জুমবাংলা ডেস্ক : দেশের বাজারে মোটরসাইকেল বিক্রিতে ধস নেমেছে। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে মোটরসাইকেল বিক্রি কমেছে প্রায় দুই লাখ। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয় দুই চাকার এই বাহনের বিক্রি কেন কমল তা নিয়ে আসছে নানা মত। এর মধ্যে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়া, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, বাড়িভাড়া বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করা হচ্ছে। অন্যদিকে বড় পরিসরে বলা হচ্ছে, ডলার সংকট ও ডলারের দাম বৃদ্ধিতে মোটরসাইকেলের দাম ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেড়ে যাওয়াই অন্যতম কারণ।
তবে মোটরসাইকেল বিক্রেতাদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে আরও একটি কারণ। আর তা হলো, বাংলাদেশের বাজারে বিশ্ববিখ্যাত মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড রয়েল এনফিন্ডের প্রবেশ। তারা বলছেন, চলতি বছরের জুলাই থেকে বাংলাদেশের বাজারে আসছে এই ব্র্যান্ড। যারা মোটরসাইকেল কেনার কথা ভাবছেন তাদের অনেকেই এই ব্র্যান্ডটির অপেক্ষায় আছেন। এ কারণে বিক্রি কমেছে। এই ব্র্যান্ডটি বাজারে আসলে বিক্রি বাড়তে পারে।
বিক্রেতারা বলছেন, বাংলাদেশে এই মোটরসাইকেল বাজারজাত করবে ইফাদ অটোস। তারা জানিয়েছেন মডেল ভেদে ব্র্যান্ডটির এক একটি মোটরসাইকেলের দাম হবে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার মধ্যে। ফলে যারা এতোদিন দামি বাইক বলতে ৩ থেকে ৫ লাখ টাকার মধ্যে অন্য মডেলের বাইক কিনতেন তারা আরেকটু অপেক্ষা করছেন, সাড়ে ৩০০ সিসির এই বাইকটি বাজারে আসার।
তবে বিক্রেতারা বলছেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের বাজারে ২৫০ সিসির বাইক এসেছে। গত বছরের শেষ এই মডেল বাজারকে খানিকটা চাঙা করে তুলেছিল।
বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বিক্রি ও নিবন্ধন হওয়া যানবাহন মোটরসাইকেল। এক বছরে যত গাড়ি বিক্রি হয়, তার প্রায় ৮০ ভাগই দুই চাকার এ বাহনের দখলে। স্বভাবতই সংখ্যার হিসাবে ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি বিক্রি ও নিবন্ধন কমেছে মোটরসাইকেলের। ২০২২ সালে যেখানে সারা দেশে প্রায় ৫ লাখ ৭ হাজার মোটরসাইকেল নিবন্ধন দিয়েছিল বিআরটিএ, সেখানে গত বছর ৩ লাখ ১০ হাজারের কিছু বেশি মোটরসাইকেল নিবন্ধন দিতে পেরেছে সংস্থাটি। অর্থাৎ মোটরসাইকেল নিবন্ধন বা বিক্রি কম হয়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজারটি।
২০২৩ সালে দেশে গাড়ি নিবন্ধন কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকটকে দায়ী করছেন বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার। তিনি বলেন, যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বর্তমানে অস্থিরতা বিরাজ করছে। বাংলাদেশ যেহেতু এ ব্যবস্থার বাইরে নয়, সেহেতু বাংলাদেশেও এ অস্থিরতার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তিনি বলেন, গাড়ি, বিশেষত মোটরসাইকেল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করাও একটা কারণ হতে পারে।
বিজনেস দৈনিক বণিকবার্তা বলছে, ২০২২ সালে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত ও সংবিধিবদ্ধ রাষ্ট্রমালিকানাধীন কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গাড়ি কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রেকর্ড ৫ লাখ ৭৮ হাজারের বেশি গাড়ি বিক্রি ও নিবন্ধন হয়েছিল। তবে ২০২৩ সালে এসে পাল্টে গেছে এ চিত্র। সদ্য বিদায় নেয়া বছরে গাড়ি নিবন্ধন নেমে এসেছে আট বছরের সর্বনিম্নে। ২০২৩ সালে বিআরটিএ সারা দেশে ৩ লাখ ৬০ হাজার ৮৬১টি গাড়ির নিবন্ধন দিয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৩৮ শতাংশ কম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।