স্পোর্টস ডেস্ক : আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এভাবে আউট হলেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। কাইল জেমিসনের ডেলিভারিতে রক্ষণাত্মক শট খেলার পর মুশফিকুর রহিমের মাথার ভেতর কী খেলে গেল, কে জানে! স্টাম্পের বেশ বাইরে থাকা বল হাত দিয়ে সরিয়ে দিলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে আবেদন করলেন জেমিসন ও নিউ জিল্যান্ডের অন্য ফিল্ডাররা। ক্রিকেটীয় নিয়মে আম্পায়ার আউট দিতে বাধ্য। বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান আউট হলেন অদ্ভুতভাবে।
মিরপুরে বাংলাদেশ-নিউ জিল্যান্ড টেস্টের প্রথম দিনের ঘটনা। দ্বিতীয় সেশনের শুরুর দিকে ‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড’ আউট হন মুশফিক।
বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এভাবে আউট হলেন তিনি।
এভাবে আউট অবশ্য আগে পরিচিত ছিল ‘হ্যান্ডলড দা বল’ নামে। তবে ২০১৭ সালে আইনে একটু পরিবর্তন আনে ক্রিকেটের আইনপ্রণেতা সংস্থা। এই আউটকেও ‘অবস্ট্রাক্টিং দি ফিল্ড’ আউটের অন্তর্ভুক্ত করে দেওয়া হয়। তাতে ক্রিকেটের আউট দশটি থেকে নেমে আসে নয়টিতে।
তবে ‘হ্যান্ডলড দা বল’ আউটের বেশির ভাগ নজিরের সঙ্গে মুশফিকের আউট একটু আলাদা। অনেক সময়ই বল স্টাম্পে আসতে থাকলে বা স্টাম্পের আশেপাশে ব্যাটসম্যান অবচেতনভাবেই হাত বাড়িয়ে দিয়ে ফেলেন। কিন্তু মুশফিকের ক্ষেত্রে স্টাম্পের ধারেকাছে ছিল না বল। স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে রক্ষণাত্মক শট খেলেন তিনি। বল চলে যাচ্ছিল আরও বাইরে। তার পরও হাত দিয়ে বল সরিয়ে দেন তিনি।
বলা যায় অনেকটা যেন ‘ব্রেইন ফেইড’ মুহূর্ত। ২০০১ সালে ভারতের বিপক্ষে চেন্নাই টেস্টে অস্ট্রেলিয়ান গ্রেট স্টিভ ওয়াহরও আউটের সঙ্গে মুশফিকের মিল পাওয়া যায়।
জেমিসন আবদেন করার পর মুশফিক অবাক হয়ে হাত দিয়ে কিছু একটা দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে সর্বনাশ হয়েই গেছে। ক্রিকেটীয় নিয়মে এটি আউট।
এ দিন আগেও এক দফায় হাত দিয়ে এভাবে বল সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন মুশফিক। কিন্তু সেবার বলে তার হাত লাগেনি। দ্বিতীয় দফায় আর পার পাননি।
ঠিক ওই সময়ই ধারাভাষ্যে ছিলেন মুশফিকের দীর্ঘদিনের সতীর্থ ও বন্ধু তামিম ইকবাল। আন্তর্জাতিক ধারাভাষ্যে এ দিন অভিষেক হলো বাংলাদেশের সফলতম ব্যাটসম্যানের। মুশফিকের আউটের ধরনে বিস্মিত তামিম বলেন, “৮০টির বেশি টেস্ট খেলা একজন ক্রিকেটারের বোঝা উচিত ছিল যে, এরকম কিছু তিনি করতে পারেন না।”
কী কারণে মুশফিক এরকম করে ফেলতে পারেন, সেটি কারণ অনুধাবনের চেষ্টাও করেন তামিম।
“অনুশীলনের অভ্যাসের কারণে এটা হয়ে থাকতে পারে। নেটে ব্যাটিংয়ের সময় সাধারণত ডিফেন্স করেই ব্যাটসম্যানরা বল ধরে বোলারের কাছে ফেরত পাঠায়। হতে পারে, মুশফিকের অবচেতন মন সেভাবেই কাজ করেছে এবং হাত বাড়িয়ে ফেলেছে সে। তবে এটা অবশ্যই কোনো অজুহাত হতে পারে না।”
এই তো, কিছুদিন আগেই বিশ্বকাপে ‘টাইমড আউট’ নিয়ে কত তোলপাড়ই না হয়ে গেল। সেটির রেশ শেষ হতে না হতেই দেখা গেল আরেকটি বিচিত্র আউট।
‘টাইমড আউট’-এর মতো বিরল আউট অবশ্য এটি নয়। টেস্ট ক্রিকেটে ‘হ্যান্ডলড দা বল’ আউট আগেও হয়েছেন ৭ ব্যাটসম্যান। সর্বপ্রথম ১৯৫৭ সালে এই আউট হয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার রাসেল এনডিন। সবশেষ ২০০১ সালে এভাবে আউট হয়েছিলেন ইংল্যান্ডের মাইকেল ভন। এছাড়া ওয়ানডেতে ‘হ্যান্ডলড দা বল’ আউট হয়েছেন তিন ব্যাটসম্যান। টি-টোয়েন্টিতে কেউ হননি।
এছাড়া আগে ‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড’ আউটও হয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১২ জন। বদলে যাওয়া আইনে যেহেতু দুটিই ‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড’, এই আউটের শিকার এখন মোট ২৩ জন।
তবে মুশফিক রেকর্ড বইয়ে নাম লেখালেন বাংলাদেশের প্রথম হিসেবে। এমন ইতিহাস গড়তে নিশ্চয়ই তিনি চাননি!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।