জুমবাংলা ডেস্ক : রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচরের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় হানিকুইন জাতের আনারসের আগাম ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এবার হানিকুইন জাতের আনারসের ফলন ভালো হওয়াতে ও আগাম ফলনে অনেকটা লাভবান হবে বলে আশা এখানকার কৃষকদের। জ্যৈষ্ঠ মাস আনারসের মাস হলেও বর্তমানে জেলার নানিয়ারচরে কৃষি বিভাগের পরামর্শমতে বিশেষ পদ্ধতিতে হরমোন ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতি বছরই উৎপাদিত হচ্ছে উচ্চ ফলনশীল আগাম আনারস হানিকুইন। দেশের সব জায়গাতে এ হানিকুইন জাতের এ আনারসের ফলন পাওয়া যায় না।
রাঙ্গামাটি জেলার ১০টি উপজেলার মধ্যে আনারসের জন্য সবচেয়ে বিখ্যাত নানিয়ারচর উপজেলা। নানিয়ারচর উপজেলার মধ্যে বেশীরভাগ মানুষই তাদের পরিত্যক্ত বাগানগুলোতে আনারসের চাষ করে থাকেন। আনারসের চাষ করে এখানে স্বাবলম্বী হচ্ছেন নানিয়ারচর এলাকার মানুষ।
উপজেলার বুড়িঘাটের আনারস মো: আনোয়ার হোসেন ও ধনকুলো চাকমা বাংলদেশ সংবাদ সংস্থাকে(বাসস) বলেন, আনারস চাষে অভিজ্ঞতা না থাকলে আনারস চাষ করা সম্ভব নয়। তারা জানান, ভালো ফলনের জন্য অক্টোবর মাসের আগেই আনারস চাষের জন্য পাহাড়ের জমি প্রস্তুত করতে হয়।
আনারসের চারা তুলে তা প্রস্তুত রেখে প্রায় ১ মাসের চেয়ে বেশি সময় লেগে যায় জমি ঠিকঠাক করে আনারস চাষের উপযোগী করে তুলতে। তারপরে সারি সারি করে পাহাড়ের বুকে লাইন ধরে রোপণ করতে হয়। চারা রোপণের পর আনারস বাগানের সেবাযতœ,পরিচর্ষা ও আগাম ফলনের জন্য কৃষি বিভাগের সাথে পরামর্শ করে হরমোন ব্যবহার করতে হয়। তাতেই হানিকুইন জাতের আনারসের আগাম ভালো ফলন পাওয়া যায়। তবে স্বাভাবিকভাবে বাগানে আনারস আসতে আরেকটু সময় বেশী লাগে বলে জানান কৃষক। বর্তমানে পাহাড়ে উৎপাদিত হাইব্রিড আনারস বছরে ২ বার ফলন আসে তাতে শীত মৌসুমের আগেই আনারস বাজারে দেখা যায়।
বর্তমানে নানিয়ারচরের পরিত্যক্ত পাহাড়ে পাহাড়ে প্রচুর পরিমাণে আনারসের চাষ হচ্ছে। পাহাড়ের এসব সুস্বাদু আনারস স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলাতেও নিয়ে যাচ্ছে পাইকার ব্যবসায়ীরা। নানিয়ারচরের আনারস চাষি নুরুল ইসলাম বলেন, আমি নিজে হানিকুইন জাতের আনারসের বাগান করার পাশাপাশি নিজেও আনারস পাইকারি ও খুচরায় বিক্রি করি। এবার তার বাগনেও এ জাতের আনারসের ফলন ভালো হয়েছে বলে জানান তিনি।
নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট, ইসলামপুর, বগাছড়ি, ঘিলাছড়ি ও ১৭/১৮ মাইল এলাকা জুড়ে পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় এলাকায় এখন শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন আনারস বাগান। কৃষকরা জানিয়েছেন বর্তমানে এক-একটি আনারস উৎপাদনে তাদের প্রায় ৫-৭ টাকা খরচ হয় এবং প্রতিটি আনারস সাইজ অনুসারে ১০-১৫ টাকা শুরু করে বড় আনারস প্রতিটি ২০-২৫ টাকা দামেও বিক্রি হয়।
রাঙ্গামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তপন কুমার পাল বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে(বাসস) জানিয়েছেন, এবার নানিয়ারচর উপজেলায় ১২১০ হেক্টর জমিতে আগাম ফলনশীল আনারস হানিকুইনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার অধিক ফলন হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের। উপজেলার ইসলামপুর, বুড়িঘাট, সাবেকক্ষন, ঘিলাছড়ির প্রায় জমিতে আনারসের আবাদ করা হয়েছে এবং উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় হানিকুইন জাতের আনারসের আগাম ফলন ভালো হয়েছে।
তিনি আরো জানান, কৃষক নিজ নিজ মালিকানাধীন জমিসহ অন্যদের কাছ থেকে জমি বর্গা নিয়েও এসব আনারসের চাষ করে থাকেন। এসব আনারস বাগানে কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী নানিয়ারচর কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে ওষুধের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। এবার নানিয়ারচরসহ জেলার অন্যান্য কয়েকটি উপজেলাতেও আনারসের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।