মো. সোহাগ হাওলাদার : সাভারে কর্মরত দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন ও নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের প্রতিনিধি ও সাভার প্রেসক্লাবের সভাপতি নাজমুল হুদাকে মারধর, চাঁদাদাবি ও অপহরণ চেষ্টার অভিযোগে সন্ত্রাসী সাব্বির আহমেদ ওরফে সাইকো সাব্বিরকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
এর আগে ভুক্তভোগী সাংবাদিক নাজমুল হুদা বাদী হয়ে সাইকো সাব্বিরসহ ১১ সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় (২২ আগষ্ট) শুক্রবার ভোর রাতে মানিকগঞ্জ জেলার পূর্ব দাশড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে একইদিন দুপুরে রিমান্ড চেয়ে আসামিকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।
শুক্রবার (২২ আগষ্ট) বিকেলে ঢাকার অতিরিক্ত চীপ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ আদেশ দেন।
এদিন আসামিকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেকেন্দার আলী কারাগারে রাখার আবেদন করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তাকে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
শুক্রবার (২২ আগষ্ট) রাতে তাকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার ওসি তদন্ত আশিক ইকবাল।
তিনি জানান, এ ঘটনার সাথে জড়িত অন্যরা পলাতক রয়েছে তবে খুব শীঘ্রই তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। প্রধান অভিযুক্ত সাব্বিরকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম জড়িতদের ধরতে অভিযানে রয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ আগষ্ট সাভার প্রেসক্লাবের সভাপতি নাজমুল হুদাকে সাব্বির আহমেদ মুঠো ফোনে কল করে ১১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু, তার ব্যক্তিগত সহকারি জাহিদ ও নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করবে বলে হুমকি দেয়। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাজমুল হুদাকে বিএনপি নেতা দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু, জাহিদ ও অজ্ঞাত এক ব্যক্তির দালাল আখ্যা দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে সবার ছবিসহ অপপ্রচার চালানো হয়। অপপ্রচার থেকে বিরত থাকতে বললে সাংবাদিক নাজমুল হুদাকে আওয়ামী লীগ ট্যাগ দিয়ে হত্যার হুমকি এবং সাভার প্রেসক্লাব দখল করার হুমকিসহ তাকে সাংবাদিকতা ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেন সন্ত্রাসী সাব্বির ও তার সহযোগীরা। পরদিন (২০ আগষ্ট) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে প্রাইভেটকারে করে সংবাদ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে সাভার থানা স্ট্যান্ড থেকে কামাল গার্মেন্টস রোডের দিকে যাওয়ার পথে সাভার মডেল মসজিদের সামনে সাংবাদিক নাজমুল হুদার গতিরোধ করা হয়। একপর্যায়ে সাব্বির আহমেদ তার দলবল নিয়ে নাজমুল হুদাকে প্রাইভেটকার থেকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে বিএনপি নেতা দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবুর সঙ্গে আলোচনা করে ১১ লাখ টাকা পুনরায় চাঁদা দাবি করেন। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় নাজমুল হুদাকে সাব্বির আহমেদসহ তার সহযোগীরা মারধর করে ৩২ হাজার ৫০০ টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। একপর্যায়ে তাকে অপহরণের চেষ্টা করে। এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে প্রাণে রক্ষা পায় নাজমুল হুদা। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল ও সাংবাদিক মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও সাব্বির আহমেদকে গ্রেপ্তার করায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে তবে বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত শাস্তির দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা।
এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানার ওসি তদন্ত আশিক ইকবাল জানান, সাব্বিরকে কারাগারে পাঠিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরো কয়েকজনের তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।