জুমবাংলা ডেস্ক : অনলাইন মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামের বিভিন্ন গ্রুপ ও চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও ফোন কলসহ ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য অর্থের বিনিময়ে হস্তান্তরের তথ্য পেয়েছে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি)।
সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লেখা এক চিঠিতে এনটিএমসি জানিয়েছে, হাজার হাজার সদস্য আছে ৪৮টি টেলিগ্রাম গ্রুপ ও চ্যানেল এসব ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রিতে জড়িত। তবে ঐ চিঠিতে কতজনের তথ্য বিক্রি হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি।
প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্ট প্ল্যাটফর্মে (এনআইপি) অস্বাভাবিক বেশি সংখ্যক লগইন শনাক্ত করে। অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) পুলিশ সুপার ফারহানা ইয়াসমিন ও র্যাব-৬ এর এএসপি তারেক আমান বান্নার ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে এসব তথ্য টেলিগ্রামের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়।
চিঠিতে এনটিএমসি বলেছে, এসব গ্রুপের সদস্যদের সংবেদনশীল তথ্যে প্রবেশাধিকার পেতে দুই কর্মকর্তার লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা হয়।
আইনগতভাবে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, বিটিআরসি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে সমস্ত ইলেকট্রনিক যোগাযোগ পর্যবেক্ষণ করার অধিকারী এনটিএমসি।
ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রির অভিযোগে চলতি মাসের শুরুতে এবং গত মাসে আইডিইএ-২ প্রকল্পের দুই ডেটা এন্ট্রি অপারেটরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপ ও মেসেজিং অ্যাপে বিক্রি হওয়া কল ডেটা রেকর্ড এনটিএমসির সার্ভার থেকে নেয়া হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংবেদনশীল তথ্যের অননুমোদিত ব্যবহার এবং অবৈধভাবে হস্তান্তরের যথাযথ তদন্ত শেষে দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ করেছে এনটিএমসি।
চিঠিতে বলা হয়, ২৫ এপ্রিল রাত ৮টা ৫৭ মিনিট থেকে ৯টা ২৭ মিনিটের মধ্যে লগইন রিপোর্টে প্রথম এটি নজরে আসে। ২৫ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে এই দুই পুলিশ ও র্যাব কর্মকর্তার আইডি অন্য যে কোনো ব্যবহারকারীর চেয়ে অনেক বেশি তথ্য সংগ্রহ করে।
গত ২ মে এনটিএমসিকে লেখা চিঠিতে এটিইউ বলেছে, প্রাথমিক তদন্তে এটিইউ জানতে পেরেছে, সাইবার ক্রাইম উইংয়ের কনস্টেবল মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র রায় ও অপারেশন উইংয়ের খায়রুল ইসলাম টাকার বিনিময়ে কল ডিটেল রেকর্ডসহ স্পর্শকাতর তথ্য বিক্রির সঙ্গে জড়িত। কনস্টেবলরা জিজ্ঞাসাবাদে তা স্বীকার করেছেন।
গত ২৯ এপ্রিল ওই দুই কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, এসপি ফারহানার লগইন ক্রেডেনশিয়ালের মাধ্যমে অননুমোদিত তথ্য স্থানান্তরের প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে।
র্যাব জানিয়েছে, র্যাব-৬ এর ঐ কর্মকর্তাকে ক্লোজড করা হয়েছে এবং এই বিষয়ে তদন্ত চলছে।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, কারো ব্যক্তিগত তথ্য এবং এনআইডি বিবরণ ব্যবহার করে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা এবং জাল নথির ভিত্তিতে ঋণ নেয়া যেতে পারে। এটি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়ার মাধ্যমে হতে পারে এমন অপরাধগুলোর।
এনটিএমসি বলেছে, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইউটিউবের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের জন্য বিটিআরসির পাশাপাশি এনটিএমসিকেও ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।