জুমবাংলা ডেস্ক : সাভারের একটি কবরস্থানে কবরস্থ করতে ৫ হাজার টাকা দাবি করেছেন কবরস্থানের কোষাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম। এই টাকার জন্য দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন মৃতের দাদি ভিক্ষুক জরিনা বেওয়া (৬০)। মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সকালে মৃত নাতীকে কবরস্থ করার অনুরোধ নিয়ে দেওগাঁও কবরস্থানের কোষাধ্যক্ষের কাছে গেলে রেজুলেশনের অজুহাত দেখিয়ে এই টাকা দাবি করেন জাহাঙ্গীর আলম।
মৃতের দাদি জরিনা বেওয়া বলেন, যাদের কবরস্থানে কবর দেবো তারা ৫ হাজার টাকা চেয়েছেন। কবরস্থানের সবাই মিলে বলেছে ৫ হাজার টাকা লাগবে। অন্য জায়গার লোক হলে ৫ হাজার টাকা লাহে। আর শরিক হলে এক টাকাও দেওয়া লাগবে না। আমি তো আর শরিক না। আমি ভিক্ষা করে খাই। এই টাকা কোথায় পাবো। আমার ছেলে অন্য মেয়েকে বিয়ে করে নিরুদ্দেশ হয়েছে। ওর মাও চলে গেছে অন্য পুরুষর সাথে। আমাদের কেউ খোঁজ খবর নেয় না। তাদের খোঁজও জানি না। এখন কি করবো, কোন উপায় না পেয়ে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছি।
এ ব্যাপারে জাহাঙ্গীর বলেন, দেওগাঁ কবরস্থানের সভাপতি হলেন ওমর আলী মাস্টার সাহেব। আমার চাচা হন। আমি এখানকার কেয়ারটেকার। আর টাকার ব্যাপারটা হল কবরস্থানের নিয়ম। আমাদের সামাজিক কবরস্থান দেওগাঁও মসজিদ কবরস্থান। এখানে কবর দিতে গেলে টাকা লাগে। আমরা সবাই মিলে নিয়ম করে নিয়েছি। এই টাকাটা কবরস্থানের উন্নয়নের কাজে লাগানো হয়। যে মারা গেছে এখানে তার কবর দেওয়ার নিয়ম নেই। আমাদের রেজুলেশন আছে দেওগাঁয়ের বাইরের কোন লোকের কবর দেওয়া হবে না। ও যেহেতু দেওগায় ভাড়া থাকে সেই সুবাদে আমি বলে ব্যবস্থা করেছি। অসহায়ের জন্য কি ব্যবস্থা আছে এব্যাপারে তিনি বলেন, আপনি সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা বলেন।
কবরস্থানের সাধারন সম্পাদক আক্তার মাষ্টার বলেন, আমার কাছে এ খবর আসে নাই। আমার কাছে খবর এসেছিল, যে ছেলেটা মারা গেছে সেই ছেলেটা নিয়ে একটা মহিলা আসছিল সাহায্য নেওয়ার জন্য। আমরা বলেছি যেহেতু ফাঁসি দিয়ে মরছে এই ব্যাপারটা আগে সমাধান হোক তার পর আমরা চিন্তাভাবনা করে দেখবো।
তিনি বলেন, অন্যলোক আমাকে বলছে স্যার কবর দেওয়া যাবে? আমি বলেছি আমাদের সদস্য হলে, আমাদের নিয়মকানুনের ভিতর হলে দেখবো। আমাদের রেজুলেশন আছে। এই ব্যাপারটা আমি একা বলতে পারবো না। কবরের ব্যাপারটা আগে থানায় সংশোধন হোক পরে ব্যাপারটা দেখবো।
টাকার অঙ্ক তো কাউরে বলা হয় নি। জাহাঙ্গীর ক্যাশিয়ার, তিনি হয়তো বলতে পারেন। আমরা সকলে মিলে কবরস্থানটা করেছি। দশে মিলে কবরস্থান করেছি ১৯৯৫ সালে। এই টাকাটা আমরা খাওয়ার জন্য নেই না। কবরস্থানের উন্নয়নের জন্য নেই। এজন্য আমাদের রেজুলেশন আছে। সদস্য হলে আমরা এই টাকা নেই। থানা থেকে ক্লিয়ারেন্স আসুক তার পর বিষয়টি আমরা বিবেচনা করে দেখবো। অসহায় মানুষের জন্য আমরা তো করবই।
এ ব্যাপারে সাভারের বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও কবরস্থানের সভাপতি ওমর আলী মাষ্টারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায় নি।
প্রসঙ্গত, গতকাল সোমবার ওই এলাকায় অভিমানে আত্মহত্যা করে ১২ বছরেন শিশু আরাফাত। পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। আজ নিহতের মরদেহ আসার কথা রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।