জুমবাংলা ডেস্ক : কৃষকেরা বলছেন, বেশি লাভের আশায় কিছু চাষি ভারতের ক্ষতিকর ‘ড্রাগন টনিক’ ব্যবহার করছেন। এতে করে ড্রাগনের ওজন বাড়লেও স্বাদহীন হয়ে পড়ছে। ফলে বাজারে এর বিরূপ প্রভাব তৈরি হয়েছে
অন্যান্য ফসলের তুলনায় ড্রাগন ফলের চাষ অধিক লাভজনক হওয়ায় ঝিনাইদহে প্রতি বছর বাড়ছে ড্রাগন চাষ। অসাধু-লোভী কিছু কৃষকের জন্য লাভজনক এই ফলের চাষ হুমকির মুখে।
স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, বেশি লাভের আশায় কিছু চাষি ভারতের ক্ষতিকর “ড্রাগন টনিক” ব্যবহার করছেন। এতে করে ফলের ওজন বাড়ছে। উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু স্বাদহীন হয়ে পড়ছে ফলটি। ফলে বাজারে এর বিরূপ প্রভাব তৈরি হয়েছে। শিগগিরই এই টনিক ব্যবহার বন্ধ করা না গেলে ড্রাগন চাষে ধস নামবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত মৌসুমে জেলায় ৮৬২ হেক্টর জমিতে ড্রাগন চাষ হয়েছিল। মোট উৎপাদন ছিল ১৯ হাজার ২২১ মেট্রিক টন। হেক্টর প্রতি গড় ফলন ছিল ২২.৩০ মেট্রিক টন। এর আগের মৌসুমে ২৫১ হেক্টর জমিতে ড্রাগন চাষ করা হয়েছিল।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর গাছে ফুল আসতে শুরু করেছে। ২৫ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে ড্রাগন ফল বাজারে আসবে। এই সময়ে অনুমোদনহীন ভারতীয় “ডক্টর ডন’স” নামে একটি ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে ড্রাগন ফলের আকার ও ওজন বৃদ্ধি পাবে। ফলের রঙেও পরিবর্তন আসবে। তবে ফলটির স্বাভাবিক স্বাদ থাকবে না।
কৃষকদের ভাষ্যমতে, এই ফল চাষে জেলার হাজার হাজার কৃষক ও কৃষিশ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। টনিক ব্যবহারের কিরূপ প্রভাবে বাজারে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হলে এই মানুষগুলো কর্মহীন হয়ে পড়বেন। সঙ্গে এই ফল ব্যবসায়ে জড়িতরাও লোকসানের মুখে পড়বেন।
জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বানুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, “ড্রাগন ফলে ক্ষতিকর টনিক ব্যবহার করায় স্বাদ আগের মতো থাকছে না। এছাড়া স্বাস্থঝুঁকির ভয়ও পাচ্ছি। চিকিৎসক আমার ছেলের হজমের সমস্যার জন্য ড্রাগন ফল খাওয়াতে বলেছেন, তবে আমি খাওয়াতে সাহস পাচ্ছি না।”
কালীগঞ্জের ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের ড্রাগন চাষী কবিরুস সোবাহান বলেন, “জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অসাধু ড্রাগন চাষিরা যেভাবে টনিক ব্যবহার শুরু করেছেন তাতে ড্রাগন চাষে ধস নামা সময়ের ব্যাপার। টনিক ব্যবহার বন্ধে সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে।”
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আজগর আলী বলেন, “ড্রাগনে টনিক ব্যবহার মানবদেহে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। আমরা চাষিদের টনিক ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করছি। এরপরও যদি তারা টনিক ব্যবহার বন্ধ না করে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।