সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : চট্টগ্রামে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পাইলট আসিম জাওয়াদ রিফাতের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে মা নিলুফা খানম পাগল প্রায়। ছেলের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকেই বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। তার আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে আশপাশের আকাশ-বাতাস।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ মে) বিকেলে মানিকগঞ্জ পৌর শহরে আসীম জাওয়াদ রিফাতের বর্তমান বাসায় গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে।
আসিম জাওয়াদ রিফাতের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে। তার বাবা ডা. মোহাম্মদ আমানউল্লাহ একজন চিকিৎসক। আর মা নিলুফার খানম সাভার ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকা। রিফাত নারায়ণগঞ্জে বিয়ে করেছেন। তার স্ত্রীর নাম অন্তরা আক্তার। মৃত্যুকালে সে এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তান রেখে গেছেন।
জানা যায়, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানাধীন জহুরুল হক ঘাঁটির বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান (YAK-130, RUSSIAN) যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিধ্বস্ত হয়ে চট্টগ্রাম বোট ক্লাবের কাছে ১১নং ঘাটের নতুন পতেঙ্গা টার্মিনালের বিপরীত পাশে এইচ এম স্টিল ফ্যাক্টরির সামনে কর্ণফুলী নদীতে পাড়ে তলিয়ে যায়। এ ঘটনায় আহত ২ পাইলটের মধ্যে উইং কমান্ডার সুহান, যিনি আহত অবস্থায় জহুরুল হক ঘাটির মেডিকেল স্কোয়াড্রনে চিকিৎসাধীন এবং স্কোয়াড্রন লিডার অসীম জাওয়াদ গুরুতর আহত অবস্থায় বিএনএস পতেঙ্গা হাসপাতাল, বিএনএস ইসা খাঁতে চিকিৎসাধীন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মারা যান।
নিহত আসিম জাওয়াদেরর মামা বাংলাদেশ বেতারের মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা ও প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সুরুয খান জানান, আসীম জাওয়াদ রিফাত একজন চৌকস অফিসার ছিল। ছোটবেলা থেকেই সে বিমানবাহিনীতে যোগ দেবে এমন স্বপ্ন ছিল। রিফাতের স্ত্রী, ছয় বছরের মেয়ে আয়জা ও এক বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। আসিম জাওয়াদ তার স্ত্রী অন্তরা আক্তার ও ৬ বছরের একটি মেয়ে এবং দেড় বছরের এক ছেলেকে নিয়ে চট্টগ্রাম বিমানবাহিনীর ঘাঁটি জহরুল হকের অফিসার্স আবাসিক এলাকার নীলিমা’তে থাকতেন। আর মা বাবা বর্তমানে মানিকগঞ্জ পৌর শহরের দাশড়া এলাকায় থাকেন।
তিনি আরো বলেন, আসিম জাওয়ান অত্যন্ত মেধাবী ছিল। এক মাত্র ছেলেকে হারিয়ে তার মা এখন পাগল প্রায়। তাকে হারিয়ে পরিবার শোক কাটিয়ে উঠতে পারবে কিনা জানা নাই। সেই সাথে আজ বিমান দুর্ঘটনার কারণে দেশ একজন চৌকস অফিসারকে হারালো।
আসিম জাওয়াদের খালাতো ভাই দেওয়ান রাজীব মাহমুদ জানান, বিমান বাহিনীর চৌকস অফিসার ছিলেন আসিম জাওয়াদ রিফাত। তার মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকেই পুরো পরিবার শোকে বিহ্বল। রিফাতের মরদেহ আনতে তার বাবা ডা. মোহাম্মদ আমানউল্লাহ ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে পৌছে গেছেন। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে তার মরদেহ মানিকগঞ্জ এসে পৌছলে তাকে সেওতা কবরস্থানে দাফন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।