জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী শনিবার (২০ ডিসেম্বর) একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে।
এদিন সিঙ্গাপুর সময় রাতে সব প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে না ফেরার দেশে চলে গেছেন আধিপত্যবাদবিরোধী প্লাটফর্ম ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদি। সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা ওসমান হাদি ‘ইনকিলাব মঞ্চ’ গড়ে তুলে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে আলোচনায় আসেন। বিভিন্ন টেলিভিশনের টক শোতেও নিয়মিত আমন্ত্রণ পেতে থাকেন তিনি। তার যুক্তিতর্কের অনেক ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। তিনি আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার মাসখানেক আগে হত্যার হুমকি পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন ওসমান হাদি। তিনি গত নভেম্বরে নিজের ফেসবুক পেজে বলেছিলেন, দেশি-বিদেশি অন্তত ৩০টি নম্বর থেকে তাকে ফোনকল করে এবং মেসেজ পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ওই পোস্টে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ‘খুনি’ ক্যাডাররা তাকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখছে। তবে প্রাণনাশের আশঙ্কা সত্ত্বেও ইনসাফের লড়াই থেকে পিছিয়ে যাবেন না তিনি।
১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় প্রচারে যাওয়া ওসমান হাদিকে গুলি করে মোটরসাইকেলে আসা দুই সন্ত্রাসী। রিকশায় থাকা হাদি মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর তাকে নেওয়া হয় এভারকেয়ার হাসপাতালে। অবস্থা গুরুতর দেখে সেখান থেকে হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যায় সরকার।
তার চিকিৎসা দেখভালের জন্য প্রতিনিধিও পাঠানো হয় সরকার থেকে। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় বুধবার রাতে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে হাদির জন্য দোয়া ও প্রার্থনা করার অনুরোধ জানান।
এদিকে, ওসমান হাদিকে গুলিতে জড়িত মূল সন্দেহভাজন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ফয়সল করিম মাসুদ ও তার সহযোগী আলমগীর শেখ। তারা ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সূত্র।
তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৪ জনকে আটক ও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র্যাব। তাদের মধ্যে ফয়সালের বাবা হুমায়ুন কবির (৭০) ও মা হাসি বেগম (৬০), স্ত্রী সাহেদা পারভিন সামিয়া ও শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু রয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



