লাইফস্টাইল ডেস্ক : দেয়াল ঘড়ি যেমন সময় সম্পর্কে জানান দেয়, তেমনি শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়িও আমাদের সঠিক সময় সম্পর্কে ইঙ্গিত দেয়। একে সহজ ভাষায় ‘দেহঘড়ি’ বলা হয়। ইংরেজিতে এটি সার্কাডিয়ান রিদম নামে পরিচিত। এই সার্কাডিয়ান রিদমের ছন্দ পতন ঘটে, যদি সঠিক সময়ে না ঘুমানোর অভ্যাস আপনার থাকে, এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮ এর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে দৈনিক ৮ ঘন্টার বিকল্প নেই। তাই ঘুমকে গুরুত্ব দিতেই হবে। যেহেতু ঘুমের মধ্যে রাতের ঘুম বেশি শরীরে প্রভাব ফেলে তাই জানা প্রয়োজন ঘুমের ‘আদর্শ সময়’ সম্পর্কে।
গবেষকরা বলছেন, আপনি কখন ঘুম থেকে উঠেন, কিংবা কখন ঘুমাবেন, কখন খাবেন সবকিছু্ই আপনার সার্কাডিয়ান রিদম অনুযায়ী হয়। যখনই সূর্য ডুবে যায়, তখনই সার্কাডিয়ান রিদম মস্তিষ্কে ঘুমের সংকেত পাঠানোর প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।
কিন্তু ব্যস্ত জীবন, আধুনিক প্রযুক্তি বিশেষ করে মোবাইল, ল্যাপটপ আর কম্পিউটার ব্যবহারের কারণে সার্কাডিয়ান রিদম সংকেত পাঠানোর পরও আমরা তা না মেনে রাতে জেগে থাকি। এটি দীর্ঘ সময়ে শরীরে মারাত্বক প্রভাব ফেলে।
বেশি রাত জাগার কারণে সার্কাডিয়ান রিদমে ছন্দ পতন ঘটে। আর এ ছন্দ পতনের নেতিবাচক প্রভাব হিসেবে আপনার শুরু হয় মুড অফ, বিষণ্ণতার মতো সমস্যার। ক্লান্তিবোধও আপনাকে ঘিরে ধরে আষ্টেপৃষ্ঠে। মেজাজ খিটখিটে থাকে, কাজে মনোযোগের অভাবসহ হজম শক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও হ্রাস পেতে শুরু করে ধীরে ধীরে।
তাই রাতে আদর্শ সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস জরুরী। আপনি কি জানেন, রাতে ঘুমানোর আদর্শ সময় কখন?
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের রিপোর্ট বলছে, ২০২১ সালের একটি গবেষণা প্রকাশ করা হয় যে, প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি রাতে ১০ টার মধ্যে ঘুমানো উচিত। যুক্তরাজ্যের এ গবেষণায় গবেষকরা বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে দাবি করেন যে, রাত ১০টায় ঘুমানো স্বাস্থ্যের জন্য ‘উপযুক্ত সময়’।
তবে কোনো কারণে রাত ১০টায় ঘুমাতে না পারলে অবশ্যই ১১ টার মধ্যে ঘুমানোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। কেননা রাতে দ্রুত না ঘুমালে আপনার গভীর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। সকালে তাড়াতাড়ি উঠার অভ্যাস থাকলে কিংবা প্রয়োজন থাকলে ৮ ঘন্টা ঘুমও পূরণ হয় না।
তবে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সবারই রাতে ঘুমানোর এ সময় উপযুক্ত কি না তা শতভাগ নিশ্চিত হয়ে বলার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু বেশি রাতে ঘুমাতে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ, একাধিক শারীরিক জটিলতার কারণ তা পরীক্ষিত তাই ১০-১১টার মধ্যে ঘুমানোর অভ্যাসই শরীরের জন্য ভালো। একই সাথে তারা প্রতিদিন এই নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস চালু করার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ হিসেবে তারা জানান, প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস না থাকলে তা শরীরের প্রাকৃতিক ‘সার্কাডিয়ান রিদম’-কে নষ্ট করে দেয়। যা শরীরের জন্য নানা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।