আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফ্লোরিডা থেকে চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা করার তৃতীয় দিনে ওরিয়ন মহাকাশযান ‘কার্যক্ষমতার প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে।’ শুক্রবার নাসা কর্মকর্তারা এ কথা বলেছেন। মহাকাশযানটি আগামী বছরগুলোতে মহাকাশচারীদের চাঁদে নিয়ে যাবে। ১৯৭২ সালে শেষ অ্যাপোলো মিশনের পর থেকে এটিই হবে চন্দ্র পৃষ্ঠে পা রাখা প্রথম ফ্লাইট।
মানুষবিহীন এই প্রথম পরীক্ষামূলক ফ্লাইটি পাঠানোর মাধ্যমে যাচাই করে দেখা হচ্ছে মহাকাশযানটি চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ নিরাপদ কিনা তা নিশ্চিত করা। আর্টেমিস-১ মিশনের প্রধান মাইক সারাফিন বলেছেন, ‘আজ আমরা ওরিয়ন মহাকাশযানের কার্যকারিতা পর্যালোচনা করার জন্য মিলিত হয়েছি। এটির কর্মক্ষমতা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি।’
হিউস্টনের জনসন স্পেস সেন্টারের ওরিয়ন ম্যানেজার জিম গেফ্রে বলেছেন, মহাকাশযানে প্রায় ১৩ ফুট (চার মিটার) দীর্ঘ চারটি সৌর প্যানেল সঠিকভাবে স্থাপন করা হয়েছে এবং প্রত্যাশার চেয়ে বেশি শক্তি সরবরাহ করছে। টেক্সাসের সেই নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে মহাকাশযানটি চালিত হচ্ছে।
ওরিয়ন বর্তমানে পৃথিবী থেকে প্রায় ২,০০,০০০ মাইল (৩২০,০০০ কিলোমিটার) দূরে রয়েছে এবং মিশনের নির্ধারিত সিডিউল অনুযায়ী এর চারটি প্রধান থ্রাস্টে ইঞ্জিনের মধ্যে প্রথমটি চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই কার্যক্রম সোমবার সকালে সংঘটিত হবে। চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তির সুবিধা নেয়ার জন্য মহাকাশযানটিকে চন্দ্র পৃষ্ঠ থেকে ৮০ মাইল (১৩০ কিলোমিটার) দূরে রাখা হবে।
যেহেতু এটি চাঁদের দূরবর্তী অংশে ঘটবে, তাই নাসা প্রায় ৩৫ মিনিটের জন্য মহাকাশযানের সাথে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফ্লাইট ডিরেক্টর জেফ রাডিগান বলেন, ‘আমরা অ্যাপোলোর কিছু অবতরণ স্থান অতিক্রম করব, যদিও তারা অন্ধকারে থাকবে।’ ফ্লাইওভারের ফুটেজ নাসা প্রকাশ করবে।
চার দিন পরে, ইঞ্জিন থেকে একটি দ্বিতীয় থ্রাস্ট ওরিয়নকে চাঁদের চারপাশে দূরবর্তী কক্ষপথে স্থাপন করবে। মহাকাশযানটি চাঁদের বাইরে ৪০,০০০ মাইল দূর পর্যন্ত যাবে, যা হেবিট্যাবল (প্রাণের বাসযোগ্য) ক্যাপসুলের জন্য একটি রেকর্ড। তারপরে এটি পৃথিবীতে ফিরতি যাত্রা শুরু করবে। মাত্র ২৫ দিনের বেশি ফ্লাইটের পর ১১ ডিসেম্বরে প্রশান্ত মহাসাগরে অবতরণ করার সময় নির্ধারিত রয়েছে।
এই মিশনের সাফল্য আর্টেমিস-২ মিশনের ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে। যা অবতরণ ছাড়াই চাঁদের চারপাশে মহাকাশচারীদের নিয়ে যাবে। তারপরে আর্টেমিস-৩, যা অবশেষে চন্দ্র পৃষ্ঠে মানুষের প্রত্যাবর্তনকে চিহ্নিত করবে।
এই মিশনগুলো যথাক্রমে ২০২৪ এবং ২০২৫ সালে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সারাফিন শুক্রবার আরো বলেন, রকেটটি উড্ডয়নের সময় ১০টি বৈজ্ঞানিক মাইক্রো-স্যাটেলাইট স্থাপন করা হয়েছিল। তবে এর অর্ধেক প্রযুক্তিগত বা যোগাযোগের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।