স্পোর্টস ডেস্ক : জাতীয় সংগীত নিয়ে ইংল্যান্ডের ফুটবলে শুরু হলো বিতর্ক। জাতীয় সংগীত গাইতে নারাজির কথা জনসম্মুখে বলেছেন দলটির অন্তর্বর্তীকালীন কোচ লি কার্সলি। ৫০ বছর বয়সী এই কোচ জানিয়েছেন, তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন ম্যাচ শুরুর আগে দলের সঙ্গে জাতীয় সংগীত গাইবেন না।
সরাসরি এই ঘোষণা দেওয়ায় ইংল্যান্ডের ফুটবলভক্তদের তোপের মুখে পড়েছেন কার্সলি। নানামুখী মন্তব্য করেছেন তারা, ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন। অনেকে কার্সলিকে বরখাস্ত করতে বলেছেন।
কার্সলি এমন সময় ঘোষণাটি দিয়েছেন, যার কয়েক ঘণ্টা পর তিনি প্রথমবার ইংল্যান্ডের ডাগআউট দাঁড়াবেন। আজ শনিবার রাতে উয়েফা নেশনস লিগে আয়ারল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড। ইংলিশদের কোচ হিসেবে এটিই কার্সলির প্রথম ম্যাচ।
এর আগে ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-২১ দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন কার্সলি। ইউরোর ফাইনালে স্পেনের কাছে ইংল্যান্ড হেরে যাওয়ার প্রেক্ষিতে কোচ গ্যারেথ সাউথগেট পদত্যাগ করলে কার্সলিকে অন্তর্বর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব দেয় ফেডারেশন।
কার্সলির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে এক ইংল্যান্ড ফুটবলভক্ত বলেছেন, ‘শুধু একটি বিষয় মনে রাখবেন। কার্সলি ইংল্যান্ডের জন্মগ্রহণ ও বেড়ে উঠেছিলেন। একমাত্র কার দাদা-দাদির কারণেই আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছেন তিনি।’
বলে রাখা ভালো যে, কার্সলি ছিলেন আয়ারল্যান্ডের জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড়। তিনি কখনো ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেননি। যদিও অনেকগুলো ইংলিশ ক্লাবে খেলেছিলেন তিনি। সর্বশেষ ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের জুনিয়র দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন কার্সলি।
আরেকজন লিখেছেন, ‘তিনি আমাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। এটি সম্মানের। প্রত্যেক খেলোয়াড় এবং ব্যবস্থাপকের এটি (জাতীয় সংগীত) গর্বের সঙ্গে গাওয়া উচিত। আপনি যদি এটি না গেয়ে থাকেন তবে আমি জিজ্ঞাসা করবো কেন? এটা গুরুত্বপূর্ণ। যদি তা না হয়, তাহলে কোনটি গুরুত্বপূর্ণ? আমি নিশ্চিত অনেক প্রাক্তন খেলোয়াড় এর অর্থ কী তা ব্যাখ্যা করবে।’
অন্য এক ভক্ত লেখেন, ‘সোভেন গোরান-এরিকসন জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছিলেন এবং তিনিও আমাদের দেশের ছিলেন না। লি কার্সলি আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলেন, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। তবে যদি জাতীয় সংগীত না গাওয়ার পেছনে রাজনৈতিক কারণ থাকে, তবে তার (দলে) ছেড়ে দেওয়া উচিত।’
ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের জেফ পাওয়েলও কার্সলির কঠোর সমালোচক ছিলেন। পাওয়েল লিখেছেন, ‘তাকে (কার্সলি) বরখাস্ত করুন। প্রয়োজনে এখনই। প্রথমবার ডাগআউটে দাঁড়ানোর ঠিক আগেই। তাকে অন্তর্বর্তী, অস্থায়ী, স্ট্যান্ড-ইন বা তত্ত্বাবধায়ক ম্যানেজার যাই বলুন না কেন, এটি কোনো ইংরেজের কাজ নয় যে ঠোঁটের মাধ্যমে আমারদের চেতনাকে অস্বীকার করবে। কার্সলি আমাদের রাজ্য বার্মিংহাম এবং তার আশেপাশে বসবাস করে। ইংল্যান্ড যদি কোনো কোচ বিদেশী নিয়োগ করতো, তাহলেও এত বেশি প্রতারিত হতে হতো না।’
আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ঐতিহাসিকভাবে একটি দ্বন্দ্ব আছে। ইংল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ড নিয়ে যুক্তরাজ্য গঠিত।
উত্তর আয়ারল্যান্ডকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্র। ব্রিটেন জোর করে উত্তর আয়ারল্যান্ড নিয়ে গেছে বলে মনে করে বলে মনে করে আইরিশরা। যে কারণে বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। সেই বিরোধের কারণেই জাতীয় সংগীত না গাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কার্সলি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।