ইফতেখার রায়হান : প্রেমের টানে আমেরিকা থেকে গাজীপুরে চলে আসা যুবক রাইয়ান কফম্যানের কাছে বাংলাদেশের বাজার খুব গোলমেলে লেগেছে। গত ১ জুন বাংলাদেশি তরুণী সাইদাকে বিয়ে করে এখন গাজীপুরেই অবস্থান করছেন তিনি।
শুক্রবার নববধূর সঙ্গে স্থানীয় চান্দনা চৌরাস্তা বাজারে গিয়েই এমন মন্তব্য করেন রাইয়ান। তিনি আরও বলেছেন, ‘বাজারে মানুষ বেশি!’
তবে বাংলাদেশকে ‘সুন্দর দেশ’ বলে মন্তব্য করেছেন রাইয়ান। সুন্দর আর সরল বলেছেন এ দেশের মানুষকেও। যদিও রাস্তাঘাট তার কাছে কিছুটা নোংরা মনে হয়েছে।
এ ছাড়া বাঙালিদের খুবই অতিথিপরায়ণও মনে হয়েছে রাইয়ানের কাছে। ক্ষুধা না লাগলেও লোকজন তাকে খাওয়ানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ছে।
সাইদার পরিবারের কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে এভাবেই নিজের মনোভাব প্রকাশ করেন আমেরিকান যুবক। মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের ক্যানসাসে তার বাড়ি। গত ২৮ মে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আসেন তিনি।
নতুন স্বামীর বিষয়ে সাইদা বলেন, ‘মূলত আমাকে দেখার জন্য রাইয়ান বাংলাদেশে এসেছে। ওর ইচ্ছা ছিল না বিয়ে করার। কিন্তু আমার পরিবার এভাবে থাকতে সম্মতি দেয়নি। যেহেতু সে বারবার বাংলাদেশে আসবে তাই সামাজিক দিক বিবেচনায় আমি রাইয়ানকে বিয়ের প্রস্তাব দিই। পরে আমার পরিবার ও তার সম্মতিতে বুধবার আমাদের বিয়ে হয়েছে।’
সাইদা জানান, রাইয়ানের পরিবারও তাকে মেনে নিয়েছে। এবার ভিসা প্রসেসিং শেষে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে। সেখানেও তাদের আরেকটা বিয়ের অনুষ্ঠান হবে।
জানা যায়, পিতৃহীন সাইদা প্রায়ই ফেসবুকে সময় কাটাতেন। ঘাঁটাঘাঁটি করতেন বিভিন্ন অ্যাপস ও সাইটে। একদিন কৌতূহলবশত একটি ডেটিং অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। এই সাইটেই পরিচয় হয় মার্কিন নাগরিক রাইয়ান কফম্যানের সঙ্গে।
পরিচয়ের পর বেশ কিছুদিন চ্যাটিং করে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে রাইয়ান ও সাইদার। একপর্যায়ে নিজেদের ফেসবুক আইডি ও মুঠোফোন নম্বর আদান-প্রদান করেন তারা। এরপর ফেসবুকে ভিডিও কলে কথাবার্তা ও নিজেদের পছন্দ-অপছন্দের ধারাবাহিকতায় প্রেমের সম্পর্কের সূত্রপাত হয়।
সেই প্রেমের টানেই বাংলাদেশে পাড়ি জমান রাইয়ান। ভালোবাসার মানুষের সাক্ষাৎ পেতে গিয়ে হাজির হন গাজীপুরে।
সাইদা বলেন, ‘কথাবার্তায় আমার সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় জানতে পারে রাইয়ান। পরে দুজন দুজনকে ভালোবেসে ফেলি। এভাবে কেটে যায় প্রায় এক বছর।’
সাইদা জানান, পরিচয়ের পর তার ধর্ম নিয়েও আগ্রহী হয়ে ওঠেন রাইয়ান। পরে ক্যানসাসে বাসার পাশের একটি মসজিদে গিয়ে সেখানকার মাওলানার কাছ থেকে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে আরও বিশদ জেনে নেন তিনি। সাইদাকে কাছে পেতে খ্রিষ্টধর্ম ত্যাগ করে এক বছর আগে তিনি ইসলাম ধর্মও গ্রহণ করেন।
সাইদা বলেন, ‘আমার পরিবার তাকে পছন্দ করেছে।’
নতুন স্বামীর প্রতি তীব্র ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন সাইদা নিজেও। তিনি বলেন, ‘ভালোবাসা পেতে যিনি দেশ-ধর্ম ত্যাগ করতে পারেন, তার মতো ভালো মানুষ হয় না।’ সূত্র : নিউজ বাংলা
প্রেমের টানে গাজীপুরে এসে প্রেমিকাকে বিয়ে করলেন আমেরিকান যুবক
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।