এ টি এম তোহা : অব্যাহত লোকসানের মুখে দীর্ঘ পাঁচ বছর বন্ধ থাকার পর এবার পটিয়ার শিকলবাহার ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতি ও স্থাপনা নিলামে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা পিডিবি। ২০১৫ সাল থেকে এটি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চললেও ২০১৮ সালের পর এটি স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়। কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীর পটিয়ার কোলাগাঁও ইউনিয়নে ১৯৮৪ সালে গ্যাসনির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছিল। ৩৯ বছরের পুরোনো হওয়ায় এর পরিচালন ব্যয় বেড়ে যায়।
২০১৫ সাল থেকেই অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হচ্ছিল। সে সময় কেন্দ্রটির সঞ্চালন লাইনে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ট্রান্সফার স্থাপন করেও উৎপাদনে যেতে পারেনি কেন্দ্রটি।
শিকলবাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী কামরুদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, কেন্দ্রটি আগামী ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে নিলামে বিক্রি করে দেওয়া হবে। এজন্য টেন্ডার প্রক্রিয়ার কাজ করছে পিডিবি। আগামী ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে এটি অকশনে যেতে পারে। তিনি জানান, কেন্দ্রটির জনশক্তি ইতিমধ্যে পার্শ্ববর্তী ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়েছে। ২০১৯ সাল থেকেই পিডিবির ওয়েবসাইটে চট্টগ্রামের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর তালিকা থেকে শিকলবাহা ৬০ মেগওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে এটি বন্ধ করার কথা অনেক আগে থেকেই পিডিবি সদর দফতর থেকে বলা হচ্ছিল।
পিডিবির একটি সূত্র জানায়, গ্যাসনির্ভর হওয়ায় শিকলবাহা কেন্দ্রের উত্পাদনখরচ তুলনামূলক কম হলেও পুরোনো যন্ত্রপাতি দিয়ে এই কেন্দ্র চালু রাখা কঠিন হয়ে পড়েছিল। সে কারণে এটি বিক্রি করে সেখানে নতুন কোনো বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েই কাজ চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিডিবির চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চলের এক জন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শিকলবাহা ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন ব্যয় বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন খরচ থেকে ৪ গুণ কম ছিল। কেন্দ্রটির পুরোনো যন্ত্রপাতি সরিয়ে সেখানে নতুন যন্ত্রপাতি দিয়ে উৎপাদন শুরু করলে গ্রাহককে কম পয়সায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যেত।
স্থানীয় বাসিন্দারাও জানিয়েছেন, শিকলবাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশে বেসরকারি মালিকানায় আরও পাঁচটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। সেখান থেকে পিডিবি ১৬ টাকায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ক্রয় করে থাকে। অথচ ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উত্পাদনখরচ প্রতি ইউনিট পাঁচ টাকার কম। ঐ এলাকার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও শ্রমিক লীগ নেতা সামশুল ইসলাম জানিয়েছেন, সকল অবকাঠামো ঠিক রেখে নতুন করে যন্ত্রপাতি স্থাপন করলে এই কেন্দ্রটি থেকে কম খরচে প্রতিদিন ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। তবে কর্তৃপক্ষ চাইলে আরও বেশি উৎপাদন সক্ষমতা সম্পন্ন যন্ত্রপাতি স্থাপন করে কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা দ্বিগুণ করতে পারেন। সূত্র : ইত্তেফাক
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।