সেরিব্রোভাস্কুলার অ্যাক্সিডেন্টসের নাম শোনেননি এমন মানুষ কম থাকলেও সেরিব্রাল স্ট্রোকের কথা প্রায় সবাই শোনেছেন। আবার স্ট্রোক থেকে মৃত্যুর কথাও প্রায় সবার জানা। সেরিব্রোভাস্কুলার অ্যাক্সিডেন্ট বা স্ট্রোক কখনো ইঙ্গিত দিয়ে আসে না। আবার স্ট্রোক হওয়ার পর পরই হাসপাতালে যাওয়া না হলে ঝুঁকি থাকে।

স্ট্রোক হলে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে নেয়া না হলে অনেক ক্ষেত্রেই রোগীকে বাঁচানো যায় না। এ জন্য স্ট্রোক সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর কথা বলে থাকেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের নিউরোসার্জেন দেবর্ষি চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, স্ট্রোক দুই ধরনের হয়- ইস্কেমিক স্ট্রোক ও হেমার্যাজিক স্ট্রোক।
এ চিকিৎসকের ভাষ্যমতে―ইস্কেমিক স্ট্রোকে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আর হেমারেজিক স্ট্রোকে দুর্বল রক্তনালি ছিঁড়ে মস্তিষ্কে রক্তপাত হয়। উভয় ক্ষেত্রেই সার্জারির প্রয়োজন হয়। কিন্তু রোগী যদি সময়মত চিকিৎসা না পান, তাহলে মৃত্যু হতে পারে।
ডা. দেবর্ষি বলেন, যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে, তাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। হাইপারটেনশনের রোগী হলে প্রেশারের ওষুধ একদিনও বাদ দেয়া যাবে না। আবার গর্ভাবস্থায়ও প্রেশার বাড়ে। কখনো কখনো অসুস্থতাজনিত কারণ থেকেও প্রেশার বাড়ে। এ ক্ষেত্রেও স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এদিকে বর্তমান সময় অনেক কম বয়সীদেরও স্ট্রোক থেকে মৃত্যু হচ্ছে। বয়স ৪০ অতিক্রম হওয়ার আগেই থাবা বসাচ্ছে স্ট্রোক। সুস্থ-স্বাভাবিক মনে হলেও দেখা যায় হঠাৎ করেই স্ট্রোক হয়। এই সেরিব্রাল স্ট্রোকের কারণই বা কী? ডা. দেবর্ষি বলেন, কম বয়সে স্ট্রোকের পেছনে সেডেন্টারি লাইফস্টাইল দায়ী। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করা, শরীরচর্চা না করা এবং অনেক বেশি চাপ থেকেই স্ট্রোক বাড়ছে।
যেসব অভ্যাসে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে:
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি দ্বিগুণ। রক্তচাপ বাড়লে তা স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে হবে। ওষুধ বাদ দেয়া যাবে না। বংশগত কারণে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে আগে থেকেই সতর্ক থাকুন। নিয়মিত প্রেশার যাচাই করুন।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে পারে। এ জন্য খাদ্যাভ্যাসে খেয়াল রাখুন। খাবারে লবণের ব্যবহার যতটা সম্ভব কমিয়ে দিন। জাঙ্ক ফুড, প্যাকেটজাত খাবার এড়িয়ে চলুন। অত্যধিক সোডিয়ামযুক্ত খাবার বাদ দিন, এসবও রক্তচাপ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
সারাদিন শুয়ে-বসে থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। এ জন্য এক জায়গায় দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করার অভ্যাস থাকলে তা পরিবর্তন করুন। ওবেসিটি এড়াতে হবে। নিয়মিত শরীরচর্চার চেষ্টা করুন। ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস থেকেও স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। এ জন্য এসব অভ্যাসও বাদ দেয়ার চেষ্টা করুন। আর যেকোনো সমস্যা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে কালক্ষেপণ করবেন না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



