লাইফস্টাইল ডেস্ক : উচ্চ রক্তচাপ কমানোর জন্য ব্যায়ামের গুরুত্ব সর্বজনবিদিত। যখন আপনার সামনে অসংখ্য বিকল্প থাকে, তখন সঠিক ব্যায়াম নির্বাচন করতে পারে আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে প্রকৃত ভূমিকা পালন করতে। সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, আইসোমেট্রিক ব্যায়াম উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রে অসামান্য ফলাফল দেয়।
আইসোমেট্রিক ব্যায়াম রক্তচাপ কমানোর কার্যকর উপায়
২০২৩ সালের একটি পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে, আইসোমেট্রিক ব্যায়ামগুলো—যেখানে মাংসপেশি সংকোচিত হয় কিন্তু জয়েন্ট নড়ে না—উচ্চ রক্তচাপ কমাতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এই ব্যায়ামগুলোর মধ্যে ওয়াল সিট, প্ল্যাঙ্ক ও কিছু যোগব্যায়াম উল্লেখযোগ্য। গবেষকরা বলছেন, মাত্র সপ্তাহে তিন দিন এবং ১৭ মিনিট করে এই ধরনের ব্যায়াম করলে যে কারো রক্তচাপ কমে আসবে।
আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন পেশী সংকোচিত হয়, তখন এর প্রফাউন্ড প্রভাব পড়ে রক্তনালীগুলোর উপর। এটি রক্তনালীগুলোর কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়ক, এবং দীর্ঘমেয়াদে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে তা কার্যকর হতে পারে।
সম্ভাবনাময় আইসোমেট্রিক ব্যায়ামের উদাহরণ:
- ওয়াল সিট
- প্ল্যাঙ্ক
- লো স্কোয়াট
- গ্লুট ব্রিজ
- যোগব্যায়ামের কিছু ভঙ্গি
ডাইনামিক রেজিস্ট্যান্স ট্রেনিং সহ অন্যান্য ব্যায়ামের সুবিধা
গ্রহণযোগ্যতা ও বৈশিষ্ঠ্যের কারণে, ডাইনামিক রেজিস্ট্যান্স ট্রেনিং উচ্চ রক্তচাপ কমাতে অত্যন্ত কার্যকর। এই ব্যায়ামগুলোর সময় পেশিগুলো একাধিকবার সংকোচন ও প্রসারণ ঘটে, যা কার্ডিয়াক আউটপুটকে উন্নত করে। গবেষণা কিন্তু বলছে, এটা বিশেষভাবে ডায়াস্টোলিক প্রেসার কমাতে সাহায্য করে।
ছোটখাটো উদাহরণ হিসেবে কিছু ডাইনামিক রেজিস্ট্যান্স ট্রেনিং ব্যায়াম উল্লেখ করা হলো:
- পুশ-আপ
- বাইসেপ কার্ল
- লাঞ্জ
- ক্রাঞ্চ
- ডেডলিফ্ট
এ ধরনের ব্যায়াম আপনার হৃদযন্ত্রকে শক্তিশালী করে এবং রক্তনালীগুলোর স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে সক্ষম। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, এতে করে হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে পারে।
এরোবিক ব্যায়ামের ভূমিকা
কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়ামগুলো স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উন্নতির জন্য পরিচিত। এ ধরনের ব্যায়াম, যেমন দ্রুত হাঁটা, দৌড়ানো, সাইক্লিং, শারীরিক মনের প্রশান্তি নিশ্চিত করে এবং মানসিক চাপ ও উদ্বিগ্নতা কমায়।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন সুপারিশ করে সপ্তাহে ১৫০ মিনিট মাঝারি মাত্রার এরোবিক ব্যায়াম করতে, যা দৌড়ানো বা সাইক্লিং অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। গবেষণায় প্রমাণিত হয়, এই ধরণের ব্যায়াম ধমনী প্রণোদিত করে ও রক্ত প্রবাহের পরিমাণ বাড়ায়। উপযুক্ত ডায়েটের সমন্বয়ে নিয়মিত অনুশীলনে, এসব ব্যায়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে।
HIIT এবং এর প্রভাব
হাই ইনটেনসিটি ইন্টারভ্যাল ট্রেনিং (HIIT) দ্রুত থমকিে এবং উচ্চমাত্রার ব্যায়ামের কারণে স্বল্প সময়ে উল্লেখযোগ্য ফলাফল দেয়। তবে সাম্প্রতিককালে গবেষণায় উঠে এসেছে যে, HIIT কিছুক্ষেত্রে স্প্রিন্ট ইন্টারভ্যাল ট্রেনিং দ্বারা আরও কার্যকর।
এই প্রতিক্রিয়া আপনার হৃদযন্ত্রকে শক্তিশালী করে এবং রক্তনালীর কার্যকারিতা উন্নত করে। একইসঙ্গে মানসিক স্ফূর্তি প্রদান করতে প্রশংসনীয়।
গবেষণা সমর্থন করে এই টিপসগুলো যারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে তাদের জন্য কার্যকরী হতে পারেঃ
- ধীরে শুরু করুন: ছোট ছোট লক্ষ্য স্থির করে কার্ডিও শুরু করুন।
- ওয়ার্ম-আপ করুন: ব্যায়াম শুরুর আগে একটু ওয়ার্ম-আপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- পছন্দের ব্যায়াম বেছে নিন: উপভোগ করার মতো ব্যায়াম নির্বাচন করুন।
- সাথী জোগাড় করুন: সঙ্গী থাকলে অনুশীলনে মনোযোগ বাড়ে।
অনুশীলন ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়ক হতে পারে।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটির তথ্যগুলো প্রাথমিক সূত্র অনুযায়ী প্রদান করা হয়েছে। উচ্চ রক্তচাপ বা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
FAQs
প্রশ্ন: কোন ব্যায়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সবচেয়ে কার্যকর?
উত্তর: আইসোমেট্রিক ব্যায়াম, বিশেষ করে ওয়াল সিট, উচ্চ রক্তচাপ কমাতে অত্যন্ত কার্যকর।
প্রশ্ন: ডাইনামিক রেজিস্ট্যান্স ট্রেনিং কেন গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর: এই ব্যায়ামগুলো পেশি সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে কার্ডিয়াক আউটপুট উন্নত করে এবং ডায়াস্টোলিক প্রেসার কমায়।
প্রশ্ন: হাই ইনটেনসিটি ইন্টারভ্যাল ট্রেনিং এর সুবিধা কী?
উত্তর: HIIT স্বল্প সময়ে উচ্চপ্রতিফলিত ফলাফল দেয় এবং রক্তচাপ কমাতে পারে, যদিও স্প্রিন্ট ইন্টারভ্যাল ট্রেনিং আরো কার্যকর হতে পারে।
প্রশ্ন: এরোবিক ব্যায়ামের প্রভাব কতটা?
উত্তর: এরোবিক ব্যায়াম রক্ত প্রবাহ উন্নত করে, মানসিক চাপ কমায়, হৃদপিণ্ডকে শক্তিশালী করে এবং রক্তনালীর স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে সক্ষম।
প্রশ্ন: নতুনদের জন্য কোনো ব্যায়ামের পরামর্শ আছে?
উত্তর: নতুনদের জন্য সুপারিশ হচ্ছে ধীরে শুরু করা, সঠিক ওয়ার্ম-আপ করা এবং পছন্দের ব্যায়াম বেছে নেওয়া।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।