লাইফস্টাইল ডেস্ক : প্রতি ডেসিলিটার রক্তে হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা ১১.৫ থেকে ১৬.৫ গ্রাম, যা সন্তান, পুরুষ ও নারীভেদে আলাদা হয়ে থাকে। রক্তের অন্যতম উপাদান হলো লোহিত রক্তকণিকা। পরিণত লোহিত রক্তকণিকার মধ্যে থাকে এক ধরনের প্রোটিন, যা অক্সিজেনের সঙ্গে যুক্ত হয়। এই প্রোটিনটিই হলো হিমোগ্লোবিন। একই সঙ্গে দেহের বিভিন্ন অঙ্গের কোষ থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড বের করে নিয়ে আসে। এরপর বিষাক্ত গ্যাস দেহের বাইরে বের করে দিয়ে ফুসফুস পর্যন্ত পৌঁছে দেয়।
রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম হলে দেহের বিভিন্ন অঙ্গে অক্সিজেন কম পৌঁছায়। ফলে ক্লান্তি, দুর্বল ভাব, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, হার্টের দ্রুত স্পন্দন, ফ্যাকাসে ত্বকের মতো উপসর্গ দেখা দেয়। তবে নারীর ঋতুচক্রের সময়, গর্ভাবস্থায়, শিশুর বেড়ে ওঠাকালে, রোগ থেকে সেরে ওঠার মুহূর্তে আয়রন বেশি দরকার হয়। আসুন, জেনে নিই রক্তে হিমোগ্লোবিন কম হলে কী-কী খাবেন।
আয়রন, ফোলিক এসিড, বি১২ এবং ভিটামিন-সি যুক্ত খাবার রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে কাজ করে। সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে রক্তস্বল্পতা দূর করা সম্ভব। গাঢ় সবুজ শাকসবজি, যেমন- পালংশাক, সর্ষেশাক, সজনেপাতা, ব্রকলির মতো শাকসবজি আয়রনে পরিপূর্ণ। এছাড়া ভিটামিন বি১২, ফোলিক এসিডও রয়েছে। ব্রকলির কথা একটু আলাদা করে বলতে হয়। এ সবজিতে রয়েছে আয়রন এবং বি কমপ্লেক্স ভিটামিন, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, ফোলিক এসিড, ম্যাগনেশিয়াম। কলার মোচা বা থোর দ্রুত রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে।
এতে রয়েছে প্রচুর আয়রন। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আপেল, লাল বা কালো আঙুর, কলা, বেদানা বা ডালিম, তরমুজ রাখতে পারেন। এগুলো রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াবে। বিটরুটে থাকা উপকারী উপাদানগুলো রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন-বি, সি, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, কপার, আয়রন। গাজর ও লালশাক রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে থাকে।
খেজুর ও কিসমিস একত্রে আয়রন ও ভিটামিন সি-এর উপযুক্ত উৎস। অন্যদিকে ডমুর বা ফিগে রয়েছে যথেষ্ট মাত্রায় আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন-এ ও ফোলেট। প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় খেজুর, কিসমিস ও শুকনো ডুমুর মিক্স করে খেলে রক্তস্বল্পতার ঘাটতি পূরণ হয়। বিকালের নাস্তা বা মিড মর্নিং জাতীয় খাবার রাখতে পারেন, যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন। কালো তিলে রয়েছে আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, কপার, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম এবং ভিটামিন বি৬, ই ও ফোলেট, যা রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়। ডিমও খেতে পারেন। এতে আছে হাই প্রোটিন ও আয়রন। আছে খনিজ ও ভিটামিন।
মধুতে আয়রন, কপার, ভিটামিন-সি, ম্যাঙ্গানিজ থাকে, যা রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়। খেতে পারেন ওটস, ডালিয়া। কাঠবাদাম, চীনাবাদাম, কাজুবাদাম, আখরোট, পেস্তাবাদাম রোজ খাদ্য-তালিকায় রাখুন, যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করবে। যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন, তারা বিকালের নাস্তা বা মিড মর্নিং জাতীয় খাবার রাখতে পারেন। লাল মাংস ও কলিজায় ভালো পরিমাণ আয়রন থাকে। রয়েছে প্রোটিনও।
কন্যাদান করেছিলেন যে ‘ভাই’, তার সঙ্গেই অনৈতিক সম্পর্ক স্ত্রীর!
মাংসের হিম আয়রন দ্রুত রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়। খাদ্যতালিকায় গুড় রাখতে পারেন, যা রক্তে আয়রন বাড়ানোর পাশাপাশি রক্তস্বল্পতা দূর করবে। ভিটামিন সি যুক্ত খাবার, যেমন কমলালেবু, মালটা, পাতিলেবু, স্ট্রবেরি, আমলকি খান। কারণ আয়রন শোষণে ভিটামিন-সি জাতীয় খাবার সাহায্য করে থাকে।
লেখক : পুষ্টিবিদ
শিপ ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতাল, ঢাকা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।