প্রাচীনকাল থেকে নাভিতে তেল লাগানো বা মালিশের রীতি রয়েছে। সমাজে খুবই পুরোনো সংস্কৃতি এটি। কিন্তু পুরোনো হলেও এখনো অনেক পরিবারেই এটি দেখা যায়। নাভি হচ্ছে পেটের কেন্দ্রে অবস্থিত। এর ত্বক পাতলা ও কাছে অনেক ছোট রক্তনালী রয়েছে। যা নাভিকে খুবই সংবেদনশীল করে তোলে এবং আর্দ্রতা ভালোভাবে শোষণ করতে পারে।

নাভিতে তেল লাগানো বা মালিশ কোনো ধরনের প্রতিকার কিংবা চিকিৎসা নয়। তবে হালকা যত্ন হিসেবে ভালো কাজ করে। সঠিকভাবে ভালো তেল ব্যবহার করলে ত্বকের আরাম ও শিথিলতা বজায় রাখে। নাভিতে কোন তেল লাগালে উপকার পাওয়া যায়, তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক-
ক্যাস্টর অয়েল:
ক্যাস্টর অয়েল ঘন হয়ে থাকে এবং তা ধীরে ধীরে শোষিত হয়। যারা পেটের চারপাশে শুষ্কতা বা হালকা পেটের অস্বস্তি অনুভব করেন, তারা নিয়মিত এই তেল নাভিতে ব্যবহারে ভালো ফল পাবেন। প্রচলিত রয়েছে, ক্যাস্টর অয়েল ত্বক নরম করতে ও হালকা উষ্ণতা বজায় রাখতে উপকারী। রাতে কয়েক ফোঁটা এই তেল নাভির চারপাশে মালিশ করলে ত্বক কোমল থাকে। প্রধান সুবিধা হচ্ছে, এই তেল আর্দ্রতা ধরে রাখে। ঠান্ডা চাপযুক্ত, হেক্সেনমুক্ত ক্যাস্টর অয়েল ভালো কাজ করে।
নারকেল তেল:
নারকেল তেল অধিকাংশ ত্বকের জন্য উপযুক্ত। এতে প্রাকৃতিক ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। যা ত্বকের বাধা রক্ষা করে। নাভিতে ব্যবহারে আঁটসাঁট পোশাক বা ঘামের জন্য শুষ্কতা এবং জ্বালা কমাতে পারে। এই তেলের হালকা গঠন দৈনন্দিন ব্যবহারে উপকারিতা পাওয়া যায়। বিশেষ করে উষ্ণ আবহাওয়ায়।
তিলের তেল:
উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য তিলের তেল কার্যকর। প্রাচীন পদ্ধতিতে এটি শক্ত হওয়া রোধে এবং জয়েন্ট ও পেশীগুলোর চারপাশে রক্ত সঞ্চালন ভালো করতে কাজ করে। নাভিতে এই তেল ব্যবহার করা হলে পেটের চারপাশে শিথিলতা বজায় রাখে, বিশেষ করে ঠান্ডার সময়। ব্যবহারের আগে হালকা গরম করে নিলে আরাম ও শোষণ উন্নত হয়।
বাদামের তেল:
বাদাম তেল হালকা, কোমল ও ভিটামিন ই সমৃদ্ধ। যা সংবেদনশীল ত্বক ও চুলকানি বা লালচে ভাবের ঝুঁকিতে থাকা ত্বকের জন্য উপকারী। নাভির চারপাশে নিয়মিত বাদামের তেল ব্যবহার করলে ত্বক মসৃণ থাকে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পুরোনো স্ট্রেচ মার্ক থাকলে তা উন্নত করতে সহায়তা করে থাকে। পুষ্টি ও কোমলতার মাধ্যমে এর উপকারিতা বোঝা যায়।
সরিষার তেল:
সরিষার তেল শরীরে উষ্ণতা তৈরি এবং রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য কার্যকর। কেউ কেউ পেট শক্ত হওয়া বা ভারী বোধ করার জন্য ব্যবহার করেন। কিন্তু ত্বক সংবেদনশীল হলে ত্বকে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে। হালকা তেল নিয়ে ব্যবহার করা উচিত। তবে প্রতিদিন ব্যবহার না করাই ভালো।
যা জানা জরুরি:
ত্বকে তেল ব্যবহারের থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ত্বক পরিষ্কার রাখা। ঘাম বা ব্যাকটেরিয়া যেন আটকে না থাকে, এ জন্য তেল ব্যবহারের আগে ত্বক ধুয়ে নেয়া উচিত। মাত্র কয়েক ফোঁটা তেল নিয়ে ব্যবহার করুন। অধিক তেল ব্যবহারের অর্থ ফলাফল বেশি ভালো হবে―এমনটি ভাবা ঠিক নয়। কেননা, ফলাফল ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে এবং উপকারিতার ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়ই ত্বকের আরাম ও শিথিলতার সঙ্গে সম্পর্কিত। কোনো ধরনের জ্বালাপোড়া, চুলকানি বা ফুসকুড়ি দেখা দিলে তেল ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এছাড়া কোনো সমস্যা মনে করলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



