লাইফস্টাইল ডেস্ক : শিশু জন্মের পর থেকে ছয় মাস বয়সের আগেই যে ডায়াবেটিস হয়, তাকে বলে নবজাতকের ডায়াবেটিস। সুতরাং সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুটিও ডায়াবেটিস নিয়ে জন্মাতে পারে। তবে মনে রাখা দরকার, শিশুদের আরেক ধরনের ডায়াবেটিস হয়, যাকে বলে টাইপ-১ ডায়াবেটিস। নবজাতকের ডায়াবেটিস আর টাইপ-১ ডায়াবেটিস এক নয়। ছয় মাস বয়সের আগে টাইপ-১ ডায়াবেটিস সাধারণত হয় না।
টাইপ-১ ডায়াবেটিস হলো বিশেষ ধরনের ডায়াবেটিস, যার জন্য ইনসুলিনের ওপর আজীবন নির্ভরশীল থাকতে হয়। এর চিকিৎসায়ও ভিন্নতা রয়েছে। নবজাতকের ডায়াবেটিস ইনসুলিন দিয়ে চিকিৎসা করলে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর ক্ষতি হতে পারে। তাদের চিকিৎসার জন্য ডায়াবেটিসের ট্যাবলেট উপযুক্ত।
অনেক সময় সদ্যোজাত শিশুর রক্তে চিনির মাত্রা বেশি পাওয়া যায়। শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার প্রথম ১০ দিনেই এমন ঘটনা ঘটতে পারে। এটি হতে পারে অল্প সময়ের জন্য রক্তে চিনির মাত্রা বেড়ে যাওয়ায়। এটাকে বলে নিওনেটাল হাইপার গ্লাইসিমিয়া। সুতরাং সদ্যোজাত শিশুর রক্তে চিনির মাত্রা বেশি পেলেই ঘাবড়ে যাওয়ার দরকার নেই। সাধারণত শিশুর সেপসিস বা বড় ইনফেকশন, স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ কিংবা শিরাপথে গ্লুকোজ স্যালাইন দেওয়ার পর এমন হতে পারে।
নবজাতকের রক্তে চিনির মাত্রা দুই সপ্তাহের পরও স্থায়ী হলে তার ডায়াবেটিস নিয়ে ভাবতে হবে। মূলত বিশেষ কিছু জিনগত ত্রুটির কারণে অগ্ন্য়াশয় ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না। ফলে দেখা দেয় নবজাতকের ডায়াবেটিস। তবে আশার কথা হলো, এর ৫০ শতাংশ হতে পারে একেবারে অল্প কিছুদিনের জন্য। আরেক ধরনের নবজাতকের ডায়াবেটিস আজীবন থাকতে পারে।
শিশুর ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হওয়া একেবারে শুরুর লক্ষণ। যে বয়সে হামাগুড়ি দেওয়ার কথা, বসতে কিংবা হাঁটতে শেখার কথা তা দেরি হলে, পেশিতে দুর্বলতা, বুদ্ধি বৈকল্য, খিঁচুনি হলে এ ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
শিশুর ছয় মাস বয়সের পর যদি ডায়াবেটিস ধরা পড়ে তখন টাইপ-১ ডায়াবেটিস এবং নিওনেটাল ডায়াবেটিসের পার্থক্য নির্ণয় করে নিতে হবে। চিকিৎসায় দেরি বা ভুল চিকিৎসা হলে শিশুর জীবন বিপন্ন হতে পারে। চোখ, কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত এমনকি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে পারে।
স্থায়ীভাবে দেখা দিতে পারে স্নায়বিক বৈকল্য। ডায়াবেটিসের সালফোনাইল ইউরিয়া গ্রুপের ট্যাবলেট হতে পারে সহজ চিকিৎসা। আবার কারও ক্ষেত্রে ইনসুলিনও লাগতে পারে। এটি নির্ভর করছে কোন ধরনের জিনের কারণে ডায়াবেটিস হচ্ছে, তা নির্ণয় করার ওপর। আর তা করা গেলে আক্রান্ত শিশুটি থাকবে শঙ্কামুক্ত। লেখক: মেডিসিন স্পেশালিস্ট ও এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, সিএমএইচ, ঢাকা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।