আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নানা ধরনের কাজের জন্য অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। এটি সরকারি-বেসরকারি হতে পারে। তবে বন্দুকের ব্যবসা করতে অনুমোদন বা লাইসেন্স লাগে, বারের জন্যও অনুমোদন প্রয়োজন, তাই বলে মাছ রান্না করতে অনুমতি, তাও আবার সরকারের- এত দূর ভাবতে মন সাড়া দেয় না।
জাপানে এমন এক মাছ রয়েছে যা রান্না করতে সরকারের অনুমোদন অর্থাৎ সেই পাচকের লাইসেন্স লাগবে। এবং তাকে পরীক্ষা দিয়ে এটি অর্জন করতে হবে। লাইসেন্স না-থাকা সত্ত্বেও কোনো পাচক এই মাছ রান্না করলে তাকে গুণতে হবে জরিমানা।
এই মাছের নাম পাফার মাছ যা ‘ফুগু মাছ’ নামেও পরিচিত। ফুগু ডিশ বিশ্বের অন্যতম দামী এবং সুস্বাদু খাবার। কিন্তু সুস্বাদু হলে কি হবে- এই মাছ খুব বিষাক্ত। এর পিত্তথলিতে থাকে মারাত্মক বিষ যা মৃত্যু ঘটাতে সক্ষম। রান্নার সময় খুবই সতর্কতার সাথে পিত্তথলি ফেলে দিতে হয়। যদি অল্প পরিমাণেও পিত্তথলি কেউ খেয়ে ফেলে মৃত্যু না হলেও তার প্যারালাইজড প্রায় নিশ্চিত। বলা হয়, গোখরা সাপের চেয়ে দশগুণ বেশি বিষ থাকে এই মাছের পিত্তথলিতে।
বিশেষ রাঁধুনী ছাড়া এই খাবার কেউ রান্না করতে পারে না। এ জন্য প্রয়োজন হয় লাইসেন্সের। লাইসেন্স পাওয়ার ঝক্কিও কম নয়। এ জন্য দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগে। দিতে হয় পরীক্ষা। দুই ধাপে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমে লিখিত পরীক্ষায় পাস করতে হয়, এরপর উত্তীর্ণ সবাইকে দেওয়া হয় একটি ফুগু মাছ। নির্ধারিত ২০ মিনিটের মধ্যে এই মাছের বিষমুক্ত ও বিষযুক্ত অংশ আলাদা করে ট্রেতে রাখতে হয়।
এখানেই শেষ নয়। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের প্রস্তুত করতে বলা হয় ফুগু মাছের একটি ডিশ বা আইটেম। সেই আইটেম বানানোর পর আবার তাকেই খেয়ে প্রমাণ করতে হয় তিনি সুস্থ আছেন কি না! এভাবে সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে একজন অভিজ্ঞ ফুগু শেফের অধীনে থেকে ২ বছর প্রশিক্ষণ নেয়ার পর লাইসেন্স মেলে সেই নতুন শেফের।
ফুগু মাছের চাহিদার অন্যতম কারণ স্বাদ। অনেকের মতে, জাপানীরা ফুগু মাছের রেসিপি খেয়ে প্রেমে ব্যর্থ হওয়ার কষ্ট ভুলে যান। জাপানে এই মাছের চাহিদা অনেক। সরকার অনুমোদিত অনেব ফুগু রেস্টুরেন্ট রয়েছে দেশটিতে। মাছটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়। এবং এই মাছ রান্না করার জন্য প্রতিবছর প্রায় হাজারখানেক শেফ অনুমতি পেয়ে থাকেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।