প্রজনন ক্ষমতা কমে গেলে যা করবেন

প্রজনন ক্ষমতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক : স্থুলকায়া কোনও নারী গর্ভধারণের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ওজনের নারীর চেয়ে কম ফার্টাইল। বর্তমানে জানা গেছে যে, স্থুলকায়া পুরুষদেরও বন্ধ্যা বা ইনফার্টাইল হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। একজন পুরুষের ওজন যত বেশি, প্রজননজনিত প্রতিবন্ধকতা তার ক্ষেত্রে তত বেশি। বি এম আই সূচক অনুসারে একজন স্থূলকায়া পুরুষ, যার বি এম আই ৩০ বা তারও বেশি, একজন স্বাভাবিক মানের বি এম আই যুক্ত (২০ থেকে ২৫) পুরুষের চেয়ে অর্ধেক উর্বর। এই রকম পুরুষের শুক্রাণুতে টুকরো টুকরো ডি এন এ থাকার সম্ভাবনা খুব বেশি বলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

প্রজনন ক্ষমতা

ভারতের প্রজনন বিষয়ক চিকিৎসক ডা. গৌতম খাস্তগীর বলেন, বেশি ওজনযুক্ত পুরুষের ফার্টিলিটি কেন কমে এ বিষয়ে চিকিৎসকেরা এখনও দ্বিধান্বিত। একটি তত্ত্বানুসারে একজন অতিরিক্ত ওজনের পুরুষের বাড়তি মেদ জননাঙ্গের কাছে জমা হয়ে শারীরিক তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, যাতে স্বাস্থ্যকর শুক্রাণুর সংখ্যা ও গতিশীলতা বা গতিবেগ কমে যায়।

তিনি বলেন, স্পার্ম কাউন্ট ও স্পার্ম কোয়ালিটি বা গুণমান গ্রহণযোগ্য মাত্রায় থাকলে ইরেকটাইল ও ইজাকুলেটারি সমস্যায় ভোগা পুরুষদের সাহায্য করা সম্ভব। সমস্যার কারণ বিচার করে হয় অস্ত্রোপচার ও ইকসি (আই সি এস আই) আই ভি এফ-এর মাধ্যমে স্পার্ম পুনরুদ্ধার করে প্রেগন্যান্সি অথবা ওষুধ প্রয়োগে পুরুষটির লিঙ্গোত্থানে বা ইরেকশনে উদ্দীপনা সৃষ্টি করা যায়। রেট্রোগেড ইজাকুলেশনের সমস্যায় ওষুধ দিয়ে গতিমুখ পাল্টে দিতে পারলে স্বাভাবিকভাবে স্খলন বা ইজাকুলেশন হতে শুরু করে। যদি তাতে কাজ না হয় তবে মূত্র থেকে স্পার্ম পুনরুদ্ধারের পর আলাদা করে রাখা হয় এবং ইন্ট্রা-ইউটেরাইন ইনসেমিনেশনের সাহায্য নেওয়া হয়।

ডা. খাস্তগীর জানান, গর্ভসঞ্চারের সমস্যা সমাধানে দম্পতিদের মিলিতভাবে গোড়া থেকেই সাহায্যের জন্য আসা উচিত। যখন একজন সঙ্গীর (সাধারণত মহিলা) ওপরে অনুসন্ধান সংক্রান্ত পরীক্ষা চালানো হয়, তখন অন্য সঙ্গীটি খুব হতাশায় ভোগেন। তিনি জানেন পরীক্ষার ফলাফল যাই হোক না কেন, কয়েক সপ্তাহ/মাস পরে তাকেও একই পরীক্ষা দিতে হবে। তাই এক বছর বা ৬ মাসের বেশি সময় ধরে গর্ভসঞ্চার করার চেষ্টা চালিয়ে গেলে এবং মহিলাদের সঙ্গীর বয়স ৩৫ ঊর্ধ্ব হলে আপনাদের দু’জনেরই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আদর্শ বিচারে প্রথম পরীক্ষায় স্বাভাবিক ফল না পাওয়া গেলে শুক্রাণুর সংখ্যা পেতে পরবর্তী সিমেন টেস্ট ৩ মাস পরে করা উচিত।

অনেক পুরুষ আছেন, ফার্টিলিটি সমস্যায় কার কাছে যাবেন বুঝতে পারেন না। অথচ নারীরা জানেন যে, এ ব্যাপারে একজন স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ যোগ্যতম। বিষয়টিতে এখনও যেহেতু কিছুটা গোপনীয়তা রাখা হয়, তাই পুরুষরা প্রায়ই পরামর্শ পান না। যদি মনে করেন আপনি নিজে থেকে স্পার্ম টেস্ট করাবেন তা হলে কোনও ল্যাবরেটরিতে গিয়ে বীর্য পরীক্ষা করে নিতে পারেন। এর জন্য সামান্য খরচ হলেও ফলাফল হবে তথ্যবহুল।

ডা. খাস্তগীর বলেন, সাধারণত ৩ থেকে ৫ দিন শরীরী মেলামেশা না হয়ে থাকলে সিমেনের নমুনা নেওয়া হয়। ৫ দিনের বেশি নয় কারণ সে ক্ষেত্রে নমুনাটিতে মৃত স্পার্ম ( এ কারণে ঘন ঘন মিলিত হলে কনসেপশনের সম্ভাবনাটি বেশি) বেশি হারে থাকতে পারে। তিন দিনের কমও নয়, কারণ সম্প্রতি যৌনমিলন ঘটে থাকলে নমুনাটিতে যত পরিমাণ স্পার্ম থাকা উচিত, তত নাও থাকতে পারে।

কোনও স্পার্ম কাউন্টে যদি দেখা যায় যে প্রতি মিলিলিটারে ৫০ লক্ষেরও কম স্পার্ম আছে, তখন থাকে সিভিয়ার অলিগোজুস্পার্মিয়া বলে মনে করা হয়। বংশগত কারণে এ রকম হয়। ৭-১০ শতাংশ অলিগোজুস্পার্মিয়া পুরুষের ত্রুটি থাকে। যেমন, এদের y ক্রোমোজোমে কিছু বিশেষ বংশগত উপাদান থাকে না। ফলে এই সব বন্ধ্যাত্ব বা ইনফার্টিলিটি পরবর্তী প্রজন্মের শিশুদের মধ্যে বাহিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং কিছু বিশেষ ধরনের জন্মগত ঝুঁকি বেড়ে যায়।

আরও যতদিন বৃষ্টি থাকতে পারে, জানাল আবহাওয়া অফিস

খুব কম সংখ্যক নড়াচড়া করা শুক্রাণু শনাক্ত হলে যৌথভাবে ইন্ট্রাসাইটোপ্লাজমিক স্পার্ম ইঞ্জেকশন এবং আই ভি এফ ব্যবহার করে যেতে পারে। প্রকৃতপক্ষে একটি মাত্র সক্ষম শুক্রাণু দিয়েই এই পদ্ধতিতে সাফল্য পাওয়া যায়। একটি শুক্রাণুকে আলাদা করে নিয়ে ই়ঞ্জেকশনের মাধ্যমে ডিম্বানুর মধ্যে প্রবেশ করানোর পদ্ধতি ১৯৯২ সালে বেলজিয়ামে প্রথম আবিষ্কৃত হয়।