ধর্ম ডেস্ক : পবিত্র বায়তুল মোকাদ্দেসকে বুকে ধারণ করছে যে ফিলিস্তিন সে দেশে দুই হাজারেরও বেশি বছর আগে অলৌকিকভাবে জন্মগ্রহণ করেন হজরত ঈসা (আ.)। আল্লাহর কুদরতে পৈতৃক সম্পর্ক ছাড়াই কুমারী মায়ের গর্ভে জন্মলাভ করেন এ নবী। হজরত ঈসা (আ.)-এর ওপর নাজিল হয় আসমানি কিতাব ইনজিল।
হজরত ঈসা (আ.) আগের সব নবী ও আসমানি কিতাবের সত্যায়নকারী এবং সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমনের সুসংবাদ দান করেন। হজরত ঈসা (আ.) ছিলেন অন্য সব নবী-রসুলের মতোই পবিত্র পুরুষ। আল কোরআনে তাঁর নাম ২৫ বার উল্লেখ হয়েছে। হজরত ঈসা (আ.)-এর জননী মরিয়মের নামে কোরআনে একটি স্বতন্ত্র সুরা রয়েছে।
মরিয়ম শব্দটি কোরআনে ৩৫ বার উল্লেখ হয়েছে। হজরত ঈসা (আ.)-এর সৃষ্টি হজরত আদম (আ.)-এর সঙ্গে অনেকাংশে তুলনীয়। ইরশাদ হয়েছে, “আল্লাহর কাছে নিশ্চয় ঈসা (আ.)-এর দৃষ্টান্ত আদম (আ.)-এর দৃষ্টান্তসদৃশ। তিনি তাকে মৃত্তিকা থেকে সৃষ্টি করেন; এরপর তাঁকে বলেন ‘হও’, ফলে সে হয়ে গেল।” (সুরা আলে ইমরান, আয়াত ৫৯) সুরা মরিয়মে হজরত ঈসা (আ.)-এর জন্ম সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ মরিয়মের কাছে জিবরাইল ফেরেশতাকে পাঠান। মানুষের রূপ ধারণ করে সে তার সামনে আত্মপ্রকাশ করে। জিবরাইল মরিয়মকে বলেন, তোমাকে এক পবিত্র পুত্র দান করার জন্য আল্লাহ আমাকে পাঠিয়েছেন। মরিয়ম ফেরেশতাকে বলেন, কেমন করে আমার পুত্র হবে, আমাকে তো কোনো পুরুষ স্পর্শ করেননি। আমি ব্যভিচারিণীও নই। জিবরাইল বলেন, আল্লাহর কাছে সব কিছুই সহজসাধ্য। কুমারী নারীর গর্ভে পুরুষের সংস্পর্শ ছাড়াই সন্তান জন্মদান মানুষের জন্য এক নিদর্শন। এটি আল্লাহ-প্রদত্ত অনুগ্রহ এবং স্থিরিকৃত বিষয়। ঈসা ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর মরিয়ম তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে উপস্থিত হলেন। তারা কুমারীর মাতৃত্বলাভকে সমালোচনার দৃষ্টিতে দেখল এবং বলল তোমার পিতামাতা অসৎ কিংবা ব্যভিচারী ছিল না, তুমি এ কোন অদ্ভুত কাণ্ড ঘটালে? চারদিকের তীব্র বাক্যবাণে বিপর্যস্ত মরিয়ম তাঁর সম্প্র্রদায়ের লোকদের বললেন, তোমরা এ শিশুর কাছে জিজ্ঞাসা কর কেন অদ্ভুত কাণ্ড ঘটল। লোকেরা বলল, যে কোলের শিশু তার সঙ্গে আমরা কেমন করে কথা বলব? সে (শিশু ঈসা আ.) বলল, ‘আমি তো আল্লাহর বান্দা। তিনি আমাকে কিতাব দিয়াছেন, আমাকে নবী করেছেন।
যেখানেই আমি থাকি না কেন তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন, তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যত দিন জীবিত থাকি তত দিন সালাত ও জাকাত আদায় করতে। আর আমাকে আমার মাতার প্রতি অনুগত করেছেন এবং তিনি আমাকে করেননি উদ্ধত ও হতভাগ্য; আমার প্রতি শান্তি যেদিন আমি জন্মলাভ করেছি, যেদিন আমার মৃত্যু হবে এবং যেদিন জীবিত অবস্থায় আমি উত্থিত হব। এই-ই হলো মরিয়ম তনয় ঈসা (আ.)। সত্য কথা, যে বিষয়ে উহারা বিতর্ক করে।’ (সুরা : ১৯ মরিয়ম, আয়াত : ১৬-৪০)।
লেখক : মুহম্মাদ আশরাফ আলী, ইসলামবিষয়ক গবেষক, সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।