জুমবাংলা ডেস্ক: খলিলুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রে এসে অন্যের রেস্টুরেন্টে কাজ করেছেন। কঠোর পরিশ্রমে একটু একটু করে নিজেকে তৈরি করেছেন। শেফ হওয়ার স্বপ্নে পড়াশোনা করেছেন নিউইয়র্ক কুলিনারি ইনস্টিটিউটে। নিজে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান দিয়েছেন।
অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করেছেন। এর বাইরে সমাজের সেবায় নিজেকে নিবেদিত করেছেন। আর এসব কাজের জন্য মিলেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে অত্যন্ত সম্মানজনক পুরস্কার, যার নাম প্রেসিডেন্সিয়াল লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড।
নিউইয়র্কের বিশিষ্ট রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী, খলিল বিরিয়ানী হাউসের সিইও মো. খলিলুর রহমান কমিউনিটির উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখায় যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের পক্ষ থেকে তাকে সম্মানজনক এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। গত ১৯ মার্চ, শনিবার ১ ইউএন প্লাজায় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সই করা সনদ, পদক এবং একটি চিঠি তুলে দেন জাতিসংঘে আমেরিকান কর্মকর্তা ড.সীমা কাতনায়া।
অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে ড. সীমা কাতনায়া বলেন, দেশের উন্নয়নে অবদান রাখা মানুষদের জন্য অত্যন্ত সম্মানজনক পুরস্কার এটি। আমরা তাঁর হাতে এটি তুলে দিতে পেরে অত্যন্ত গর্বিত। একই সঙ্গে তিনি ভবিষ্যতে খলিলুর রহমানকে একই ধরনের উদ্যম ও প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আহবান জানান।
নিজের অনুভূতির কথা জানাতে খলিলুর রহমান বলেন, কঠোর পরিশ্রম করে গেছি। কোনোদিন ভাবিনি এমন অর্জন সম্ভব হবে। কেবল ভেবেছি যেতে হবে অনেক দূর। তিনি বলেন, এই অর্জন আমার একার নয়। এই অর্জন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সব বাংলাদেশির। যারা স্বপ্ন নিয়ে বসে থাকে না; স্বপ্ন বাস্তব করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়।
ঢাকা বিশ্বিদ্যালয় থেকে গণিতে স্নাতকোত্তর শেষ করে নিউইয়র্কের কুলিনারী ইন্সটিউটে লেখাপড়া করেন মো. খলিলুর রহমান। পরবর্তীকালে নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে নিজের নামে গড়ে তোলেন রেস্টুরেন্ট। শুরু থেকেই খাবারের মান, স্বাদের ভীন্নতাসহ নানা কারণে আলোচনায় আসেন তিনি। দেশ-বিদেশের অসংখ্য মানুষ খেতে যান তার রেস্টুরেন্টে। খলিল বিরিয়ানি হাউজ থেকে খলিল হালাল চাইনিজ, খলিল পিৎজা অ্যান্ড গ্রিল, খলিল সুইটস, খলিল সুপার মার্কেটসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। কর্মসংস্থার তৈরিতে তার ভূমিকা, করোনা মহামারিতে মানুষের পাশে খাদ্যসহায়তা নিয়ে দাঁড়ানো, কমিউনিটির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পৃষ্ঠোপোষকতার মতো বিষয়গুলো পুরস্কার প্রাপ্তিতে বিবেচনায় এসেছে।
গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেন বিজয়ী হওয়ার পর ভালোবেসে খলিলুর রহমান নিজের একটি রেসিপির নাম রাখেন ‘বাইডেন বিরিয়ানি’। পরবর্তীকালে এই বিরিয়ানির খবর ছড়িয়ে পরে চারদিকে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার বিভিন্ন গণমাধ্যমেও ছাপা হয় তার খবর।
শেফ খলিলুর রহমান বাংলাদেশি ঐতিহ্যবাহী খাবার; বিশেষ করে বিরিয়ানিতে নিজের উদ্ভাবনী মেধা কাজে লাগিয়ে ভিন্নতা আনেন। বিরিয়ানি ছাড়াও তার অন্যান্য খাবারের স্বাদ নিতে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে নির্বাচিত প্রতিনিধি ও বিশিষ্টজনেরা নিয়মিত যান সেখানে। কাউন্সিলম্যান, কংগ্রেসম্যান থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনীতিবিদদের জন্যেও তার রেস্টুরেন্ট একটি প্রিয় জায়গায় পরিণত হয়েছে।
অ্যাওয়ার্ড প্রদান উপলক্ষে দেয়া চিঠিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন লিখেছেন, মাত্র কোনো একজনের কারণে আমেরিকা আজ মহান হয়নি। অসংখ্য মানুষের অবদানের কারণে আমেরিকা মহান।
সেই অসংখ্য মানুষের গড়া সাফল্যের মুকুটে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত খলিলুর রহমানের অর্জনও শোভা যাচ্ছে। যে কারণে গর্বিত প্রবাসী বাংলাদেশিরাও।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।