জুমবাংলা ডেস্ক : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইন গেমসের কমিউনিটিতে খুঁজে খুঁজে স্কুল কলেজে পড়ুয়া কিশোরী মেয়েদের টার্গেট করতেন বেসরকারি বিশ্বাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসিউর রহমান শিশির। ফাঁদ পাততেন অনলাইনে পাবজি ও ফ্রি ফায়ার খেলার গ্রুপগুলোতে। এরপর গেম খেলার দলে নিয়ে শুরু করতেন নিজের আসল উদ্দেশ্যে হাছিলের মিশন।
শিশিরের পাতা ফাঁদে পা দেয়া অল্প বয়সী কিশোরীদের নিয়ে গেমের দল গঠন করে শুরু করতেন প্রেম।
এরপর মোবাইল নম্বর ও হোয়াটসঅ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আইডি নিয়ে নিয়মিত কথা বলতেন। পরে যা গড়ায় প্রেমের সম্পর্কে। এরপর গোপনে প্রেমিকার সঙ্গে আপত্তিকর মুহুর্তের ভিডিও ও ছবি তুলে রাখতেন শিশির। আর এগুলোকে হাতিয়ার বানিয়ে আরও আপত্তিকর ছবি-ভিডিও ও টাকা পয়সা আদায় করতেন। গত এক বছরে অন্তত ২০ কিশোরী শিশিরের ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তার।
এক ভুক্তভোগীর বোনের অভিযোগেরে প্রেক্ষিতে তাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইমের (দক্ষিণ) বিভাগ।
গতকাল সোমবার গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার মোল্লাপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় মোবাইল ফোন ও দুটি সিম উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, অনলাইনে বেশ কিছু গেমস খেলার জন্য পার্টনার প্রয়োজন হয়। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গ্রেপ্তার শিশির গত কয়েক বছর ধরে উঠতি বয়সী কিশোরীদের নিয়ে গ্রুপে গেমস খেলার জন্য সংগ্রহ করত। গেইম খেলার সময় তার পার্টনার হয়ে খেলার সুযোগে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করত।
এরপর কৌশলে মোবাইল নম্বর, হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর, ইনস্টাগ্রাম আইডিও ফেসবুক আইডি সংযুক্ত হয়ে বন্ধুত্ব চলাকালে তাদের বিভিন্ন ধরণের প্রলোভন দেখিয়ে ভিডিও কলে কথা বলত। একসময় এই মেয়েদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে নগ্ন ছবি ও পর্ণ ভিডিও পাঠিয়ে অনৈতিককাজে প্রলুব্ধ করত। এরপর সেই সময়ের দৃশ্য স্ক্রীন রেকর্ডারের মাধ্যমে রেকর্ড করত। পরবর্তীতে সেই ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে আরও একান্ত ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও করতে বাধ্য করত।
এমন কি এই ভিডিওকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ভুক্তভোগীদের টাকা অথবা শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করত। কেউ অবৈধ সম্পর্কে না জড়াতে চাইলে অথবা দাবিকৃত টাকা না দিতে চাইলে ভুক্তভোগীদের আত্মীয়-স্বজনদের পাঠানো পাশাপাশি অনলাইনে ছেড়ে দিত। সম্প্রতি এক ভুক্তভোগীর সঙ্গে একই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি বড় বোনকে জানাল তিনি একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে গাজীপুরের জয়দেবপুরে অভিযান চালিয়ে শিশিরকে গ্রেপ্তার করে গোয়ে পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।