জুমবাংলা ডেস্ক : রমজান মাসে দেশিও পেঁয়াজ উঠায় পণ্যটির ঝাঁজ অনেকটাই কমেছে। বর্তমানে বাজারে এক কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। সেখানে ২০ টাকা কেজি দরে বিদেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। তারপরও টিসিবির পেঁয়াজসহ পুরো প্যাকেজ নিতে আগ্রহী নন ক্রেতারা।
অপরদিকে টিসিবির পরিবেশকরা নিজেদের বরাদ্দের সব পণ্য বিক্রির জন্য পেঁয়াজ ছাড়া অন্যান্য পণ্য দিচ্ছে না। এ নিয়ে পরিবেশকের বিক্রয়কর্মীদের সঙ্গে ক্রেতাদের বাহাস নিয়মিতই চলছে। পচা পেঁয়াজের কারণে কেউ নিতে চাচ্ছেন না। কিন্তু টিসিবি বাধ্যতামূলকভাবে অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে পেঁয়াজ দিচ্ছে। বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে গেছে। ফলে পঁচা পেঁয়াজ টিসিবির গলার কাঁটা হয়ে গেছে।
দামের জন্য টিসিবির পেঁয়াজে আগ্রহ থাকলেও মান খারাপ হওয়ায় ক্রেতারা অন্য মালামাল নিলেও পেঁয়াজ নিতে চায় না। কারণ, হিসেবে টিসিবির পণ্য কিনতে আসা মানুষদের একটাই অভিযোগ, টিসিবির পেঁয়াজ অত্যন্ত নিম্নমানের। অনেক পেঁয়াজ পচা। ভালো পেঁয়াজের সঙ্গে খারাপ ও পচা মিলিয়ে দেন টিসিবির পরিবেশকরা। সেজন্য এ পেঁয়াজ নিতে চান না কেউ। তিন-চার কেজি পেঁয়াজ কিনলে এর মধ্যে এক কেজি পেঁয়াজ খাওয়া যায় না, এমন অভিযোগ করেছেন অনেক ক্রেতা।
এ বিষয়ে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ূন কবির বলেছেন, সঙ্কটের আশঙ্কায় বেশ কয়েক মাস আগে পেঁয়াজ আমদানি করে টিসিবি। ফলে, এসব পেঁয়াজ বিক্রি না করে উপায় নেই। পেঁয়াজের মান নিয়ে তিনি বলেন, সব পেঁয়াজ বিদেশ থেকে ফ্রিজিং করে আনা। সেই পেঁয়াজ যখন বস্তা থেকে খোলা হয়, তখন কিছুটা ভেজা থাকে। কোনো পেঁয়াজ পচা থাকলে সেটা বাদ দিয়ে বিক্রির জন্য পরিবেশকদের বলা হয়েছে। পচা পেঁয়াজ বেছে আলাদা করে বাকিগুলো বিক্রির নির্দেশনা দেওয়া আছে। নষ্ট বা পচা পেঁয়াজ গ্রাহকদের কাছে বিক্রি না করার জন্য অতিরিক্ত পেঁয়াজও পরিবেশকদের দেওয়া হয়।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর রামপুরা বাজারে টিসিবির পরিবেশক কাশেম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবুল কাশেম বলেন, আমাদেরকে গুদাম থেকে যে পেঁয়াজ দেওয়া হয়, তার একটা অংশ পচা। আমরা বাধ্য হয়ে ক্রেতাদের কাছে সেগুলো বিক্রি করি। অবিক্রিত পেঁয়াজ টিসিবি ফেরত নেবে না। তখন লোকসান হবে।
তিনি আরও বলেন, টিসিবি ভালো পেঁয়াজ দিক বা যেগুলো অবিক্রিত থাকবে সেগুলো ফেরত নিক। তাহলে ক্রেতাদের সঙ্গেও আমাদের নিয়মিত ঝামেলা হয় না। রামপুরায় টিসিবির ট্রাকের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মো. মিলন মিয়া বলেন, ওরা প্যাকেজ বানিয়ে বিক্রি করছে। আমরা বাজার থেকে কিছুটা কম দামে পাই বলে এখান থেকে নিম্নমানের পেঁয়াজ কিনতে বাধ্য হচ্ছি।
পরিবেশকের বিক্রয়কর্মী সুলতান মাহমুদ বলেন, মাঝে মাঝে ভালো পেঁয়াজ বেশি থাকে। কিন্তু বেশির ভাগ পেঁয়াজ কালো দাগ পড়া। ওপরের অংশ ফেলে খেতে হবে। কিছু বস্তায় বড় পেঁয়াজ আছে, সেগুলো ভালো। আমরা চেষ্টা করছি, সবাইকে ভালো-খারাপ মিলিয়ে দিতে। কিন্তু, মানুষ টাকা দিয়ে নষ্টটা নিতে চায় না। তারা যেমন অসহায়, আমরাও।
জানা যায়, প্রতি ডিলারকে বর্তমানে প্রতিদিন সাড়ে ৭০০ কেজি পেঁয়াজ, ২৫০ কেজি ছোলা, ৫০০ লিটার তেল, ৫০০ কেজি করে চিনি ও ডাল এবং ২৫০ কেজি খেজুর বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। গতকালের টিসিবি খোলা ট্রাকের বিক্রয় কার্যক্রমের একজন ক্রেতাকে দুই লিটার তেল ২২০ টাকা, দুই কেজি চিনি ১১০ টাকা, দুই কেজি মসুর ডাল ১৩০ টাকা, চার কেজি পেঁয়াজ ৮০ টাকা, দুই কেজি ছোলা ১০০ টাকা এবং এক কেজি খেজুর ৮০ টাকা প্যাকেজ হিসেবে নিতে হচ্ছে। প্যাকেজ মূল্য ৭২০ টাকা। পেঁয়াজ ছাড়া অধিকাংশ ক্রেতা প্যাকেজের অন্যান্য পণ্য নিতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু তাদেরকে সাফ বলে দেওয়া হয় পেঁয়াজসহ প্যাকেজ নিতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।