জুমবাংলা ডেস্ক : ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অতিবৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীতে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এর ফলে বাঁধ দিয়ে প্রচুর পানি ছাড়া হচ্ছে জানিয়ে তিস্তা পাড়ের বাসিন্দাদের জন্য রেড অ্যালার্ট জারি করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের সেচ দপ্তর।
তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে এর প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গেও।
রোববার এক বিবৃতিতে সেচ দপ্তর জানায়, গত দুদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গে অঝোরে ঝরছে বৃষ্টি। অতিভারী বৃষ্টিপাত চলছে সিকিমেও। পাহাড় ও সমতলে অবিরাম বর্ষণে ফুঁসে উঠেছে তিস্তা, জলঢাকাসহ রাজ্যের একাধিক নদী। তাই বাঁধ থেকে ছাড়া হচ্ছে প্রচুর পরিমাণ পানি। এ অবস্থায় তিস্তা পাড়ের বাসিন্দাদের রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারা দেশে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে পাহাড়ি অঞ্চলে পাহাড় ধসের আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
রোববার আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান খান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় তেঁতুলিয়া সবচেয়ে বেশি ১৮২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। রাজধানীতে বৃষ্টিতে হয়েছে ৩৫ মিলিমিটার।
আব্দুর রহমান বলেন, ‘রোববার থেকেই সারা দেশে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হচ্ছে। জুলাই মাসের ৩-৪ তারিখ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকতে পারে। অতিভারী বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধস হতে পারে।’
একই সময়ে সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে ও উত্তরাঞ্চলে অতিভারী বৃষ্টি হবে বলেও জানান আব্দুর রহমান।
মৌসুমী বায়ুর সক্রিয়তা আর সাগরে লঘুচাপের প্রভাবে এমন বৃষ্টির আভাস আবহাওয়াবিদদের। এরই মধ্যে দেশের চার সমুদ্রবন্দরে জারি করা হয়েছে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত।
রোববারও সকালে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হয় টানা প্রায় ৩০ মিনিট। শনিবারও দিনভর আকাশ মেঘলা ছিল, মাঝে মাঝে ঝরে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি।
ভারতের আসাম ও মেঘালয়েও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। এতে সিলেট অঞ্চলে বন্যা বাড়তে পারে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারে পাহাড় ধসের সতর্কতা দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
বৃষ্টির সময় বজ্রপাতের আশঙ্কার কারণে সবাইকে চলাচলে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন আবহাওয়া অফিস।
সিলেট অঞ্চলে চলমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস নতুন করে শঙ্কা বাড়াচ্ছে। সুরমা নদী অববাহিকায় বন্যার উন্নতি হয়েছে, কিন্তু কুশিয়ারা নদী অববাহিকায় বন্যার পানি নামছে ধীরগতিতে। ফলে ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগরের মানুষ এখনও রয়েছে দুর্ভোগের মধ্যে। বন্যার পানি কমার ধীরগতির কারণে এসব উপজেলার লাখো মানুষ এখনও পানিবন্দি।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য মতে, রোববার দুপুর ১২টায় কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কুশিয়ারা নদীর পানি অমলসীদ, শেওলা পয়েন্টে বেড়েছে দুই সেন্টিমিটারের মতো। এ ছাড়া লোভা, সারি ও সারিগোয়াইন নদীর পানি বিভিন্ন পয়েন্টে অপরিবর্তিত রয়েছে। সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ সজীব হোসেইন জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সিলেটে ২১ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটের সীমান্তবর্তী ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হয়েছে ১৮৬ মিলিমিটার।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানান, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী ৩ দিন ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সিলেটে এখনো বন্যা পরিস্থিতি শেষ হয়নি। তাই স্থানীয় প্রশাসন বন্যা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।