বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : একটা স্মার্টফোনের যেসব বিষয় ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাকে বেটার করে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্মার্টফোনের ডিসপ্লে। বিভিন্ন ধরনের মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট দেখার ক্ষেত্রে ডিসপ্লের ভূমিকা অনেক। সে ক্ষেত্রে অ্যামোলেড ডিসপ্লে হলে কনটেন্ট দেখার এক্সপেরিয়েন্স অনেক ভালো হয়।
অ্যামোলেড ডিসপ্লে হলো ওএলইডি ডিসপ্লে টেকনোলজিতে তৈরি একপ্রকার ডিসপ্লে। এই প্রযুক্তি টিএফটি (থিন ফিল্ম ট্রানজিস্টর) স্তর যুক্ত করে ওএলইডি দ্বারা নির্গত আলোর উপর অধিকতর নিয়ন্ত্রণ রাখে। অ্যামোলেড ডিসপ্লে স্ক্রিন সরাসরি অর্গানিক ডায়োড থেকে কালার নির্গত করে। তাই এর জন্য পোলারাইজিং ফিল্টার, ক্রিস্টাল বা কোনো এলইডি ব্যাকলাইটের প্রয়োজন নেই, যা পাওয়ার সেভিং এবং ডিসপ্লে স্ক্রীনের আকারকে যথেষ্ট পরিমাণে স্লিম করতে সহায়তা করে।
অ্যামোলেড ডিসপ্লেতে কী কী সুবিধা রয়েছে তা জেনে নেওয়া যাক :
প্রিমিয়াম ডিসপ্লে :
অ্যামোলেড প্যানেলে প্রদর্শিত ছবিগুলি সাধারণ আইপিএস প্যানেলের চেয়ে অধিক উজ্জ্বল এবং আরও প্রাণবন্ত হয়। এই ডিসপ্লে টেকনোলজিতে আইপিএস প্যানেলের চেয়েও ওয়াইডার ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল থাকে। এছাড়া, অ্যামোলেড ডিসপ্লের ক্ষেত্রে এ রেসপন্স টাইম অনেকটাই দ্রুত হয় এবং রিফ্রেশ রেট ভালো থাকে। যা গেম খেলার সময় আপনাকে দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা দিবে।
পাওয়ার এফিশিয়েন্ট ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি ব্যাক-আপ :
এলইডি টেকনোলজির কারণে অ্যামোলেড ডিসপ্লে প্রয়োজনমতো প্রতিটি পিক্সেলকে আলাদা আলাদাভাবে জ্বালাতে ও নেভাতে পারে। যার ফলে ডিসপ্লের কালো অংশের পিক্সেল নিভিয়ে রাখা সম্ভব হয়। কম উজ্জ্বলতার জন্য অ্যামোলেড ডিসপ্লের কম বিদ্ৎু প্রয়োজন হয়। যে জায়গায় লাইট-আপের প্রয়োজন হয় কেবল সেখানেই সুনির্দিষ্টভাবে লাইট-আপ হয়। অর্থাৎ পাশের পিক্সেলগুলো আলোকিত হয় না। ফলে ব্যাটারি খরচ কম হয়। এ ধরনের ডিসপ্লের খরচ বেশি হওয়ায় তুলনামূলক দামী স্মার্টফোনে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
রিচ কালার রিপ্রোডাকশন :
অ্যামোলেড ডিসপ্লের হাই কন্ট্রাস্ট রেশিওর কারণে ছবিকে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত মনে হয়। যা অনেক সময় আইপিএস ডিসপ্লের ক্ষেত্রে পাওয়া সম্ভব হয় না। সুতরাং আপনি যদি একজন মাল্টিমিডিয়া প্রেমী হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে অ্যামোলেড ডিসপ্লেযুক্ত স্মার্টফোন অবশ্যই নিতে পারেন।
স্মার্টফোনের মধ্যে কম জায়গা দখল করে :
অ্যামোলেড ডিসপ্লের থিকনেস কম। অর্থ্যাৎ পাতলা হয়। একটি স্মার্টফোন কতটা পাতলা হবে তা মূলত দুইটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। প্রথমত এই ডিসপ্লে এবং দ্বিতীয়ত ব্যাটারি। আপনি খেয়াল করলেই দেখতে পাবেন আইপিএস ডিসপ্লেযুক্ত স্মার্টফোন অনেকটা মোটা ও বাল্কি হয়ে থাকে। যা একটি স্মার্টফোনের ডিজাইন ও লুকিংকে দৃষ্টিকটু করে দেয়। তবে অ্যামোলেড ডিসপ্লের ক্ষেত্রে তা হয় না। অ্যামোলেড ডিসপ্লে সাধারণত আইপিএস ডিসপ্লের অর্ধেক কিংবা তার থেকেও পাতলা হতে পারে। যার ফলে স্মার্টফোনের মধ্যে কম জায়গা দখল করে। এতে স্মার্টফোনের থিকনেস অনেকটা কম হয় এবং ফোনের ওজনও অনেকটা কম হয়। যা একটি স্টাইলিশ ফোনের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আকর্ষণীয় দামে যে অ্যামোলেড ডিসপ্লের স্মার্টফোনগুলো দেশে বাজারে অফিসিয়ালি পাওয়া যাচ্ছে :
সাধারণত মিডরেঞ্জ থেকে ফ্ল্যাগশীপ ফোনগুলোতে অ্যামোলেড ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়। তবে, দেশের বাজারে ২৫ হাজার টাকার মধ্যে কিছু অ্যামোলেড ডিসপ্লের স্মার্টফোন রয়েছে। এর মধ্যে শাওমির রেডমি নোট ১১, স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ২২ ও রিয়েলমি ৯ মডেলের স্মার্টফোনগুলো উল্লেখযোগ্য।
রেডমি নোট ১১ :
রেডমি নোট ১১ ফোনটিতে রয়েছে বড় মাপের ৬.৪৩ ইঞ্চির অ্যামোলেড ডটডিসপ্লে, যাতে রয়েছে এফএইচডিপ্লাস রেজ্যুলেশন, সাধারণ স্ক্রলিং কিংবা গেইম খেলার সময় ডিসপ্লেকে প্রাণবন্ত রাখবে। রয়েছে অ্যামোলেডের পথিকৃৎ ফিচার ডিসিআই-পি৩ ওয়াইড কালার গামুট, ডিসপ্লে ভাইব্রান্ট কালার এবং দিনের আলোতেও স্ক্রিনে পরিষ্কার দেখার ব্যবস্থা। ফোনটির উপরে ও নিচের দিকে দেয়া হয়েছে দুটি সুপার লাইনার স্টেরিও স্পিকার, যা আপনাকে দেবে অসাধারণ অডিও অভিজ্ঞতা এবং ভিডিও দেখার অভিজ্ঞতা।
এছাড়া ডিভাইসটি দেয়া হয়েছে স্ন্যাপড্রাগন ৬৮০ প্রসেসর ও ৫০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি । প্রাণবন্ত ছবির জন্য ফোনটিতে দেয়া হয়েছে এআইভিত্তিক ৫০ মেগাপিক্সেলের কোয়াড ক্যামেরা। অসাধারণ সেলফি নিতে রয়েছে ১৩ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা। রেডমি নোট ১১ (৮+১২৮) জিবি ভ্যারিয়েন্টের স্মার্টফোন কিনতে পারছেন ২৪,৪৯৯ টাকায়।
স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ২২ :
স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ২২ স্মার্টফোনে রয়েছে সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে ও ৬০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের ব্যাটারি, যা ব্যবহারকারীদের মুভি দেখা এবং গেমস খেলার ভালো অভিজ্ঞতা দিবে। আকর্ষণীয় ছবি তুলতে ফোনটিতে ৪৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরার পাশাপাশি রয়েছে ৮ মেগাপিক্সেল আলট্রা-ওয়াইড, ২ মেগাপিক্সেল ম্যাক্রো এবং ২ মেগাপিক্সেল ডেপথ ক্যামেরা। ডিভাইসটিতে ৬ জিবি র্যা ম ও ১২৮ জিবি রম সহ মিডিয়াটেক হেলিও জি৮০ প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। এ স্মার্টফোনটির বর্তমান বাজার মূল্য মাত্র ২৪,৯৯৯ টাকা।
রিয়েলমি ৯ :
রিয়েলমি ৯ ফোরজি ডিভাইসটিতে ৬.৪ ইঞ্চির সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে। এতে সর্বোচ্চ ৯০ হার্টজের রিফ্রেশ রেট রয়েছে। রিয়েলমি ৯ ফোরজি ডিভাইসটিতে ১০৮ মেগাপিক্সেল প্রোলাইট ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে। ব্যবহারকারীদের জন্য ডিভাইসটিতে ৮ জিবি র্যা ম ও ১২৮ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ রয়েছে। ফোনটির দাম ২৪,৯৯৯ টাকা।
ইনবক্স সুরক্ষিত রাখতে ইমেইল সিকিউরিটি কোর্স করাটা কতটা জরুরি?
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।