আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এদেশের অধিকাংশ মানুষই দারিদ্র সীমার মধ্যে রয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কেন প্রচুর নোট ছাপিয়ে দেশবাসীকে কোটিপতি কেন বানায় না? যদি এই প্রশ্নটিই আপনার মাথায় এসে থাকে, তাহলে জানিয়ে রাখি তখন দেশ থেকে দারিদ্র হয়ত চলে যাবে, কিন্তু বড় বিপদে পড়বে দেশ।
আপনি হয়তো ভাবছেন, সরকার প্রচুর নোট ছাপতে শুরু করলে তখন গরিবরাও ধনী হয়ে যাবে। কিন্তু অর্থনীতিবিদদের মতে, কোন দেশ নিজের ইচ্ছামত নোট বানাতে পারেনা। নোট ছাপার জন্য বিশেষ নিয়মকানুন রয়েছে। যদি দেশের প্রচুর নোট ছাপা হয় তাহলে সকলের হাতে অনেক টাকা থাকবে এবং এর চাহিদাও বেড়ে যাবে। এর পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি চরমসীমায় পৌঁছে যাবে।
বাস্তবে এই ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিল আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুয়ে। সে দেশের সরকার প্রচুর নোট ছাপিয়ে এই ভুল করেছিল। যে কারণে সেখানকার মুদ্রার মূল্য এতটাই কমে গিয়েছিল যে রুটি বা ডিমের মতো সাধারণ জিনিস কিনতে হলেও ব্যাগ ভর্তি নোট নিয়ে যেতে হতো। অত্যধিক নোট ছাপার কারণে সেখানে ১ মার্কিন ডলারের মূল্য ২৫ মিলিয়ন জিম্বাবুয়ে ডলারের সমান হয়ে যায়।
ভারতবর্ষেও কিছুটা মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। তাহলে এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কেন প্রচুর নোট ছাপায় না। যদি এমনটা করে, তাহলে ভারতের অবস্থাও জিম্বাবুয়ের মতোই হবে। তাই ভারত সরকার কখনোই চাইবেন না যে দেশে এমন পরিস্থিতি তৈরি হোক। এইসব বিষয় মাথায় রেখেই অতিরিক্ত নোট ছাপানো হয় না।
ন্যূনতম রিজার্ভ সিস্টেমের ভিত্তিতে নোট ছাপানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ১৯৫৭ সাল থেকে ভারতবর্ষে এই নিয়ম চালু হয়েছে। উল্লেখ্য, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তহবিলের কমপক্ষে ২০০ কোটি টাকার সম্পদ রাখার অধিকার রয়েছে। এত সম্পদ রাখার পরই আর বি আই সরকারের সম্মতি নিয়েই প্রয়োজন অনুযায়ী নোট ছাপাতে পারে।
ভারতবর্ষে মোট চারটি প্রেসে নোট ছাপা হয় — মহারাষ্ট্রের নাসিক, মধ্যপ্রদেশের দেওয়াস প্রেস, কর্ণাটকের মহীশূর এবং পশ্চিমবঙ্গের শালবনিতে। সিকিউরিটি প্রিন্টিং এবং মেন্টিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে এখানে নোট ছাপানোর কাজ হয়। এদিকে মুম্বাই, কলকাতা, হায়দ্রাবাদ ও নয়ডাই কয়েন তৈরি হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।