেবে প্রবাসীরা পাঠালেও এ বছর সে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। সাত-আট মাস ধরে প্রতি মাসেই রেমিট্যান্স প্রবাহ কমছে। ফলে চাহিদা অনুযায়ী ডলার পাচ্ছে না বাংলাদেশ। আবার এর সুযোগও কাজে লাগাচ্ছে সিন্ডিকেট চক্র। বাজারে সত্যিকারের সঙ্কট কাজে লাগিয়ে রেট বাড়াতে ডলার থাকলেও তা ধরে রাখছে মানিচেঞ্জার প্রতিষ্ঠানগুলো। এমনকি কোনো কোনো ব্যাংক নিজেদের স্বার্থে ব্যবসায়ীদের সঙ্কটের অজুহাত দেখিয়ে বেশি রেটে এলসি খুলতে বাধ্য করছে।

    খাদ্যদ্রব্য, জ্বালানি তেল ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বাজার এখনো ব্যাপকভাবে আমদানিনির্ভর। ফলে বেশি মূল্যে কেনা ডলার দিয়ে এসব পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করতে গেলে স্বভাবতই এসবের ব্যয় বেড়ে যাবে, যা প্রকারান্তরে পরিশোধ করতে হবে সাধারণ ভোক্তাদেরকে। এর মানে, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির প্রথম খড়গটিই এসে পড়বে সাধারণ ভোক্তা তথা আমজনতার ওপর। এমনিতেই নানা ব্যবসায়িক কারসাজিতে দ্রব্যমূল্য এখন অধিকাংশ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। তার ওপর রয়েছে করোনা, ইউক্রেন যুদ্ধ প্রভৃতি ঘটনার প্রভাব। এ অবস্থায় দফায় দফায় ডলারের মূল্য বৃদ্ধি অনেকটা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়েই দেখা দিয়েছে। ফলে ভোক্তা সাধারণের দৃষ্টিকোণ থেকে, টাকার এরূপ ঘন ঘন ও উচ্চমাত্রার অবমূল্যায়নে সঙ্কট ঘনীভূত হতে পারে। সে কারণে নিশ্চয় কোনো না কোনো রাষ্ট্রীয় মঙ্গলের পাশাপাশি কারো না কারো স্বার্থের কথা ভেবেই এটি করা হচ্ছে কি না এ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

    ডলারের মূল্যবৃদ্ধির সর্বসাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত উৎপাদনমুখী শিল্পের বিকাশকে আরেক দফা ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে বলেই ধারণা করা চলে। এ অবস্থায় অর্থনীতির মূল তৎপরতা আরো বেশি করে সেবাখাতনির্ভর হয়ে পড়বে বলেই মনে হচ্ছে। আর তাতে সেবা খাতনির্ভর প্রবৃদ্ধির বর্তমান ধারা কতটা টেকসই হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে বৈকি!

    যেকোনো রাষ্ট্রের কাজ হচ্ছে সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবেলায় উদ্যোক্তাকে সহায়তা করা। কিন্তু রাষ্ট্রের নীতিমালা যদি উদ্যোক্তার জন্য ঝুঁকি তৈরির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান উদ্যোক্তার জন্য সমূহ বিপদ। রাষ্ট্রের এ ধরনের আচরণের কারণেই বস্তুত উদ্যোক্তা উন্নয়নের বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৩৭ দেশের মধ্যে ১৩২। তাহলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারায় বাংলাদেশ যে দীর্ঘসময় ধরে এগিয়ে থাকল, তার ব্যাখ্যা কী? আংশিক ব্যাখ্যা এই যে, ‘সেবা খাতনির্ভর বিনিয়োগ থেকে সাময়িক সময়ের জন্য হলেও দ্রুত ফল লাভ, সম্পদের প্রবল মেরুকরণের ধারায় গুটিকতক উদ্যোক্তার দ্বারা একচেটিয়াভাবে বিনিয়োগ থেকে উচ্চহারে মুনাফা আহরণ, রাষ্ট্রীয় প্রশ্রয়পুষ্ট সুবিধাবাদী শ্রেণীর হাত দিয়ে অর্থের ব্যাপক চলাচল ইত্যাদি কারণে সাধারণ মানুষের বাস্তব আর্থিক সামর্থ্য না বাড়লেও প্রবৃদ্ধির হার ঠিকই বেড়েছে।’ (নিউজ সময়, মুক্তকথা, ২৭ মে ২০২২)

    দৃশ্যত প্রতীয়মান হয়, বৈদেশিক মুদ্রার মজুদকে চাপমুক্ত পর্যায়ে ধরে রাখার উদ্দেশ্যেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কৌশল গ্রহণ করেছে। কিন্তু এরূপ ঘন ঘন টাকার অবমূল্যায়ন ঘটিয়ে ওই চাপ মোকাবেলার কৌশল গভীরভাবে ভেবে দেখা প্রয়োজন। বৈদেশিক মুদ্রার মজুদকে চাপমুক্ত রাখতে হলে আসল প্রয়োজন হচ্ছে রফতানি বৃদ্ধি করা, অর্থপাচার রোধ, রেমিট্যান্স আহরণের গতিকে পড়তে না দেয়া এবং বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ করতে হয় এরূপ ব্যয় যথা-বৈদেশিক ঋণ, বিদেশ ভ্রমণ, দেশে ও বিদেশে আন্তর্জাতিক পরামর্শক নিয়োগ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ। কিন্তু সে ক্ষেত্রে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে পরিকল্পনাহীনভাবে টাকার অবমূল্যায়ন করা হলে সেটি উপকারের পরিবর্তে বাজারে বরং নতুন অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। এখনই জরুরি ভিত্তিতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারলে এর ক্রমান্বয়িক প্রতিক্রিয়ায় (চেইন ইফেক্ট) দেশের পুরো অর্থনীতিই ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। বেচারা ডলারের দোষ গুণ খুঁজে তখন কোনো লাভ হবে না।
    [email protected]

    মতিঝিলের উটের খামার নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    গুণ ডলারের দোষ যত সম্পাদকীয়
    Related Posts
    Iqbal Karim Bhuiyan

    সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়ার সতর্কবার্তা: ১/১১ এর পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে

    May 24, 2025
    What Is Artificial Intelligence?

    What Is Artificial Intelligence? Details of Modern AI

    February 11, 2025

    বৈষম্যমুক্ত সমাজ নির্মাণে একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন অপরিহার্য

    October 16, 2024
    সর্বশেষ খবর
    বেলি ডান্স-প্রিয়াঙ্কা চোপড়া

    যে কারণে বেলি ডান্সারের ভিডিও শেয়ার করলেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া

    পাকিস্তানের হানিয়ার ভিডিও

    পাকিস্তানের হানিয়ার ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও ফাঁস!

    তাণ্ডব আয়

    চলছে ‘তাণ্ডব’ ঝড়, তিন দিনে আয় কত?

    “সবচেয়ে বড় মাফিয়া

    “সবচেয়ে বড় মাফিয়া আমরাই!” — এনসিপি নেতার বক্তব্যে তোলপাড়

    দিনাজপুর সীমান্ত দিয়ে

    দিনাজপুর সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ২০ জনকে পুশইন

    অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে

    অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন: বিজিএমইএ সভাপতি

    একদল আগে কাজ করতো

    একদল আগে কাজ করতো, এখন আবার আরেক দল দখল করেছে : বাঁধন

    ‘শেখ হাসিনা হয়তো

    ‘শেখ হাসিনা হয়তো পালিয়ে গেছেন কিন্তু পুরো সিস্টেমটা এখনো রয়ে গেছে’

    সাবেক এমপি আনার হত্যার

    সাবেক এমপি আনার হত্যার পর এবার গাড়ি উদ্ধার কুষ্টিয়ায়

    Xiaomi Pad 7 Pro

    Xiaomi Pad 7 Pro বাংলাদেশে ও ভারতে দাম বিস্তারিত স্পেসিফিকেশনসহ

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.