লাইফস্টাইল ডেস্ক : ওজন কমানোর অত্যন্ত কার্যকর উপায় হিসেবে ইদানীং বেশ জনপ্রিয় গ্রিন কফি। শরীরের বাড়তি মেদ কমানোর জন্যে একে বলা হচ্ছে ওয়েট লস ম্যাজিক। তাই দিন দিন ওজনসচেতন মানুষের কাছে গ্রিন কফির জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। আসলেই কি এই গ্রিন কফি মেদ কমাতে কার্যকর? চলুন জেনে নিই।
কী এই গ্রিন কফি
গ্রিন কফি মূলত সাধারণ কফি বীজই। তবে সাধারণ কফি রোস্ট করা হলেও গ্রিন কফি রোস্ট করা (ভাজা) হয় না। ফলে এর পুষ্টি উপাদান থাকে অক্ষুণ্ন। আবার রোস্ট করা হয় না বলে এর স্বাদ ও গন্ধও সাধারণ কফির মতো হয় না। এটি খেতে অনেকটা ভেষজ চায়ের মতো। সাপ্লিমেন্ট হিসেবে গ্রিন কফির অনেক কদর রয়েছে। সাধারণ কফি বিন বা কফি পাউডার হিসেবেও এটি বাজারে পাওয়া যায়।
গ্রিন কফির যত গুণ
গ্রিন কফির জনপ্রিয়তা পাওয়ার অন্যতম কারণ ওজন কমাতে এর কার্যকারিতা। কিন্তু এ ছাড়া এর রয়েছে বেশ কয়েকটি গুণ। এবারে গ্রিন কফির সব স্বাস্থ্যগুণ একনজরে দেখে নিন।
১। ওজন কমায়
গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে, গ্রিন কফিতে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড থাকে। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে, বিএমআই ঠিক রাখতে আর ওজন কমাতে সাহায্য করে।
২। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
এ কফি বীজ রোস্ট করা হয় না বলে এতে ক্যাফেইনের পরিমাণ কম থাকে। তাই এ কফি খেলে রক্তচাপ বাড়ে না। তাই যাঁরা ক্যাফেইনমুক্ত পানীয় পান করতে পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য একটি আদর্শ উষ্ণ পানীয় হতে পারে গ্রিন কফি।
৩। মেটাবলিজম বাড়িয়ে মেদ কমায়
এটি শরীরের মেটাবলিজম বাড়ায়, যা জমে থাকা চর্বি ভাঙতে সাহায্য করে। গ্রিন কফি খেলে ক্ষুধার ভাব কমে যায়। কিন্তু জমে থাকা মেদ ভাঙতে থাকে। এ থেকে শক্তি পায় আমাদের শরীর। এতে কম খেলেও ক্লান্ত লাগে না। তাই গ্রিন কফি পান করার সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের বাড়তি ওজন অনেকটাই কমানো সম্ভব।
৪। রক্তের শর্করা কমায়
গ্রিন কফি ডাইজেস্টিভ সিস্টেম বা পরিপাকতন্ত্রে কার্বোহাইড্রেট শোষণে সাহায্য করে। এতে রক্তের শর্করা কমে যায়। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে বা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে। এতে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য ঠিক থাকে।
৫। হার্ট ভালো রাখে
গ্রিন কফিতে থাকা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হার্টকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড রক্তচাপ ও লিপিডের স্তরকে ইতিবাচকভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই হৃৎপিণ্ডকে ভালো রাখার পাশাপাশি হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়।
গ্রিন কফি কি শুধুই ভালো?
গ্রিন কফি সার্বিকভাবে স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং ওজন কমাতে বেশ কার্যকর। তবে স্থূলতার জন্য এটি কোনো স্থায়ী বা জাদুকরি সমাধান নয়। যাঁরা স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করেন, নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, তাঁদের জন্য গ্রিন কফি একটি ভালো সাপ্লিমেন্ট হতে পারে ওজন কমানোর জন্য। তাই ওজন কমাতে শুধু গ্রিন কফি খেলেই হবে না। এটি পান করার সঙ্গে সঙ্গে খাবারেও লাগাম টানতে হবে। সেই সঙ্গে করতে হবে শরীরচর্চা।
কিছু সর্তকতা
আপনার হাড় দুর্বল হলে, গর্ভাবস্থায়, ইনসমনিয়া বা উদ্বেগজনক সমস্যায় থাকলে গ্রিন কফি খাওয়া থেকে দূরে থাকুন। কখনো কোনো ভারী খাবার খাওয়ার পর এই কফি পান করবেন না।গ্রিন কফি সাধারণ কফির মতো পান করা যায় না। তাই এ কফি গ্রহণ করার পূর্বে প্যাকেটের নির্দেশনা মেনে চলুন। গ্রিন কফি কিনতে হলে বিশ্বাসযোগ্য জায়গা থেকে কিনুন। অন্যান্য সম্পূরক খাবারের মতো আপনি যদি গ্রিন কফি থেকে সর্বোচ্চ উপকার পেতে চান, তবে খাদ্যতালিকায় এ কফি যোগ করার পূর্বে অবশ্যই একজন ডায়েটিশিয়ান বা পুষ্টিবিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিন।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।